উইয়ান মুল্ডার ঠিক করেছেন না ভুল, তা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত ক্রিকেটবিশ্ব। কারও মতে, ব্রায়ান লারাকে সম্মান জানিয়ে ক্রিকেটীয় মানসিকতা দেখিয়েছেন মুল্ডার। আবার কারও মতে, তাঁর উচিত ছিল রেকর্ড গড়া। দ্বিতীয় সারিতে পড়েন ক্রিস গেইল। তাঁর মতে, বোকার মতো কাজ করেছেন মুল্ডার। তাঁকে তুলোধনা করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের প্রাক্তন ক্রিকেটার।
জ়িম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিন মধ্যাহ্নভোজের বিরতির সময় ৩৬৭ রানে ব্যাট করছিলেন মুল্ডার। সেই টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক তিনিই ছিলেন। সকলে ভেবেছিলেন, বিরতির পর নেমে টেস্টে বিশ্বরেকর্ড গড়বেন তিনি। কিন্তু লারার রেকর্ডের থেকে মাত্র ৩৩ রান দূরে থাকাকালীন ডিক্লেয়ার করে দেন তিনি। পরে জানান, ওই রেকর্ড লারার মতো কিংবদন্তির কাছেই থাকা উচিত। যদি আবার তিনি ওই পরিস্থিতিতে যান, তা হলে আবার একই কাজ করবেন।
মুল্ডারের এই কাজ পছন্দ হয়নি গেইলের। টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের হয়ে তাঁরও ত্রিশতরান (৩৩৩) রয়েছে। সেই গেইল বলেন, “সোজা কথা, ও ভয় পেয়ে বোকার মতো ভুল করেছে। আমি জানি না ও কেন আর খেলতে চাইনি। ও বিশ্বরেকর্ড করত কি না জানি না। কিন্তু ৩৬৭ রানে ডিক্লেয়ার করে ও জানিয়েছে, লারাকে সম্মান দেখাতে এই কাজ করেছে। শোনো, জীবনে টেস্টে ৪০০ রান করার সুযোগ এক বারই আসে। আর সেটা তুমি হেলায় হারালে।”
গেইলের মতে, রান করলে তবেই একজন ব্যাটারকে লোকে চেনে। রেকর্ড গড়লে তবেই কিংবদন্তি হওয়া যায়। এই সহজ কথা কী ভাবে ভুলে গেলেন মুল্ডার। গেইল বলেন, “তুমি ৩৬৭ রান করে খেলছিলে। তোমার কাছে এত বড় একটা সুযোগ ছিল রেকর্ড গড়ার। যদি তুমি কিংবদন্তি হতে চাও তা হলে তো রেকর্ড গড়তেই হবে। নইলে কী ভাবে তুমি কিংবদন্তি হবে?”
লারার মতো বড় নামের সামনে কি কিছুটা হলেও ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন মুল্ডার। অন্তত তেমনটাই মনে করেন গেইল। তিনি বলেন, “মুল্ডার কখন আবার ত্রিশতরান করতে পারবে, সেটা ও নিজেও বলতে পারবে না। তাই সুযোগ পেলে পুরোপুরি তার সদ্ব্যবহার করা উচিত। মুল্ডার বলেছে, লারার রেকর্ড অক্ষত রাখার জন্য এটা করেছে। আমার মনে হয় ও ভয় পেয়ে গিয়েছিল। কী করবে বুঝতে না পেরেই বোকার মতো এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
আরও পড়ুন:
অনেকে বলছেন, জ়িম্বাবোয়ের মতো দুর্বল দলের বিরুদ্ধে ৪০০-র বেশি রান করে লারার রেকর্ড ভাঙতে চাননি মুল্ডার। কারণ, লারা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪০০ করছিলেন। গেইলের মতে, প্রতিপক্ষ কে সেটা ভাবাই উচিত নয়। তিনি বলেন, “এই জ়িম্বাবোয়ের বিরুদ্ধেই হয়তো কোনও ম্যাচে মুল্ডার এক রানও করতে পারবে না। তাই প্রতিপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ নয়। যে দেশের বিরুদ্ধেই ১০০ রান করো না কেন, সেটা শতরান হিসাবেই ধরা হবে। কার বিরুদ্ধে করেছ, কেউ দেখবে না। সেখানে এত বড় সুযোগ তুমি হাতছাড়া করলে।”
জ়িম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে এই টেস্ট সিরিজ় বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্গত নয়। তাই টেম্বা বাভুমা-সহ দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট বিশ্বকাপজয়ী দলের আট ক্রিকেটার খেলছেন না। সেই কারণেই মুল্ডারকে অধিনায়ক করা হয়েছে। অধিনায়ক হিসাবে প্রথম ইনিংসেই বিশ্বরেকর্ডের সুযোগ ছিল তাঁর। সেই সুযোগ তিনি না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ গেইল। মুল্ডারের সিদ্ধান্ত মানতে পারছেন না তিনি।