Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
ICC Women’s World T20

সাত বছরে সাত বার কোচ বদল! ভারতীয় ক্রিকেট দলের ব্যর্থতার দায় কি বোর্ডেরও?

২০১৪ সাল থেকে বার বার মহিলা দলের কোচ বদল করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ছ’জনকে। কাউকেই দলের সঙ্গে দীর্ঘ দিন কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি।

picture of indian women cricket team

হরমনপ্রীতদের বার বার ব্যর্থতার পিছনে রয়েছে বিসিসিআইয়ের দায়ও। ছবি: টুইটার।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:৩১
Share: Save:

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৫ রানে হারায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন হরমনপ্রীত কৌর, স্মৃতি মন্ধানারা। অঞ্জুম চোপড়ার মতো কয়েক জন প্রাক্তন যদিও ভারতীয় ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, ডায়ানা এডুলজির মতো প্রাক্তন তীব্র সমালোচনা করেছেন। ব্যর্থতার জন্য ক্রিকেটারদের তুলোধনা করা হলেও চাপা পড়ে যাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের খামখেয়ালি মানসিকতা।

মহিলা ক্রিকেট দলের জন্য দীর্ঘ মেয়াদের কোচ নিয়োগ করতে ব্যর্থ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। বার বার পরিবর্তন করা হয়েছে কোচ। বিভিন্ন কোচ নিজের মতো করে দলকে তৈরি করার চেষ্টা করেছেন। বদলে গিয়েছে পরিকল্পনা, কৌশল। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ভারতীয় মহিলা দলের বার বার ব্যর্থতার অন্যতম কারণ হিসাবে উঠে আসছে এই তথ্য। গত সাত বছরে সাত বার বদল করা হয়েছে জাতীয় দলের কোচ।

২০১৪ সাল থেকে হরমনপ্রীত, মন্ধানাদের দায়িত্বে এসেছেন পাঁচ জন কোচ। কারও উপরই ভরসা রাখতে পারেননি বিসিসিআই কর্তারা। দীর্ঘ মেয়াদে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। বরং, কখনও কখনও কয়েক মাসেই কোচের উপর আস্থা হারিয়েছেন ক্রিকেট কর্তারা। ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর কোচের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল সুধা শাহকে। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল পূর্ণিমা রাওকে। ২০১৭ সালের বিশ্বকাপের মাত্র দু’মাস আগে পূর্ণিমাকে বরখাস্ত করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তুষার আরোঠেকে। যদিও পূর্ণিমার কোচিংয়ে ভারত প্রথম বার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ় জিতেছিল। চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল এশিয়া কাপে। বিশ্বকাপের যোগ্যতাও অর্জন করেছিল ভারত। তবু বিশ্বকাপের মাত্র দু’মাস আগে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল পূর্ণিমাকে।

তুষারের উপরও আস্থা রাখতে পারেননি ক্রিকেট কর্তারা। বদোদরার প্রাক্তন ক্রিকেটারের কোচিংয়ে ভারত বিশ্বকাপে ভাল পারফরম্যান্স করলেও প্রতিযোগিতার পরেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের শেষ দিকে দায়িত্ব দেওয়া হয় রমেশ পাওয়ারকে। তৎকালীন অধিনায়ক মিতালি রাজের সঙ্গে পাওয়ারের মতবিরোধ হওয়ায় তাঁকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০১৮ সালে তাঁর সঙ্গে চুক্তি বৃদ্ধি করা হয়নি। মহিলা ক্রিকেট দলের কোচ করা হয় আর এক প্রাক্তন ক্রিকেটার ডব্লিউভি রামনকে। রামনের প্রশিক্ষণে ভারত ২০২০ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলেও খুশি হননি বিসিসিআই কর্তারা। সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকেও।

২০২১ সালে রামনকে সরিয়ে দেওয়ার পর আবার ফিরিয়ে আনা হয় পাওয়ারকে। ভারতীয় দলের প্রাক্তন স্পিনারের প্রশিক্ষণে হরমনপ্রীতরা ২০২২ সালে এক দিনের বিশ্বকাপ, কমনওয়েলথ গেমস এবং এশিয়া কাপে ভাল পাররম্যান্স করেন। তাঁর উপরও ভরসা করতে পারেনি বিসিসিআই। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে পাওয়ারকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে।

পাওয়ারকে সরিয়ে মহিলা ক্রিকেট দলের কোচ করা হয়েছে হৃষিকেশ কানিতকারকে। ভারতীয় দলের প্রাক্তন বাঁহাতি ব্যাটারই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দল নিয়ে গিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। আবারও নকআউট পর্বে ব্যর্থ হলেন হরমনপ্রীতরা। অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পর ক্রিকেটারদের সমালোচনা হলেও কোচ নিয়ে বিসিসিআইয়ের এই খামখেয়ালি আচরণ ধামা চাপা পড়ে যাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE