ভারতীয় দলের ক্রিকেটার, বিশেষ করে জোরে বোলারদের জন্য এক নতুন ফিটনেস টেস্ট চালু করতে চলেছেন গৌতম গম্ভীর। রাগবির ধাঁচে ‘ব্রঙ্কো’ পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গম্ভীরের এই ফতোয়ায় খুশি নন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তাঁর মতে, যা চলছে তা হঠাৎ করে বদলে দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। ক্রিকেটারেরা চোট পেতে পারেন বলেও সতর্ক করেছেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার। গম্ভীরের নাম করেননি অশ্বিন। তবে তাঁর নিশানায় যে ভারতের প্রধান কোচ তা স্পষ্ট।
দলের নতুন স্ট্রেংথ ও কন্ডিশনিং কোচ আদ্রিয়ান লে রুর মস্তিষ্ক থেকে এই ভাবনা বেরিয়েছে। সোহম দেশাইয়ের বদলে তিনি ভারতীয় দলের স্ট্রেংথ ও কন্ডিশনিং কোচ হয়েছেন। নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘অ্যাশ কি বাত’-এ অশ্বিন এই নতুন ফিটনেস পরীক্ষা নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, “ট্রেনার পরিবর্তন হলে ট্রেনিংয়ের পদ্ধতিও বদলায়। যখন সেটা হয় তখন ক্রিকেটারদের সমস্যায় পড়তে হয়। কারণ, দীর্ঘ দিন ধরে একটা নির্দিষ্ট ট্রেনিং পদ্ধতিতে আপনি থাকেন। হঠাৎ তাতে বদল করা মুশকিল। এতে চোট পাওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।”
অশ্বিন জানিয়েছেন, তাঁকে নিজেও এই সমস্যার সামনে পড়তে হয়েছে। কিন্তু সোহম দীর্ঘ দিন ভারতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত থাকায় ধীরে ধীরে একটা পদ্ধতির মধ্যে ঢুকতে পেরেছিলেন তিনি। অশ্বিন বলেন, “২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আমাকেও সমস্যায় পড়তে হয়েছে। কী ভাবে ট্রেনিং করব বুঝতে পারছিলাম না। সোহম সবটাই জানে। ধীরে ধীরে একটা পদ্ধতিতে ঢুকেছিলাম।”
অশ্বিনের মতে, ক্রিকেটারদের কাছ থেকে যখন ধারাবাহিকতা চাওয়া হয়, তা হলে ট্রেনিংয়ের পদ্ধতিতে কেন ধারাবাহিকতা থাকবে না। তিনি বলেন, “আমি কয়েকটা প্রশ্ন করতে চাই। ক্রিকেটারদের কাছে ধারাবাহিকতা চাওয়া হয়। সেই ধারাবাহিকতা তো ট্রেনিংয়েও দরকার। সেটা কেন হচ্ছে না? যখন নতুন ট্রেনার আসেন, তিনি আগের নিয়ম বদলে দেন। সেটা ঠিক নয়। যখন একটা ট্রেনিং পদ্ধতিতে সাফল্য আসছে তখন তা বদলানোর কী দরকার। তাতে কিছু পরিবর্তন করা যেতে পারে। কিন্তু পুরোটা বদলে ফেলার কোনও মানে নেই।”
আরও পড়ুন:
দলের নতুন স্ট্রেংথ ও কন্ডিশনিং কোচ আদ্রিয়ান চান, জোরে বোলারেরা জিমে সময় কাটানোর চেয়ে মাঠে গিয়ে বেশি দৌড়োদৌড়ি করুন। কোচ গৌতম গম্ভীরেরও একই মত। তাই যৌথ ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু ক্রিকেটার নাকি বেঙ্গালুরুতে বোর্ডের উৎকর্ষ কেন্দ্রে গিয়ে এই পরীক্ষা দিয়ে এসেছেন। ইয়ো-ইয়ো পরীক্ষা এবং দু’কিলোমিটার ট্রায়াল রানের মতো পরীক্ষা ইতিমধ্যেই রয়েছে। তার সঙ্গে আরও একটা পরীক্ষা যোগ করা হচ্ছে।
‘ব্রঙ্কো’ পরীক্ষায় প্রথমে ২০ মিটার দৌড়ে আবার স্টার্টিং পয়েন্টে ফিরে আসতে হয়। এর পর ৪০ মিটার দৌড়ে ফিরতে হয়। তার পর ৬০ মিটার দৌড়ে ফিরতে হয়। এই পুরো প্রক্রিয়া হল একটা সেট। এ ভাবে এক বারে পাঁচটা সেট করতে হয়। পাঁচটা সেট সম্পূর্ণ করতে একজন ক্রীড়াবিদকে ১,২০০ মিটার দৌড়তে হয়। ভারতীয় ক্রিকেটারদের বলা হয়েছে পাঁচ মিনিটের মধ্যে পাঁচটা টেস্ট সম্পূর্ণ করতে। রাগবির ধাঁচে এই ফিটনেস টেস্ট নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অশ্বিন।