Advertisement
E-Paper

কেয়া-বাত সিএবি! যোগ্যতা ছাড়াই মহিলা ক্রিকেটার সংস্থার সভায়, বোর্ডকর্তা জহুরির ইমেল টেনে ব্যাখ্যা সভাপতি স্নেহাশিসের

যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও কেয়া রায়কে তাদের এজিএম এবং এসজিএমে থাকার অনুমতি দিয়েছে রাজ্যের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা সিএবি। প্রশ্ন উঠেছে, শুধু মাত্র প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে কী করে কেয়া ওই বৈঠকে থাকতে পারেন?

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৫ ১৬:১১
Email sent by BCCI to CAB. CAB President Snehasish Ganguly

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পাঠানো ইমেলে কেয়া রায় নিয়ে ব্যাখ্যা। সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না বঙ্গ ক্রিকেটের। এ বার প্রশ্ন উঠেছে সিএবি-র বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) এবং বিশেষ সাধারণ সভায় (এসজিএম) প্রাক্তন মহিলা ক্রিকেটার কেয়া রায়ের উপস্থিতি নিয়ে। অভিযোগ, ‘যোগ্যতা’ না থাকা সত্ত্বেও কেয়াকে তাদের এজিএম এবং এসজিএম-এ থাকার অনুমতি দিয়েছে রাজ্যের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। প্রশ্ন উঠেছে, শুধুমাত্র প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে কী করে কেয়া ওই বৈঠকে থাকতে পারেন? যেখানে নিয়ম হল, বাংলার হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা প্রাক্তন ক্রিকেটারেরাই এজিএম এবং এসজিএমে থাকতে পারবেন।

২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সিএবি-র বার্ষিক সাধারণ সভা এবং চলতি বছরের ২ মার্চ যে বিশেষ সাধারণ সভা হয়েছিল, তার দু’টিতেই উপস্থিত ছিলেন কেয়া। এজিএমে মোট ২৫ জন এবং এসজিএমে মোট ১০ জন প্রাক্তন ক্রিকেটার ছিলেন। কেয়া ছাড়া আর কারও যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে না। বলা হচ্ছে, কেয়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারই নন।

কেয়াকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠার কারণ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের একটি ইমেল। ২০২৪ সালের ১৬ মার্চ সিএবি-কে ইমেলটি করেছিলেন বোর্ডের জেনারেল ম্যানেজার (ক্রিকেট অপারেশন্‌স) অ্যাবে কুরুভিল্লা, যিনি ভারতের হয়ে ৩৫টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। বোর্ডের তরফে সেখানে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, কেয়া শুধু প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা ক্রিকেটার, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার নন। সেই ইমেলে এ রাজ্যের ১৩ জন মহিলা ক্রিকেটারের নাম রয়েছে। প্রিয়ঙ্কা রায়, শ্যামা শ, রুনা বসু, গার্গী বন্দ্যোপাধ্যায়, মিঠু মুখোপাধ্যায়, লোপামুদ্রা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিয়াস সরকার, শর্মিলা চক্রবর্তী, পূর্ণিমা চৌধুরী, ঝুলন গোস্বামী, রুমেলি ধর এবং সন্ধ্যা মজুমদার— এই ১২ জনের নামের পাশে তাঁরা কতগুলি টেস্ট, এক দিনের ম্যাচ এবং টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক খেলেছেন, সেই সংখ্যাও লেখা রয়েছে। শুধু কেয়ার নামের পাশে লেখা ‘০, ০, ০’। অর্থাৎ, তিনি কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেননি।

প্রসঙ্গত, বোর্ডের কাছে সিএবি-ই প্রাক্তন মহিলা ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার ব্যাপারে তথ্য চেয়েছিল। কারণ, কুরুভিল্লার ইমেলে লেখা আছে, ‘বিসিসিআইয়ের কাছে যে তথ্য রয়েছে, আপনার অনুরোধ অনুযায়ী তা পাঠানো হল।’ কেয়ার ব্যাপারে ওই ইমেলে আলাদা করে তিন লাইনের ব্যাখ্যাও রয়েছে। লেখা হয়েছে, ‘১৯৭৬ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি নিউ জি়ল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের মহিলা দলের হয়ে কেয়া রায় তিনটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন। এই ম্যাচগুলি প্রথম শ্রেণির অন্তর্গত। ভারত প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলেছিল ১৯৭৬ সালের ৩১ অক্টোবর।’ অর্থাৎ, বোর্ডের ইমেল থেকে স্পষ্ট যে, কেয়া যে ম্যাচগুলি খেলেছিলেন, সেগুলি ভারত তাদের ইতিহাসে প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলারও আগে হয়েছিল।

এই ইমেলের ভিত্তিতেই অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, যেখানে ভারতীয় বোর্ডই বলে দিচ্ছে কেয়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার নন, সেখানে কী করে তাঁকে ওই ‘কোটায়’ সিএবি তাদের সভায় থাকার অনুমতি দিল?

সিএবি-র সংবিধানে ৭ (এ) (৬) রুল্‌স-এ বলা আছে, পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের (পুরুষ ও মহিলা) ভোটাধিকার আছে। ১৪ (জি) রুল্‌স-এ বলা আছে, এঁরাই সিএবি-র জেনারেল ব়়ডি মিটিংগুলিতে থাকতে পারবেন এবং সিএবি-র নির্বাচনে যে কোনও পদে লড়তে পারবেন।

সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় এই বিষয়ে ২০১৯ সালে বোর্ডেরই পাঠানো আর একটি ইমেলের কথা বলছেন। সেই ইমেল এসেছিল বোর্ডের তৎকালীন সিইও রাহুল জহুরির কাছ থেকে। আনন্দবাজার ডট কমকে স্নেহাশিস বলেন, ‘‘২০১৯ সালে রাহুল জহুরি সিএবি-কে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের যে তালিকা পাঠিয়েছিলেন, সেখানে কেয়ার নাম রয়েছে। তার ভিত্তিতেই ওঁকে এজিএম, এসজিএম-এ থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।’’ তা হলে গত বছর বোর্ড বাংলার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের যে তালিকা সিএবি-কে পাঠিয়েছিল, তার অর্থ কী? স্নেহাশিসের জবাব, ‘‘তার মানে তো বোর্ডই এ ব্যাপারে সন্দিহান। আমরা দ্বিতীয় ইমেল নিয়ে বোর্ডের কাছে যাব। বোর্ডের ব্যাখ্যা চাইব।’’

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কেয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে সূত্রের খবর, কেয়াকে নিয়ে কিছু দিনের মধ্যেই সিএবি-তে অভিযোগও জমা পড়বে।

Snehasish Ganguly
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy