Advertisement
০২ মে ২০২৪
ICC ODI World Cup 2023

ওয়ার্নার-মার্শ জুটির দাপটে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় জয় অস্ট্রেলিয়ার, আবার হেরে প্রবল চাপে পাকিস্তান

আগে ব্যাট করে শতরান করলেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার এবং মিচেল মার্শ। এই দু’টি ইনিংসই শেষ করে দিল পাকিস্তানকে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তারা হারল ৬২ রানে।

cricket

হাসতে হাসতে শতরান ওয়ার্নারের। ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৩ ২২:০৭
Share: Save:

প্রথম উইকেটেই যদি কোনও দল আড়াইশোর বেশি রান তুলে ফেলে, তা-ও আবার ৩৪ ওভারের মধ্যে, তা হলে সেই ম্যাচের আর কী পড়ে থাকে? ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারেন, সেই দল চারশো তুলবে এবং হাসতে হাসতে ম্যাচ জিতবে। তবে শুক্রবার বেঙ্গালুরুতে অস্ট্রেলিয়া সেই কাজ করতে পারল না। ম্যাচ তারা ৬২ রানে জিতল বটে। কিন্তু পরে ব্যাট করে পাকিস্তান যথেষ্ট লড়াই দিল। অস্ট্রেলিয়ার তোলা ৩৬৭-৯ রানের জবাবে পাকিস্তান থেমে গেল ৩০৫ রানে।

বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম ছোট মাঠ। তার উপর পাটা উইকেট। বিশ্বকাপ তো দূর, আইপিএলেও এই ম্যাচে ঝুড়ি ঝুড়ি রান ওঠে। সেখানে টসে জিতে আগে বল করার সিদ্ধান্ত নিলেন পাক অধিনায়ক বাবর আজম। আগে ব্যাট করে বিপক্ষের উপরে রানের বোঝা চাপিয়ে দেওয়াই যেত। এই সিদ্ধান্তই ব্যুমেরাং হয়ে গেল। খুশি মনেই আগে ব্যাট করতে নামলেন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারেরা। এবং শুরু থেকেই পাক বোলারদের শাসন করে ম্যাচ নিজেদের মুঠোয় নিয়ে নিলেন।

আইপিএলে নিয়মিত খেলার সুবাদে ভারতের প্রায় প্রতিটি মাঠ হাতের তালুর মতো চেনা ডেভিড ওয়ার্নারের। ফলে ব্যাটিং সহায়ক পিচের সুবিধা নিয়ে তিনি তাণ্ডব শুরু করলেন বাইশ গজে। কোনও পাক বোলারকে দাঁড়াতে দেননি। ১০ রানের মাথায় তাঁর লোপ্পা ক্যাচ ফেলেন উসামা মির। ওয়ার্নার থামলেন গিয়ে ১৬৩ রানে। মাঝে শতরানের পর আর একটি সুযোগ দিয়েছিলেন। সেটাও ফেলে দেন পাকিস্তানের আবদুল্লাহ শফিক।

ওয়ার্নার তবু সুযোগ দিয়েছিলেন। উল্টো দিকে থাকা মিচেল মার্শ সেটাও দেননি। জন্মদিনে খেলতে নেমে শতরান করে গেলেন। এমন নজির খুব বেশি ক্রিকেটারের নেই। দুই ব্যাটারই হাসতে হাসতে শট খেলছিলেন। অনায়াসে পাক বোলারদের সীমানার বাইরে পাঠাচ্ছিলেন। ১০০, ১৫০, ২০০, ২৫০। অস্ট্রেলিয়ার স্কোরবোর্ডে রান উঠেই যাচ্ছিল। কিন্তু উইকেট একটাও পড়ছিল না।

পাকিস্তানকে বলা হচ্ছিল বিশ্বের সেরা পেস বোলিং আক্রমণ। সেই বোলিং যে কতটা ভঙ্গুর তা বোঝা গেল শুক্রবার। ভারতের বিরুদ্ধেও কেউ আহামরি কিছু করতে পারেননি। আর পাটা উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার তাঁদের স্কুলছাত্রদের পর্যায়ে নামিয়ে আনলেন। হ্যারিস রউফ প্রথম ওভারেই দিলেন ২৪ রান। ৮ ওভারে তিনি দিলেন ৮৩ রান। তাঁকে লোকানোর জায়গা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। হাসান আলি তবু ভাল। ৮ ওভারে দিলেন ৫৭। সবচেয়ে ভাল শাহিন আফ্রিদি। শুরু থেকেই খুব বেশি রান দেননি। দিনের শেষে ১০ ওভারে ৫৪ রানে ৫ উইকেট।

যে দলকে দেখে একসময় মনে হচ্ছিল যে বিনা উইকেটে ৫০ ওভার খেলে দিতে পারে, তারাই প্রায় অলআউট হয়ে যাচ্ছিল। দুই ওপেনার ফিরে যেতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। স্টিভ স্মিথ এক বার প্রাণ ফিরে পেলেন বাবর তাঁর ক্যাচ ফেলায়। কিন্তু সেটা কাজে লাগাতে পারলেন না। একই অবস্থা মার্নাস লাবুশেন, মার্কাস স্টোইনিস, জস ইংলিসদের। অস্ট্রেলিয়া থামল ৯ উইকেটে ৩৬৭ রানে।

পিচ ব্যাটারদের স্বর্গরাজ্য ছিল। তাই পাকিস্তান বিনা লড়াইয়ে যুদ্ধে হেরে যাবে, এমনটা কেউই ভাবেননি। অস্ট্রেলিয়ার মতো পাকিস্তানের দুই ওপেনারও শুরু থেকে চালিয়ে খেললেন। আবদুল্লাহ শফিক এবং ইমাম উল হকের জুটিতে উঠে গেল ১৩৪ রান। ওভার পিছু রান রেটও ভালই ছিল। অস্ট্রেলিয়ার বোলারেরা তখন দিশেহারা অবস্থা।

দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়ার মতোই অবস্থা হল পাকিস্তানের। দুই ওপেনার ফিরতেই আশা শেষ। তবু কিছুটা লড়াই করেছিলেন মহম্মদ রিজ়‌ওয়ান। কিন্তু অ্যাডাম জ়াম্পার বলে ৪৬ রানে ফিরতেই আশা শেষ। পাকিস্তান থেমে গেল ৩০৫ রানে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE