অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ে সুযোগ পেলেও দু’বছর পর বিশ্বকাপে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি যে সুযোগ পাবেন তা এখনও নিশ্চিত নয়। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন অজিত আগরকর। প্রধান নির্বাচক জবাব দিয়েছেন ফিটনেস নিয়ে মহম্মদ শামির তোলার অভিযোগেরও। পাশাপাশি এটাও বলে দিয়েছেন, সবাইকে তুষ্ট করার ক্ষমতা নেই তাঁর।
শনিবার ‘এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড সামিট’-এ রোহিত এবং কোহলি নিয়ে আগরকর বলেছেন, “এখন ওরা অস্ট্রেলিয়া সফরে থাকা দলের সদস্য। দু’জনেই অসাধারণ ক্রিকেটার। এই মঞ্চে আলাদা করে কোনও ক্রিকেটারকে নিয়ে কথা বলতে চাই না। আজ থেকে দু’বছর পর পরিস্থিতি কেমন থাকবে তা বলা কঠিন। কে জানে, হয়তো কোনও তরুণ ক্রিকেটার ওদের জায়গা নিয়ে নেবে। দু’জনেই ভাল ক্রিকেটার। তাই প্রত্যেক ম্যাচে ওদের পরীক্ষায় বসানো উচিত নয়। এক বার খেলতে শুরু করলে আমরা সব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখব। শুধু রান নয়, ট্রফি জেতাটাও দরকার। এমন নয় যে অস্ট্রেলিয়ায় তিনটে শতরান করল মানেই ২০২৭ বিশ্বকাপে ওদের জায়গা পাকা হয়ে গেল। পরিস্থিতি বিচার করে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
রঞ্জি ম্যাচ শুরুর আগে শামি বলেছিলেন, ‘‘ভারতীয় দল বা নির্বাচকেরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। আমার ফিটনেসের কথা জানতে চাননি। আমি তো আর যেচে ফিটনেস নিয়ে ওঁদের বলতে যাব না। এটা আমার কাজ নয়। ওঁদের জানতে হবে। যদি আমি চার দিনের রঞ্জির ম্যাচ খেলতে পারি, তা হলে ৫০ ওভারের ম্যাচ কেন খেলতে পারব না? যদি আমি ফিট না থাকতাম, তা হলে এনসিএ-তে থাকতাম, রঞ্জির দলে থাকতাম না।’’
এর পরেও রোখা যায়নি শামিকে। বলেছিলেন, ‘‘আমি কতটা ফিট সেটা রঞ্জিতেই সকলে দেখতে পাবে। কাউকে জবাব দেওয়ার নেই। এত বছর ভারতের হয়ে খেলেছি। প্রতিটা ম্যাচে নিজের ১০০ শতাংশ দিয়েছি। আশা করেছিলাম, আমার সঙ্গে নির্বাচকেরা কথা বলবেন। কিন্তু কেউ কিছু জানতে চাননি। আমার ফিটনেস না জেনেই আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’’
সেই প্রসঙ্গে আগরকর বলেন, “যদি ও আমাকে প্রশ্নটা করত তা হলে উত্তর দিতে পারতাম। এখানে আমার সামনে থাকলেও উত্তর দিতাম। সমাজমাধ্যমে ও কী বলেছে তা ঠিক জানি না। জানতে পারলে হয়তো ওকে একটা ফোন করব। আমার ফোন সব সময় ক্রিকেটারদের জন্য খোলা থাকে। গত কয়েক মাসে অনেক ক্রিকেটারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাই এখানে অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য করে শিরোনাম দিতে চাই না। এটুকু বলব, ভারতের হয়ে শামি খুব ভাল খেলেছে। যদি কিছু বলে থাকে, সেটা আমাকে বলা উচিত ছিল। ইংল্যান্ড সিরিজ়ের আগেও বলেছি, ও ফিট থাকলে নিশ্চয়ই বিমানের আসনে বসত। দুর্ভাগ্যবশত ফিট ছিল না। ঘরোয়া ক্রিকেটের মরসুম সবে শুরু হয়েছে। আমি যতদূর জানি, ও পুরোপুরি ফিট ছিল না বলেই নেওয়া হয়নি।”
আরও পড়ুন:
ক্রিকেট ছাড়ার পর ধারাভাষ্যকার হিসাবে দীর্ঘ দিন কাজ করেছেন আগরকর। আইপিএলের দলের হয়েও কাজ করেছেন। নির্বাচক হিসাবে তাঁর কাজ সবচেয়ে কঠিন বলে মনে করেন তিনি। তাই জন্যই জানিয়েছেন, সকলকে সন্তুষ্ট করতে পারবেন না।
আগরকরের কথায়, “নির্বাচক হিসাবে আমার কাজ ১৫ জনের দল বেছে নেওয়া। আর কিছু নেই আপনার হাতে। এই মুহূর্তে যে মানের ক্রিকেটার রয়েছে আমাদের দেশে, তাতে ১৫ জন বেছে নেওয়া খুবই কঠিন। অনেক জিনিস আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকে না। খুব কঠিন, পরিশ্রমসাপেক্ষ এবং চাপের কাজ। নির্বাচক হওয়া বড় দায়িত্ব। ক্রিকেটার হিসাবে আর এক জনের কেরিয়ার তৈরি করে দেওয়া সহজ। নির্বাচক হিসাবে একটা সিদ্ধান্তে অনেকের কেরিয়ার বদলে যেতে পারে, সেটা ভাল হোক বা খারাপ। সবাইকে তুষ্ট করতে পারব না। নিজের সেরা কাজ করাটাই আমার দায়িত্ব।”