E-Paper

বলেছিলাম, বুকে খা, মুখে খা, ছাড়বি না; সাফল্যে খুশি কিন্তু খেলার জগতে অতীত কেউ মনে রাখে না: আকাশ দীপ

সময় বার করে বুধবার আনন্দবাজারকে দীর্ঘ, একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেনআকাশ দীপ। কোথায় যেন শুনেছিলাম, ফাস্ট বোলারদের নাকি ভাবনার গভীরতা থাকে না। একদম ভুল শুনেছিলাম।

সুমিত ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৫ ০৬:৪২
স্মরণীয়: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ টেস্টের সিরিজ় ২-২ ড্র। ওভালে ভারতের নাটকীয় জয়ের পরে স্টাম্প নিয়ে উৎসব আকাশ দীপের।

স্মরণীয়: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ টেস্টের সিরিজ় ২-২ ড্র। ওভালে ভারতের নাটকীয় জয়ের পরে স্টাম্প নিয়ে উৎসব আকাশ দীপের। —ফাইল চিত্র।

ইংল্যান্ড থেকে ফিরেই ছুটেছিলেন ক্যানসারে আক্রান্ত দিদির কাছে। রাখিবন্ধন, দিদির চিকিৎসা দেখাশোনা করার ফাঁকে বাড়তে থাকা জনপ্রিয়তা সামলানো। তার ফাঁকে সময় বার করে বুধবার আনন্দবাজারকে দীর্ঘ, একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন আকাশ দীপ। কোথায় যেন শুনেছিলাম, ফাস্ট বোলারদের নাকি ভাবনার গভীরতা থাকে না। একদম ভুল শুনেছিলাম।

প্রশ্ন: প্রথমেই জিজ্ঞেস করি, দিদি কেমন আছেন?

আকাশ দীপ: ভাল আছে এখন। চিকিৎসা চলছে, দিদি মানসিক ভাবে এমনিতেই খুব শক্ত। সেটা সব চেয়ে ভাল দিক। ঈশ্বর করুণাময়, তিনি দেখছেন যাতে দিদি ভাল থাকে।

প্র: ভাইকে দেখে নিশ্চয়ই খুব খুশি?

আকাশ: হ্যাঁ, খুবই খুশি। দিদির মুখে হাসি দেখার চেয়ে সুখের আরকিছু নেই।

প্র: দিদি নিশ্চয়ই ইংল্যান্ডে আপনার এই দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্স টিভিতে দেখেছেন? কী বললেন?

আকাশ: দেখবে না? দিদি আমার সব খেলা দেখবে। খুব খুশি আর বলেছে, ভাই আমি তোর জন্য গর্বিত। শুনে আমার গায়ে কাঁটা দিচ্ছিল। দিদির মুখের হাসি দেখার জন্য আমি সব কিছু করতে পারি।

প্র: আপনি কী বললেন দিদিরকথা শুনে?

আকাশ: বললাম, তোমার মুখের হাসি আমার প্রেরণা। আমি আরও পরিশ্রম করব, আরও ভাল খেলব, আরও ম্যাচ জেতাব। তুমি শুধু এ রকম হাসতে থাকো। খুশি থাকো। ব্যস, আর কিছু চাই না আমি।

প্র: স্বীকার করতেই হচ্ছে, যত শুনছি, তত মুগ্ধ হচ্ছি। একটা ছেলে ইংল্যান্ডের মাঠে ব্যাটে-বলে এমন দুরন্ত পারফরম্যান্স করছে, এত তাঁর ভক্ত সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে, সারা পৃথিবী ধন্য ধন্য করছে। আর সে কি না পরিবারের প্রতি কত দায়বদ্ধ। অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করতে থাকা দিদির মুখে হাসি তাঁর সব কিছু।

আকাশ: এটাই তো হওয়া উচিত। পরিবারের জন্যই তো সব কিছু। আজ যতটুকু যা হতে পেরেছি, পরিবারের সাহায্য, সমর্থনেই হয়েছি। এটা কী করে কেউ ভুলেযেতে পারে?

প্র: যেটুকু যা হয়েছি কী করে বলছেন? কত লড়াই করে আপনার উঠে আসাটা তো এখন সকলের কাছে সেরা অনুপ্রেরণার কাহিনি।

আকাশ: ধন্যবাদ। মানুষের যদি আমার খেলা ভাল লেগে থাকে, তা হলে সেটা সেরা প্রাপ্তি। দেশের হয়ে খেলতে নামলে একটাই কথা মাথায় থাকে। আমি ভারতের দেড়শো কোটি জনতার প্রতিনিধি। দেশের জার্সি পরে খেলার সৌভাগ্য সবার হয় না। আমি সেই নির্বাচিত, ভাগ্যবান কয়েক জনের মধ্যে এক জন। তাই আমার দিক থেকে দুশো শতাংশ চেষ্টা যেন থাকে। তবে আমি নিজেকে বাস্তববাদীও রাখতে চাই।

প্র: বাস্তবাদী বলতে কী?

আকাশ: মানে হল, ইংল্যান্ড সিরিজ়ে যা করেছি, তা এখন অতীত হয়ে গিয়েছে। একটা কথা বলি। খেলাধুলোর দুনিয়ায় কেউ অতীতকে মনে রাখে না। এটা আমাদের পৃথিবীর নির্মম সত্য। তাই আমার দশ উইকেট বা ৬৬ রানও পুরনো হয়ে যাবে। লোকে ভুলে যাবে। আর ওই পারফরম্যান্সগুলোর মতো আমাকেও কারও মনে থাকবে না যদি না আমি আরও ম্যাচ জেতানো বোলিং বা ব্যাটিং করে যেতে পারি।

প্র: তার মানে বলতে চাইছেন, ইংল্যান্ড সফরকে বোতাম টিপে আর্কাইভে পাঠিয়ে দিয়েছেন?

আকাশ: একদমই তাই। এখনও অনেকে অভিনন্দন জানাচ্ছে, প্রশংসা পাচ্ছি। সব ঠিক আছে। ভালও লাগছে। কিন্তু একই সঙ্গে নিজেকে মনে করাতে থাকছি, ভাইয়া আগে ভি দেখনা হ্যায়। গাড়ি ইহা পে রুকনা নহী চাহিয়ে (ভাই, সামনের দিকেও তাকাতে হবে। গাড়ি যেন এখানেই থেমে না যায়)।

—ফাইল চিত্র।

প্র: আচ্ছা, এটা বাস্তবে করা তো নিশ্চয়ই খুব কঠিন বলে আমাদের অন্তত মনে হয়। একটা লোক এত ভাল খেলে এল, দেশকে জিতিয়ে এল, এই সময়ে তো মনে হতেই পারে, আহা দারুণ করে এসেছি। যাক কয়েকটা দিন বিশ্রাম পাওয়া যাবে।

আকাশ (হাসি): আবার আপনাকে বলি, খেলার দুনিয়া কিন্তু খুব নির্মম। আজ যিনি দু’হাতে দিলেন, তিনিই কাল সর্বস্বান্ত করে দিতে পারেন। তাই নিজেকে সব সময় বলে যেতে হয়, সতর্ক থাকো, মাটিতে পা রেখে চলো। পরিশ্রম করে যাও, নিজের কাজকে পুজো করো। কখনও আত্মতুষ্টিতে ভুগতে নেই যে, আমার যা করার ছিল করে দিয়েছি। এখন বিশ্রাম করার সময়।

প্র: আচ্ছা, এই যে ইংল্যান্ডে এ রকম একটা ফাটাফাটি সিরিজ় হল, যার প্রত্যেকটা টেস্ট পঞ্চম দিন পর্যন্ত গেল, এত উত্তেজনা আর আগুনের ফুলকি উড়ছিল, এর কী প্রভাব আপনাদের উপর পড়ল? মনে হচ্ছে কি একটা অগ্নিবলয় থেকে বেরোলাম?

আকাশ: হ্যাঁ, তা মনে হচ্ছে। ভয়ঙ্কর উত্তেজনা আর তীব্রতা ছিল সিরিজ়ে। আর সেটা ছিল বলেই তো সিরিজ়টা এত উপভোগ্য হয়েছে তাই না? আমরা থিয়েটারের ভিতরে ছিলাম। এবং ভিতরটা এত উত্তপ্ত, এত এসপার-ওসপার ছিল যে, আর কোনও কিছু মাথাতেই আসছিল না। বাইরে কী ঘটছে সে দিকে কারও খেয়ালই করার সময় ছিল না। একটাই কথা শুধু মাথায় থাকত। দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে যাও। কিছুতে হার মানব না। শেষদেখে ছাড়ব।

প্র: পাঁচ-পাঁচটা টেস্ট ধরে এই উত্তেজনার অগ্নিবলয়ের মধ্যে বাস করা তো সীমাহীন চাপের ব্যাপার। কী করে সেই চাপ সামলালেন আপনারা? এ তো ক্রিকেট নয়, যেন ক্রিকেট যুদ্ধ!

আকাশ: ঠিকই বলেছেন, যুদ্ধই হল বটে। এই নাছোড় মানসিকতা আপনা-আপনি এসে যায়। কাউকে বলতে হয় না। এক-একটা সময় মহলই এমন তৈরি হয়ে যায় যে, কেউ কাউকে ছাড়বে না। দু’টো দলই তো ঝাঁপিয়ে পড়ছে। ওরাও ছাড়বে না, আমরাও না। আর যত সময় গেল, তত সেই তীব্রতা বাড়তে থাকল। আর সত্যি কথা বলতে কী, আমরা খুব উপভোগ করছিলাম এই সংঘর্ষটা। চাপের মধ্যে ভাল কিছু করতে পারলে তার আনন্দই অন্য রকম।

প্র: এমন স্মরণীয় সিরিজ়ের স্মারক হিসেবে কী রাখলেন? দশ উইকেটের বলটা নিশ্চয়ই আপনার কাছে রয়েছে?

আকাশ: হ্যাঁ, দশ উইকেটের বলটা নিয়ে এসেছি। দু’টো টেস্ট যে আমরা জিতেছি, তার স্টাম্পও রেখেছি। ওভালে শেষ টেস্ট জেতার স্টাম্পটা একদম আগলে রেখেছিলাম। ওটা নিতেই হত। এমন হাড্ডাহাড্ডি টেস্টের স্মৃতি রাখতেই হত।

লড়াকু: আকাশের ৬৬ রান থেকে যাবে ইতিহাসের পাতায়।

লড়াকু: আকাশের ৬৬ রান থেকে যাবে ইতিহাসের পাতায়। —ফাইল চিত্র।

প্র: আপনি যদিও দ্রুত ইংল্যান্ড সিরিজ়কে অতীত করে দিতে চাইছেন, আমাদের হ্যাংওভার এখনও যায়নি। তাই জানতে চাইব, ওই স্মারকগুলোর দিকে তাকিয়ে কী মনে হচ্ছে?

আকাশ: ভাল তো লাগছেই। সব চেয়ে ভাল লাগছে যখন দেখছি, আমি ভাল করেছি, দলও জিতেছে। দশ উইকেট নিয়েছি, টিম জিতেছে। ৬৬ রান করেছি, শেষ টেস্টে জিতে আমরা সিরিজ় ড্র করেছি। আসল ব্যাপার হচ্ছে ওটাই। আমি কী করলাম তার চেয়েও বড় হচ্ছে দলের ফল। তাই যখন দল জেতে আর আমিও ভাল খেলে অবদান রাখতে পারি, সেই মুহূর্তগুলো বিশেষ ভাবে স্মরণীয়হয়ে থাকে।

প্র: দয়া করে এর মধ্যে আবার বলবেন না, ইংল্যান্ড সফর এখন অতীত...

আকাশ: আরে, অতীত তো বটেই। দশ দিন মতো হয়ে গেল। সব ভাল জিনিসও শেষ হয়। তখন সামনের দিকে তাকাতে হয় যাতে নতুন করে আবার ভাল কিছু গড়ে তোলা যায়। আমার সেটাই মন্ত্র। ইংল্যান্ডে ভাল করেছ, ঠিক আছে উপভোগ করেছ, আনন্দ করেছ, এ বার ভুলে যাও। নতুন সাফল্য খোঁজো, নতুন শৃঙ্গ জয়ের জন্য ঝাঁপাও।

প্র: ফাস্ট বোলারদের সম্পর্কে বরাবরের অভিযোগ হচ্ছে, খুব বেশি ভাবে-টাবে না। দৌড়ে এসে জোরে জোরে বল করে। আপনি এত গভীরে গিয়ে সব কিছু ভাবেন? সত্যিই মুগ্ধ করারমতো ব্যাপার।

আকাশ: হয়তো জীবনের চলার পথে নানা বাঁক, নানা মোচড় আর নানা পরীক্ষা আমার মধ্যে এটা ইঞ্জেকশনের মতো ‘পুশ’ করে দিয়েছে। আমি ভাল দেখেছি, খারাপও দেখেছি। তাই সব চেয়ে বড় শিক্ষা হল, আলোয় ভেসে যেও না, অন্ধকারে ডুবে যেও না। যোদ্ধা আছো, যোদ্ধা থাকো। লড়াই করে যাও।

প্র: আপনার ব্যাটিং নিয়ে প্রবল কৌতূহল তৈরি হয়েছে। মাইকেল ভন বলেছিলেন, আপনি নাইট ওয়াচম্যান নন, নাইট হিটার। অস্ট্রেলিয়াতে ফলো-অন বাঁচিয়েছিলেন, ওভালে ৬৬। অন্যতম টার্নিং পয়েন্ট। এত ভাল ব্যাটিংয়ের হাত কোথা থেকে এল?

আকাশ: আরে। আমি তো ব্যাটিংই করতাম। শুধু ব্যাট করতেই ভাল লাগত। কলকাতায় খেলতে এসে বোলার হয়েছি।

প্র: বাংলার হয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছেন, আমরা জানি। কিন্তু দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে রান করা আর বিদেশের মাঠে টেস্ট ম্যাচে ওই ইনিংস খেলা, দু’টোর তো কোনও তুলনাই হয় না। বিশেষ করে এ রকমএকটা সিরিজ়ে!

আকাশ: আমি ব্যাটিং নিয়ে সিরিয়াস। বিশ্বাস করি, ব্যাট হাতে ভাল করতে পারি। ব্যাটিংটা আমার ভিতর থেকে আসে। এমন নয় যে, কেউ জোর করে প্যাড-গ্লাভস দিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আমি ব্যাটিং ভালবাসি, উপভোগ করি। যে কারণে নেট প্র্যাক্টিসে আমি সব সময় মন দিয়ে ব্যাটিং করি। তখনও আমার লক্ষ্য থাকে, উইকেট দেব না। আর একটা কথা হচ্ছে, ব্যাটিং করলে শরীরের মধ্যে একটা অন্য রকম টগবগানি তৈরি হয় আমার। মনে হয় যেন রক্ত ফুটছে। এটা আমি অনেক বার দেখেছি যে, ব্যাটিংয়ে ভাল কিছু করার পরে বল হাতে আরও তেজি হয়ে উঠেছি।

প্র: ওভালের ৬৬ রানের ইনিংসটার সময় নিজেকে কী বলছিলেন?

আকাশ: বলছিলাম, গায়ে মারুক, বুকে মারুক, মুখে মারুক, উইকেট দিবি না আকাশ। ওরা যেন ভয় পাইয়ে তোকে আউট না করতে পারে। তুই ফাইটার, ফাইট কর। তুই এত ব্যাটিং ভালবাসিস, আজ দেখা তোর ব্যাটিং কেরামতি। যত ইনিংস এগিয়েছে, তত মনের মধ্যে ওই শব্দগুলো আরও জোরালো হয়ে বেজেছে। আর তত আত্মবিশ্বাস বেড়েছে যে, আমি রান করতে পারব।

প্র: আচ্ছা, এ রকম একটা যুদ্ধ-যুদ্ধ সিরিজ় হল। শুধু রক্তই ঝরল না, এই যা। না হলে দু’টো দল দু’টো দলের গলার নলি টিপে ধরছে প্রত্যেক দিন। ওভালের শেষ বলের পরে দু’টো দলের মধ্যে সম্পর্ক কী রকম ছিল, কোথাও তার সন্ধান পেলাম না। তিক্ততায় শেষ হল নাকি হ্যান্ডশেকে, সৌজন্যে? আপনার মুখে শুনি...

আকাশ: না, মাঠের খেলা শেষ হয়ে যেতেই সব ফাটাফাটির শেষ। খুব বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে সব কিছু শেষ হয়। আমরা দু’টো দলের সব ক্রিকেটার একত্রিত হয়েছিলাম, এত ভাল একটা সিরিজ় সেলিব্রেটও করি সবাই মিলে। সেখানে কেউ কিন্তু সিরিজ়ে কী হয়েছে, কার সঙ্গে কী ঝামেলা হয়েছে, কে কাকে কী বলেছে, সে সব কথা তোলেনি। দেখুন, আমরাও তো বুঝতে পারছিলাম, দু’টো দলই জানপ্রাণ লাগিয়ে জেতার চেষ্টা করছে। তাতে কিছু মশলা যোগ হয়ে যাচ্ছে। ব্যক্তিগত ভাবে কারও বিরুদ্ধে তো কিছু নেই। বরং পারস্পরিক সম্মানই আছে যে, দু’টো দল কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি না ছেড়ে এত ভাল একটাসিরিজ় খেলল।

প্র: সিরিজ় শেষে বেন ডাকেট কি আপনাকে ড্রিঙ্কস এগিয়ে দিলেন নাকি আপনি আবার কাঁধে হাত রাখলেন বেন ডাকেটের?

আকাশ (হাসি): বেন ডাকেট আমার ভাল বন্ধু। ওর সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলেই ও ভাবে কাঁধে হাত দিয়ে কথা বলেছিলাম। এটা হয়তো অনেকে জানে না বলে অন্য ভাবে ব্যাখ্যা করেছে। আসলে আগে ওকে কয়েক বার আউট করেছি। তাই সে দিন ডাকেট এসেই বলছিল, আজ আমি কিছুতেই তোমাকে উইকেট নিতে দেব না। তার পর আমি আউট করে সেটাই কাঁধে হাত দিয়ে বলছিলাম।

প্র: ঠিক কী বলেছিলেন বলুনতো ডাকেটকে?

আকাশ: বলেছিলাম, ক্রিকেট খুব মজার একটা খেলা। এখানে কেউ আগে থেকে কিছু বলতে পারে না, এটা হবেই বা এটা হবেই না। দেখলে তো, ক্রিকেট আজ তোমাকে এটা মনে করিয়ে দিয়ে গেল। এই ভুলটা আর কখনও করতে যেও না।

প্র: সিরিজ় শেষে ডাকেটের সঙ্গে তা হলে কী কথা হল?

আকাশ: আমরা হাসি-ঠাট্টাতেই শেষ করেছি। দু’জনে দু’জনকেঅভিনন্দন জানিয়েছি এত ভাল একটা সিরিজ়ের জন্য। ডাকেট খুব ভাল মানুষ। আমার সঙ্গে কোনওতিক্ততা নেই ওর।

প্র: আচ্ছা, ইংল্যান্ড সফরের সাফল্যে আপনার জনপ্রিয়তা যে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ল, চারদিকে এত ভক্তদের ভালবাসা ও আবদার, এই পরিবর্তন কী ভাবে সামলাচ্ছেন?

আকাশ: এ সব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। আসল পরিবর্তনটা কী জানেন? ইংল্যান্ড দায়িত্ব বাড়িয়ে দিল। আরও দায়িত্ব সচেতন করে দিয়ে গেল যে, তোমাকে এই সাফল্য শুধু ধরে রাখলে হবে না, চেষ্টা করতে হবে আরও উন্নতি করতে। নিজের কাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমি জানি এটা করতে পারলে বাকি সব ঠিক হয়ে যাবে।

প্র: শেষ প্রশ্ন। ইংল্যান্ড সফরের সব চেয়ে তৃপ্তিদায়ক ব্যাপার কী? আর যদি কোথাও সামান্য খচখচানিও থেকে থাকে, সেটা কী নিয়ে?

আকাশ: সব চেয়ে তৃপ্তিদায়কঅবশ্যই এত দুর্ধর্ষ একটা সিরিজ়ের শেষে মাথা উঁচু করে ফিরতেপারা। শেষ দিনে অত উত্তেজনা, নাটকের মধ্যে ওভাল টেস্ট জিতে শেষ করা। আর খচখচানি হচ্ছে, সিরিজ়টা আমরা জিততে পারতাম। সেটা হল না।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Cricketer Celebrity Interview Akash Deep Indian cricketer

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy