Advertisement
E-Paper

এখন কোহলি-রোহিত-অশ্বিনের জন্য হাত কামড়াচ্ছেন গম্ভীর! প্রশ্ন, হঠাৎ সরতে হল কেন ত্রয়ীকে? আর একটু সময় চাইছেন ভারতের কোচ

অস্ট্রেলিয়া সফরের মাঝেই অবসর নিয়েছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। চলতি বছর ইংল্যান্ড সিরিজ় শুরুর আগে সরে গিয়েছিলেন রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি। এখন এই তিন ক্রিকেটারের জন্য হাত কামড়াচ্ছেন গৌতম গম্ভীর। দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে চুনকাম হওয়ার পর স্বীকার করেছেন ভারতের কোচ।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:২০
cricket

(বাঁ দিক থেকে) বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং গৌতম গম্ভীর। — ফাইল চিত্র।

গত অস্ট্রেলিয়া সফরের মাঝপথে অবসর নিয়েছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। এ বছর ইংল্যান্ড সিরিজ় শুরুর আগে সাত দিনের ব্যবধানে সরে গিয়েছিলেন রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি। বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে চুনকাম হওয়ার পর এখন এই তিন ক্রিকেটারের জন্যই হাত কামড়াচ্ছেন গৌতম গম্ভীর। ভারতীয় কোচের মতে, এই তিন জনের শূন্যস্থান ভরাট করার জন্য আরও একটু সময় দিতে হবে তাঁর দলকে। তবে প্রশ্ন উঠছে, এত তাড়াতাড়ি তিন তারকা ক্রিকেটারের চলে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করার কি খুব দরকার ছিল? গম্ভীর নিজেও কি এর জন্য দায়ী নন?

রোহিত, কোহলি এবং অশ্বিন দীর্ঘ দিন ভারতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। দেশের মাটিতে একের পর এক সাফল্য দিয়েছেন দলকে। এই তিন জনের অভাব যে পূরণ করা যায়নি তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের পর। এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে গম্ভীর বলেন, “এই হারের দায় সকলের। তবে শুরুটা আমাকে দিয়েই হবে। আসলে এটাই হল রূপান্তরের (ট্রানজ়িশন) শুরু। আপনাকে সময় দিতেই হবে।”

উদাহরণ হিসাবে গম্ভীর তুলে ধরেছেন ওয়াশিংটন সুন্দরের কথা। তিনি বলেছেন, “আমরা ওয়াশিংটনকে যতটা বেশি সম্ভব সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছি। আপনি যদি ভাবেন ১০০-র বেশি টেস্ট খেলা অশ্বিনের মতো খেলে দেবে ওয়াশিংটন, তা হলে তরুণ ছেলেটার উপরে অবিচার করা হবে। এটা নিয়ে আপনাদেরও ভাবা উচিত। সবে ১০-১২-১৫টা টেস্ট খেলেছে ওরা। এখনও শেখার অনেক জায়গা রয়েছে। বিভিন্ন পরিস্থিতি, বিভিন্ন পরিবেশে বল করা শিখছে।”

এর পরেই গম্ভীর বলেছেন, “এত বেশি অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে একসঙ্গে হারালে সেটার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন। এই জন্যই এটাকে রূপান্তর বলছি। এই ক্রিকেটারদের সময় দেওয়া দরকার। আমার মনে হয় না আগে কখনও একই সঙ্গে ব্যাটিং এবং বোলিং দুই বিভাগেই রূপান্তর হয়েছে বলে। আগে ব্যাটিং বিভাগ ভাল থাকত। বোলিং বিভাগে রূপান্তর হত। অথবা উল্টোটা। এই দলে পুরোটাই নতুন করে তৈরি হচ্ছে। সকলের এটা বোঝা উচিত, এই দলে যারা বসে আছে তাদের সেই যোগ্যতা এবং দক্ষতা রয়েছে। আমরা সকলেই টেস্ট ক্রিকেটে ধারাবাহিকতা দেখতে চাই। সেটার জন্য অভিজ্ঞতা দরকার। এর পর যখন ওরা কঠিন পরিবেশে গিয়ে খেলবে, ঠিক কাজের কাজ করে দেবে।”

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় টেস্টের পঞ্চম দিনের স্কোরকার্ড।

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় টেস্টের পঞ্চম দিনের স্কোরকার্ড।

উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে বড্ড বেশি ওয়াশিংটনকে প্রাধান্য দিচ্ছিলেন গম্ভীর। রিজ়ার্ভ বেঞ্চে কাটাতে হচ্ছিল অশ্বিনের মতো ১০০-র বেশি টেস্ট খেলা ক্রিকেটারকে। যদি ক্রিকেটারদের অভিজ্ঞতাকেই প্রাধান্য দেবেন গম্ভীর, তা হলে কেন অশ্বিনকে পরের পর ম্যাচে বসিয়ে রাখা হচ্ছিল? তিনি জানতেন অস্ট্রেলিয়ায় স্পিনার হিসাবে সাফল্য পাওয়ার ক্ষমতা অশ্বিনেরই রয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ফাইনালে ওঠার জন্য সেটা গুরুত্বপূর্ণ সিরি‌জ়ও ছিল। তা সত্ত্বেও কেন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সুন্দরকে তখন বেছে নেওয়া হল? তাঁকে কি ঘরের মাঠে কোনও সিরিজ়‌ের জন্য তুলে রাখা যেত না? বা আরও একটু বেশি ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার অনুরোধ করা যেত না?

একই কথা বলা যায় রোহিত, কোহলির ক্ষেত্রেও। এই দুই ব্যাটারের শূন্যস্থান যে রাতারাতি ভরাট করা সম্ভব নয়, তা গম্ভীর বুধবারই বুঝতে পারলেন? বিশেষজ্ঞ ক্রিকেটারেরা অনেক আগে থেকেই রোহিত, কোহলির উপর ভরসা রাখার কথা বলে আসছিলেন। বার বার সাবধান করা হচ্ছিল যে, এই দুই ক্রিকেটারের অভাব পূরণ করা যাবে না। অথচ গম্ভীর ভরসা রেখেছিলেন সাই সুদর্শন, করুণ নায়ার, নীতীশ রেড্ডিদের উপরে। ভেবেছিলেন, তাঁরা আসল মঞ্চে বাজিমাত করে দেবেন। ইংল্যান্ডে তবু সিরিজ় ড্র রাখা গেলেও ভারতে সেই পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়েছে। নায়ার শুরুতেই বাদ পড়েছেন। গম্ভীরের ‘ইয়েস ম্যান’ হওয়ার সুবাদে নীতীশ একের পর এক সিরিজ়‌ে সুযোগ পেলেও টেস্ট দলে তাঁর ভূমিকাটা ঠিক কী, সেটাই বোঝা যাচ্ছে না।

এখন ঠিক সেই অভাবটাই টের পাওয়া যাচ্ছে। অথচ ইংল্যান্ড সিরিজ়‌ের আগে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হল যে রোহিত, কোহলি সরে যেতে বাধ্য হলেন। ধুয়ো তুলে দেওয়া হল যে, ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল না খেললে রোহিত, কোহলির ঠাঁই হবে না ইংল্যান্ডে। দেওয়াল লিখন পড়তে পেরেছিলেন দুই ক্রিকেটারই। সম্মান বাঁচাতে নিজেরাই সরে গেলেন। তাতে সবচেয়ে বেশি কে খুশি হয়েছিলেন তা এখন আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

তবে গম্ভীর সম্ভবত বুঝতে পারেননি যে অভিজ্ঞতার কোনও বিকল্প হয় না। তিনি ভেবেছিলেন, তাঁর সুরে সুর মেলানো ক্রিকেটারেরা মান রাখবেন। সেটা একেবারেই হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে এখন হাত কামড়াতে হচ্ছে ভারতের কোচকে।

India vs South Africa 2025 Gautam Gambhir Virat Kohli Rohit Sharma Ravichandran Ashwin
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy