E-Paper

আকাশ প্রদীপ জ্বলে...

কলকাতায় লিগ ক্রিকেট খেলার সময় ইস্টবেঙ্গলের মতো বড় ক্লাবের জার্সি, বেশি টাকার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দেন। কী না, প্রথম ক্লাবের প্রতি আনুগত্য হারাতে চান না। শুনে আজগুবি মনে হবে না?

সুমিত ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫ ০৮:০০
রূপকথা: দশ উইকেট নিয়ে দুরন্ত আকাশ।

রূপকথা: দশ উইকেট নিয়ে দুরন্ত আকাশ। —ফাইল চিত্র।

এজবাস্টনে দশ উইকেট নিয়ে দেশকে ঐতিহাসিক জয় এনে দেওয়া ফাস্ট বোলার। কলকাতায় এলে নাকি থাকেন ইডেনের ভিতরে ডরমেটরিতে। কেউ বিশ্বাস করবে?

কলকাতায় লিগ ক্রিকেট খেলার সময় ইস্টবেঙ্গলের মতো বড় ক্লাবের জার্সি, বেশি টাকার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দেন। কী না, প্রথম ক্লাবের প্রতি আনুগত্য হারাতে চান না। শুনে আজগুবি মনে হবে না?

সারা ক্রিকেট দুনিয়া এমন শান বাঁধানো ব্যাটিং উইকেটে তাঁর বোলিং শিল্প দেখে মুগ্ধ। আর তিনি টেস্ট জেতার পরের সকালে উঠে মোবাইলে ‘সেভ’ করা কলকাতার সব ফোন নম্বর একের পর এক ডায়াল করে যাচ্ছেন। কেউ বাংলা রঞ্জি দলের সতীর্থ। কেউ কোচ। কেউ পায়ের নীচে জমি তৈরিতে সাহায্য করেছেন। কেউ দু’টো রাত্তির থাকতে দিয়েছেন। কেউ বোলারের দামী জুতো কিনে দিয়েছেন। আজ যে সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন। কেউ যেন বাদ পড়ে না যায়। শুনে মনে হবে না আষাঢ়ে গল্প আউড়ানোর চেষ্টাকরছে কেউ?

আসলে কোনওটাই কল্পকথা নয়। রহস্য রোমাঞ্চ সিরিজ়ের পাতা থেকেও তুলে দেওয়া নয়। প্রত্যেকটাই সত্যি ঘটনা। তিনি আকাশ দীপ— এজবাস্টনের আকাশে উড়েও ভোলেননি বাংলার মাটিকে। যেখান থেকে তাঁর উত্থান। বিহারের ঐতিহাসিক শহর সাসারাম তাঁর বাসস্থানগত ঠিকানা হতে পারে। যে সাসারাম ছিল শের শাহ সুরির আমলে রাজধানী। সম্রাট অশোকের স্মৃতিও রয়েছে। ইতিহাসের শহর থেকে এসে ইতিহাস গড়ে দেখালেন তিনি। কিন্তু আকাশ দীপের ক্রিকেটীয় রেশন কার্ড বলবে, তিনি বাংলার ছেলে। আদ্যপ্রান্ত ট্রাম লাইন আর ইংরেজ আমলের সবুজ তাঁবুতে ঘেরা কলকাতা ময়দানে তৈরি হওয়া ক্রিকেটার। মহম্মদ শামি যেমন বাইরে থেকে এলেও কলকাতা ক্রিকেট লিগ খেলে উঠে এসেছেন, আকাশ দীপও তাই। ক্লাব ক্রিকেট থেকে ‘সিএবি ভিশন’ প্রকল্পে যোগদান, বাংলার হয়ে অনূর্ধ্ব-২৩, রঞ্জি ট্রফি, সেখান থেকে আইপিএলে সুযোগ পাওয়া এবং জাতীয় নির্বাচকদের নজরে পড়া। শামির ছিল টাউন ক্লাব, আকাশের ইউনাইটেড ক্লাব। এবং, কী আশ্চর্য! বোলিং ভঙ্গির দিক থেকেও অদ্ভুত মিল। দু’জনেই সিমের ব্যবহারে ব্যাটসম্যানদের ধরাশায়ী করতে ভালবাসেন। ক্রিকেট মহলে যে অনেকে আকাশ দীপকে ‘ছোটা শামি’ বলে ডাকে, বোঝাই যাচ্ছেতার যথেষ্ট কারণ আছে।

যদিও এজবাস্টনে দশ উইকেট নেওয়ার পরে আকাশকে নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে এমন আলোড়ন পড়ে গিয়েছে যে, তাঁর নামের পাশে ‘ছোটা’ শব্দটাও কেমন যেন বেমানান লাগছে। মনে হচ্ছে, এমন হুলস্থুল ফেলে দেওয়া বোলিং কীর্তি। ছিয়াশিতে চেতন শর্মা বাদ দিলে ইংল্যান্ডে কোনও টেস্টে দশ উইকেট আর কোনও ভারতীয় পেসারের নেই। কপিল দেবের নেই। যিনি এই টেস্ট না খেলায় মনে হয়েছিল, শুভমন গিলের ভারতীয় দলের পাতালপ্রবেশ ঘটবে, সেই যশপ্রীত বুমরা নেই। গতকাল ম্যাচের পরে দুই প্রাক্তন বোলারের টুইট দেখলাম। স্টুয়ার্ট ব্রড আর ড্যামিয়েন ফ্লেমিং। এক জন টেস্টে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। অন্য জন স্টিভ ওয়ের বিশ্বজয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের সারথী। দু’জনেই বিস্মিত যে, এমন উপমহাদেশীয় ঘরানার ব্যাটিং উইকেটে কী করে এমন অবলীলাক্রমে দু’দিকে বল নড়াচড়া করাচ্ছিলেন ভারতীয় পেসার। আর তিনি আকাশ দীপ— প্রশংসার ফুলের মালার ভিড়েও ভুললেন না বঙ্গ ক্রিকেটের সেই মুখগুলোকে, যাঁরা তাঁর ক্রিকেট জীবনকে নানা কঠিন সময়ে ভিটামিন ইঞ্জেকশন দিয়ে সুস্থসবল রেখেছেন। কলকাতায় প্রথম ক্লাব ইউনাইটেড স্পোর্টসের সৌতম মিত্র। অনূর্ধ্ব ২৩-এর কোচ সৌরাশিস লাহিড়ী। বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল। সকলের কাছে ফোন এসেছে। আরও কত নাম রয়েছে, হয়তো আমাদের জানাই নেই।

একবার মনে হল, এঁরা সবাই সত্যি বলছেন তো? এমন সাফল্যের মাহেন্দ্রক্ষণে কেউ কি আর নিন্দা-মন্দ করতে চায়? নিজে ফোন করে দেখা যাক, পুরনো আলাপ মনে রেখেছেন কি না। ফোন করামাত্র ও প্রান্তে সেই বিনম্র কণ্ঠ, ‘‘ভাইয়া, ক্যায়সে হ্যায়?’’ কে বলবে, ইনিই কয়েক ঘণ্টা আগে ইংল্যান্ডকে শেষ করে এলেন! সফরের মাঝে সাক্ষাৎকার দেওয়ার অনুমতি থাকে না বোর্ডের। তাই কথোপকথন ছাপা সম্ভব হল না। কিন্তু কয়েকটি তথ্য জানানো যেতে পারে, যা তাঁর বোলিং কীর্তির মতোই বিস্ময়কর। বুকের মধ্যে কী রকম ভয়ঙ্কর যন্ত্রণা চেপে তিনি এজবাস্টনে বল হাতে দৌড়চ্ছিলেন, বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল।

চেতেশ্বর পুজারাকে টিভিতে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় দিদির কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন আকাশ। দিদি লখনউয়ে থাকেন, ক্যানসারে আক্রান্ত। মাঠ থেকে টেস্ট জিতিয়ে ফেরার পরে সারারাত ঘুমোতে পারেননি তিনি। ছটফট করছিলেন দিদির কথা ভেবে। শেষে আর থাকতে না পেরে ভোররাতের দিকে দিদিকে ফোন করেই ফেলেন। দিদি ফোন ধরতেই কেঁদে ফেলেন তিনি। বলেন, ‘‘তোমার সঙ্গে কথা বলতে না পারলে ঘুম আসছে না। তুমি খুশি তো?’’ দিদি বলেন, ভাইয়ের সাফল্যে খুব খুশি। তাঁর বোলিংও দেখেছেন বলে জানান। সঙ্গে আশ্বস্ত করেন, ‘‘চিন্তা করিস না, আমি ভাল আছি।’’

দিদি এখন কিছুটা ভাল, লখনউয়ের বাড়িতে আছেন। ইংল্যান্ড যাওয়ার আগে তিনি কী রকম কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তা টিভি সাক্ষাৎকারে বলেননি আকাশ। ইংল্যান্ড সফরের দল নির্বাচন যেদিন হয়, সেদিন দিদিকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটোছুটি করছেন তিনি। বেডে শুয়ে আছেন দিদি, চিকিৎসা চলছে আর পাশের চেয়ারে বসে ভাই টিভিতে দেখলেন, তিনি সুযোগ পেয়েছেন। বাস্তব দৃশ্য বলে মনে হবে? ঋষভ পন্থের দুর্ঘটনা থেকে ফিরে এসে ব্যাট হাতে প্রতাপ দেখানোর চেয়ে কম রোমহর্ষক নয় বাংলার পেসারের জীবনযুদ্ধের কাহিনি। এখানেই শেষ নয়। মাস দু’য়েক আগে অন্য দিদির (যিনি পুণেতে থাকেন) স্বামীর হঠাৎ ওজন কমতে শুরু করে। আকাশ পরিবার-অন্ত প্রাণ। যেখানে যার কিছু হবে, ছুটে যাবেন। জামাইবাবুকে নিয়ে হাসপাতালে দৌড়লেন। স্নায়ুর রোগ ধরা পড়ল। বেশ কয়েকটা দামি ইঞ্জেকশনও দিতে হল। সব ব্যবস্থা করলেন আকাশ। কোভিডের সময় মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে বাবা ও দাদাকে হারিয়েছেন। এমন সব কঠিন প্রতিকূলতার মধ্যে দাঁড়িয়ে ক্রিকেট তো অনেক দূরের কথা, আতঙ্ক গ্রাস করবে, জীবন কী করে চালাব! আকাশ প্রদীপ কিন্তু ঠিক জ্বলছে। উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়েছে। প্রবল ঝড়-ঝাপ্টার মধ্যে পরিবারের শিখাও কমজোরি হতে দেননি।

এক-এক সময় মনে হচ্ছে, তাঁর কাহিনিটা নিছক ক্রিকেটের ধারাবিবরণী নয়। বরং বাস্তবের রুক্ষ জমিতে এক জীবনযোদ্ধার হার-না-মানা অভিযানের রোমহর্ষক কাহিনি। এজবাস্টনের দশ উইকেট শুধু বোলিং প্রদর্শনী নয়, একটা বিবৃতি। জীবনের বিবৃতি যে, ঝড় উঠবে, প্রতিকূলতা আসবে, হোঁচট খাবে, ক্ষতবিক্ষত হবে, রক্ত ঝরবে। কিন্তু তুমি হার মানতে পৃথিবীতে আসোনি, লড়াই চালিয়ে যাবে, সাহস রেখে এগিয়ে যাবে। মনে রেখো, যে জিততে চায়, সে-ই জিততে পারে না। জেতে সে-ই, যার জয় প্রাপ্য।

কলকাতায় প্রথম এসে আকাশ গিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভিডিওকন ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। সেখান থেকে প্রাক্তন ক্রিকেটার এবং এখন সিএবি কর্তা সঞ্জয় দাস এবং ইউনাইটেড ক্লাবের সৌতম মিত্রের উদ্যোগে ক্লাব ক্রিকেটে যাত্রা শুরু। সৌতম কিছুতে ভুলতে পারেন না, আকাশ কী ভাবে ফোন করে জানিয়েছিলেন, ‘‘আমি বাড়ি করেছি, একটা ছোট অনুষ্ঠান করছি। তোমাকে আসতেই হবে।’’ সৌতম তাঁকে জানান, পায়ে ব্যথা তাই যেতে পারবেন না। সঙ্গে-সঙ্গে আকাশ ফিজিয়োকে পাঠিয়ে দেন তাঁর পায়ের শুশ্রূষা করার জন্য। তার পর ট্রেনের ফার্স্ট ক্লাস টিকিট পাঠিয়ে দেন সাসারামে দোতলা বাড়ির গৃহপ্রবেশ অনুষ্ঠানে আসার জন্য। তবে সাসারামে ঝাঁ চকচকে বাড়ি করলেও কলকাতায় এলে ইডেনের ডরমেটরিই এখনও তাঁর ঠিকানা। সৌতম জানালেন, নিউ টাউনে ফ্ল্যাট কিনবেন বলে ঠিক করেছিলেন আকাশ। কয়েকটা ফ্ল্যাট দেখতেও গিয়েছিলেন। কিন্তু এখনও কিনে উঠতে পারেননি।

কলকাতায় যখন ক্লাব ক্রিকেট খেলছেন, শুরুর দিকে ইউনাইটেড ক্লাবের মেসে থাকতেন। তার পর যান ইডেনে সিএবি-র ডরমেটরিতে। ভারতের হয়ে খেলার পরেও পাঁচতারা হোটেলের রুম বুক করতে পারতেন না? এই প্রশ্ন যিনিই আকাশকে করেছেন, একটাই জবাব পেয়েছেন। ‘‘ইডেনের ওই ঘরে থাকতেই আমি সব চেয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।’’ মাঝেমধ্যে মনে হয়, নিউ টাউনে ফ্ল্যাট তিনি কিনবেন না। নিজে কষ্ট করে ডরমেটরিতে থেকে যাবেন। সাসারামে দোতলা বাড়ি বানাবেন যাতে পরিবারের বাকিরা আরামে থাকতে পারেন। আকাশ দীপের কাছে বরাবরই যে আগে আমার পরিবার, তার পরে আমার নিজের সুখ। নিজের জন্য খরচা বলতে কী? না, সম্প্রতি মাথায় চুল প্রতিস্থাপন করেছেন।

স্থানীয় ক্রিকেট খেলার সময় কুঁচকির চোট নিয়েও বল করে ইউনাইটেড ক্লাবকে জিতিয়েছেন। প্রচণ্ড শৃঙ্খলাপরায়ণ, ম্যাচ জিতেও পার্ক স্ট্রিট থেকে আনা খাবার মুখে তোলেননি। হোটেলের মোটা গদি পাতা নরম বিছানায় ঘুমোন না। মেঝেতে শোয়ার ব্যবস্থা করে নেন। যাতে পিঠের পেশিতে টান না ধরে। বেশির ভাগ সময় হনুমান চালিসা শোনেন। মেজাজ খুব ফুরফুরে থাকলে জনপ্রিয় ভোজপুরি গান বাজতে পারে, মাঝেমধ্যে গুণগুণ করে গেয়েও ওঠেন। একবার ইস্টবেঙ্গল মোটা টাকার প্রস্তাব দেয়। জীবনে এত সংগ্রামের মধ্যে দাঁড়িয়েও দলবদল করেননি। অনেক পরে যোগ দেন মোহনবাগানে তবে সেটাও পুরনো ক্লাবের সঙ্গে সম্পর্কহানি না ঘটিয়ে। কেউ মনে করতে পারে না, তিনি কখনও কোনও কিছুর জন্য আবদার করেছেন বা তারকাসুলভ আচরণ দেখিয়ে কিছু দাবি করেছেন বলে। উল্টে ভারতের হয়ে খেলার পরেও কলকাতায় এলে পুরনো ক্লাবের ম্যাচ দেখতে চলে এসেছেন।

অনূর্ধ্ব-২৩-এ নানা ঝড়-ঝঞ্ঝার মধ্যে বড় দাদার মতো পাশে থেকেছেন সৌরাশিস লাহিড়ী। তাঁর সঙ্গে রবিবার রাতেই কথা হয় আকাশের। দু’জনে সব চেয়ে বেশি আলোচনা করেন, জো রুটকে আউট করা স্বপ্নের ডেলিভারি নিয়ে। নাসের হুসেন, রবি শাস্ত্রী, মাইকেল আথারটনেরা পর্যন্ত বলেছেন, বিস্ময়-বল। আকাশ মূলত ইনসুইং বোলার। ক্রিজ়ের কোণে গিয়ে ইনসুইংয়ের মতো বল ছাড়েন কিন্তু কখনও-কখনও বল পিচে পড়ার পরে সোজা হয়ে যায়। ব্যাটসম্যান ভাবে বল ভিতরে আসছে। তৈরি হয়ে যায় লেগসাইডে খেলার জন্য। শেষ মুহূর্তে বোকা বানিয়ে বল সোজা হয়ে যাওয়ায় উইকেট রক্ষা করতে পারে না। রুটের ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। ‘‘রঞ্জি ট্রফিতে এই একই বল করে রজত পাটীদারের স্টাম্প ছিটকে দিয়েছিল আকাশ,’’ মনে পড়ছে সৌরাশিসের।

বাংলার রঞ্জি কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল মূল্যবাণ উপদেশ দিয়েছিলেন। আকাশ তখন অ্যাকশন নিয়ে বিভ্রান্ত। কেউ কেউ পরামর্শ দিয়েছিলেন, আউটসুইং আনতে হবে। অ্যাকশন পাল্টাও। লক্ষ্ণী বারণ করেছিলেন। সোমবার সকালে ফোন করে সেই উপদেশের জন্য যখন বারবার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন আকাশ, তখন লক্ষ্মী একটাই কথা বলেন। ‘‘তুই জো রুট স্পেশ্যাল বলটা করে যা।’’ শুনতে শুনতে মনে হচ্ছিল, এজবাস্টনে ঐতিহাসিক টেস্ট জিতেছে ভারত। সেই জয়ে অন্যতম প্রধান নায়ক বাংলার এক ফাস্ট বোলার। বঙ্গ ক্রিকেটমহলে টেলিকনফারেন্সে যেন অভিনব বিজয়োৎসব চলছে। শের শাহ গ্র্যান্ড ট্র্যাঙ্ক রোড তৈরি করেছিলেন। তাঁর শহর থেকে এসে এক বীর যোদ্ধা নতুন হাইওয়ে খুলে দিলেন। বাংলার ময়দান থেকে টেমসের পাড়ে গিয়ে বিলেত শাসনের জাতীয় সড়ক।

তিনি আকাশ দীপ— কী ভাবে বিজয়োৎসব করছিলেন? টেস্ট ম্যাচ থেকে কোনও স্মারক রাখেননি? উইকেট হাতে তিনি এবং মহম্মদ সিরাজ দাঁড়িয়ে আছেন, ছবি উঠেছে। কিন্তু উইকেট অনেক ক্ষেত্রে নেওয়ার অনুমতি থাকে না। জানা গেল, কে এল রাহুল এসে তাঁকে ম্যাচের বল উপহার দিয়েছেন। জীবনের প্রথম দশ উইকেটের বল। সাসারামের দোতলা বাড়ির আলমারিতে চকচক করবে।

ধুর, আবার ভুল লিখলাম। দশ উইকেটের বল কোথায়? এ তো জীবনযুদ্ধে জেতা গোলাকৃতি এক আকাশ-প্রদীপ। প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতেও যা নেভে না। ঘন অন্ধকারেও আশার আলো হয়ে জ্বলতে থাকে!

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Akash Deep KL Rahul

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy