এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে হ্যান্ডশেক বিতর্ক বেড়েই চলেছে। ভারতীয় ক্রিকেটারদের হাত না মেলানো নিয়ে ক্ষুব্ধ পাকিস্তানের দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার শোয়েব আখতার ও রশিদ লতিফ। তাঁরা নিশানা করেছেন সূর্যকুমার যাদবদের। এই বিতর্কে তাঁরা পাশে পেয়েছেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার সৈয়দ কিরমানিকে।
টসের পর পাকিস্তানের অধিনায়ক সলমন আলি আঘার সঙ্গে হাত মেলাননি ভারতের অধিনায়ক সূর্য। ম্যাচ শেষেও পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলাননি সূর্যেরা। সাজঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন তাঁরা। প্রতিবাদে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যাননি সলমন। সেই বিতর্কে এ বার ঢুকে পড়েছেন প্রাক্তন ক্রিকেটারেরাও।
আখতারের মতে, ভারত যা করেছে তাতে তিনি স্তম্ভিত। পাকিস্তানের একটি ইউটিউব চ্যানেলে তিনি বলেন, “আমি স্তম্ভিত। আমি হতাশ। কী বলব বুঝতে পারছি না। ভারত ভাল খেলেছে। ওদের কুর্নিশ জানাচ্ছি। কিন্তু খেলায় রাজনীতি ঢোকানো ঠিক নয়। এটা ক্রিকেট ম্যাচ। লড়াই হতেই পারে। কিন্তু হাত না মিলিয়ে সেই বিতর্ক আরও বাড়িয়ে তোলা ঠিক নয়।”
তিনি যদি ভারতীয় ক্রিকেটার হতেন তা হলে হাত মেলাতেন বলেই দাবি করেছেন আখতার। পাশাপাশি সলমনের সিদ্ধান্তেরও প্রশংসা করেছেন তিনি। আখতার বলেন, “আমি থাকলে হাত মেলাতাম। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে না গিয়ে সলমন ঠিকই করেছে।”
আরও এক ধাপ উঠে ভারতকে নিশানা করেছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক লতিফ। তাঁর প্রশ্ন, ভারত কেন যুদ্ধ ছেড়ে খেলতে এল? ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লতিফ বলেন, “যুদ্ধ ও পহেলগাঁও হামলা নিয়ে ভারতের প্রতিবাদ ন্যায্য। কিন্তু খেলতে নামলে তো ভাল করে খেলতে হবে। পাকিস্তান যদি পহেলগাঁও হামলায় থাকে তা হলে দোষীদের ধরো। যদি যুদ্ধ করার থাকত সেটাই ওরা ভাল ভাবে করতো। কেন মাঝপথে ভারত সরে দাঁড়াল? যুদ্ধ ছেড়ে ওরা কেন খেলতে এল?”
আরও পড়ুন:
লতিফের মতে, আগেও ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়েছে। কিন্তু মাঠে কোনও দিন এই ছবি দেখা যায়নি। তিনি বলেন, “নিজেদের ভুল ঢাকতে ওরা রাজনীতির আশ্রয় নিচ্ছে। যা হয়েছে সেটা ভাল হয়নি। আগেও তো যুদ্ধ হয়েছে। কিন্তু আমরা মাঠে হাত মিলিয়েছি। সুনীল গাওস্করের সঙ্গে জাভেদ মিয়াঁদাদের কম লড়াই হয়নি। ওরা কি কোনও দিন হাত না মিলিয়ে মাঠ ছেড়েছে। আমরা নিজেদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করি। সেটা সকলের মাথায় রাখা উচিত।”
একই সুর শোনা গিয়েছে ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার কিরমানির গলাতেও। ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’-কে ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপজীয় ক্রিকেটার বলেন, “রাজনীতি গোটা বিশ্ব জুড়ে চলছে। রাজনীতি সব সময় থাকবে। কিন্তু খেলা সম্প্রীতি ও একতা আনে। আমার মতে রাজনীতি ও খেলাকে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়। দুটো আলাদা বিষয়।”
দু’দেশের প্রাক্তনেরা যতই সমালোচনা করুন, নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে ভারতীয় দল। পাকিস্তানকে হারিয়ে ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এই জয় তাঁরা পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় নিহত ও তাঁদের পরিবারকে উৎসর্গ করেছেন। পাশাপাশি ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রশংসা করেছেন তিনি। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ও কেন্দ্রীয় সরকারের পাশেই তাঁরা রয়েছেন বলে জানিয়েছেন সূর্য। একই কথা শোনা গিয়েছে ভারতের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরের মুখেও।