ভারতের ফিল্ডারদের হল টা কী? হাতের ক্যাচ পড়ল। বল ধরতে সমস্যা হল। রান আউটের সুযোগ নষ্ট হল। ভারতের এই ভুল কাজে লাগিয়ে ১৭১ রান করল পাকিস্তান। যে পাঁচটি ক্যাচ পড়ল, তার জন্য ৮৯ রান বেশি হল। খারাপ ফিল্ডিংয়ের জন্যই ভারতের সামনে বড় রানের লক্ষ্য রাখল পাকিস্তান।
প্রথম ওভার থেকেই ফিল্ডিংয়ে ভুল করতে শুরু করে ভারত। ম্যাচের তৃতীয় বলে বড় শট মারতে গিয়েছিলেন সাহিবজ়াদা ফারহান। হার্দিক পাণ্ড্যের বল তাঁর ব্যাটের কানায় লেগে হাওয়ায় ওঠে। থার্ড ম্যানে ছিলেন অভিষেক শর্মা। ভাল ফিল্ডার তিনি। কিন্তু ক্যাচ কোথায় আসছে বুঝতেই পারেননি তিনি। শেষ সময়ে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ ধরতে যান। বল মাটিতে পড়ে যায়। সেই সময় শূন্য রানে ছিলেন ফারহান।
অষ্টম ওভারে বরুণ চক্রবর্তীর বলে আবার বড় শট মারতে যান ফারহান। লং অনে ছিলেন সেই অভিষেকই। এক হাতে ক্যাচ ধরার চেষ্টা করেন তিনি। বল তাঁর হাতে লেগে ছক্কা হয়ে যায়। বাউন্ডারি থেকে কিছুটা এগিয়ে ছিলেন অভিষেক। বাউন্ডারিতে থাকলে হয়তো ক্যাচ ধরতে পারতেন তিনি। তখন ৩২ রানে খেলছিলেন ফারহান। শেষ পর্যন্ত ৫৬ রান করেন তিনি।
পাওয়ার প্লে-তে আরও একটি ক্যাচ ছাড়ে ভারত। পঞ্চম ওভারে বরুণের বলে সাইম আয়ুব বড় শট মারতে যান। বল হাওয়ায় ওঠে। শর্ট ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ ছাড়েন কুলদীপ যাদব। তখন ৪ রানে ব্যাট করছিলেন সাইম। তিনি ২১ রান করেন।
আরও পড়ুন:
ম্যাচের ১৯তম ওভারে জসপ্রীত বুমরাহের বলে বাউন্ডারিতে ফাহিম আশরফের সহজ ক্যাচ ফেলেন শুভমন গিল। সেই সময় ফাহিমের রান ছিল ৬। ম্যাচের শেষ বলেও তাঁর ক্যাচ পড়ে। শিবম দুবে থার্ড ম্যান বাউন্ডারিতে থাকলে সহজে ক্যাচ ধরতে পারতেন। বদলে ছক্কা হয়। ফাহিমের ২০ রানে পাকিস্তান ১৭১ রানে পৌঁছায়। মাঝে রান আউটের সুযোগ পেয়েছিলেন বরুণ। কিন্তু বল ধরতেই পারেননি তিনি।
চলতি এশিয়া কাপে ভারত ১৭টি ক্যাচ ধরেছে ও সাতটি ক্যাচ ফেলেছে। শ্রীলঙ্কা ও হংকংয়ের পর সবচেয়ে খারাপ ক্যাচের শতাংশ ভারতের। পাকিস্তান ম্যাচেও সেটাই দেখা গেল। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে ভারতীয় ফিল্ডারদের মন্থরতার সুযোগে ১ রানের জায়গায় ২ রান বা ২ রানের জায়গায় ৩ রান নিল পাকিস্তান। সব মিলিয়ে ফিল্ডিং ভাল হল না সূর্যকুমার যাদবদের।
কিছু দিন আগেই ভারতের ফিল্ডিং কোচ টি দিলীপ জানিয়েছিলেন, তাঁরা বিশেষ ভাবে অনুশীলন করছেন। তিনি বলেছিলেন, “দুবাই স্টেডিয়ামের আলোগুলো অন্য রকম হওয়ার কারণে আমাদের সমস্যা হয়। অন্য স্টেডিয়ামে স্তম্ভের উপর আলো থাকলেও, এখানে মনে হয় আগুনের গোলকের নীচে খেলছি। বাউন্ডারি লাইনের ধারে ক্যাচ ধতে সবচেয়ে সমস্যা হয়। সেকেন্ডের ভগ্নাংশের জন্য বল থেকে আপনার চোখ সরে যেতে পারে। বিশেষ করে বল যখন আকাশে উঠে যায়।” কী ভাবে এর সমাধান করা গিয়েছে? দিলীপের উত্তর, “সারা জীবন আমাদের বলা হয়েছে ক্যাচ ওঠার সময় বলের থেকে চোখ না সরাতে। চোখ সরে গেলেই আমরা ভয় পেয়ে যাই। তাই ফিল্ডিংয়ে কিছু বৈচিত্র এনেছি। এর ফলে বল থেকে মুহূর্তের জন্য চোখ সরলেও, ক্যাচ হাতে পড়ার আগে যথেষ্ট সময় যেন থাকে।”
রবিবার বাউন্ডারির ধারে বসে ভারতের খারাপ ফিল্ডিং দেখছিলেন দিলীপ। তাঁর কপালে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট ছিল। তিনি বুঝতে পারছিলেন, ফিল্ডিং নিয়ে এখনও অনেক পরিশ্রম করতে হবে তাঁকে।