তাঁর দল জিততে না পারলেও নজর কেড়েছেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। আইপিএলের এই মরসুমে সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়ে বেগনি টুপি জিতেছেন তিনি। ১৫ ম্যাচে ২৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। এর আগে কেকেআরে চার বছর খেলেছেন তিনি। কিন্তু কোনও বারই বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। সেই সুযোগ তাঁকে দিয়েছে গুজরাত। তা কাজে লাগিয়েছেন প্রসিদ্ধ।
দীর্ঘদেহী এই পেসারের আইপিএল শুরু কলকাতার দলে খেলে। ২০১৮ সালে তাঁকে কিনেছিল কেকেআর। প্রথম বছর সাতটা ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। নিয়েছিলেন ১০ উইকেট। পরের তিন বছরও কেকেআরেই ছিলেন প্রসিদ্ধ। কিন্তু কোনও মরসুমে সব ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি তাঁর। কেকেআরের হয়ে চার বছরে মোট ৩৪ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। নিয়েছেন ৩০ উইকেট।
২০২২ সালের নিলামের আগে প্রসিদ্ধকে ছেড়ে দেয় কলকাতা। তাঁকে কেনে রাজস্থান রয়্যালস। সে বার রাজস্থানের হয়ে সব ক’টা ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। নিয়েছিলেন ১৯ উইকেট। কিন্তু পরের দু’বার চোট ভুগিয়েছে তাঁকে। খেলতে পারেননি প্রসিদ্ধ। এ বারের নিলামে তাঁকে কেনে গুজরাত। দলকে হতাশ করেননি তিনি। নিয়েছেন ২৫ উইকেট। হয়েছেন বেগনি টুপির মালিক।
কর্নাটকের ছেলে প্রসিদ্ধ প্রথম বার নজর কাড়েন ২০১৫ সালে বাংলাদেশ এ দলের বিরুদ্ধে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচে ৫ উইকেট নেন তিনি। তার পরের বছর কর্নাটকের হয়ে লিস্ট এ ক্রিকেটে বিজয় হজারে ট্রফিতে অভিষেক হয় তাঁর। পরের বছর সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিও খেলেন তিনি। ২০১৮-১৯ বিজয় হজারে ট্রফিতে কর্নাটকের হয়ে সবচেয়ে বেশি (সাত ম্যাচে ১৩ উইকেট) উইকেট নিয়েছিলেন প্রসিদ্ধ। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল খেলায় ২০১৮ সালে প্রথম বার আইপিএল খেলার সুযোগ পান ৬ ফুট ৩ ইঞ্চির ডানহাতি পেসার।
ভারতের হয়ে তিন ফরম্যাটেই খেলেছেন প্রসিদ্ধ। তবে কোনও ফরম্যাটেই এখনও দীর্ঘ কেরিয়ার হয়নি তাঁর। তিনটে টেস্টে ৮, ১৭ এক দিনেক ম্যাচে ২৯ ও পাঁচটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়েছেন। তাঁকে সমস্যায় ফেলেছে চোট। দীর্ঘ দিন মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে। তাতে অবশ্য লড়াই ছাড়েন প্রসিদ্ধ। আবার লড়াই করে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
প্রসিদ্ধের সবচেয়ে বড় শক্তি তাঁর লেংথ। ক্রমাগত টেস্টের লেংথে বল করে যেতে পারেন। এ বারের আইপিএল নতুন বলে তিনি বেশি সুযোগ পাননি। বেশির ভাগ ম্যাচেই মাঝের ও ডেথ ওভারে বল করতে হয়েছে তাঁকে। মাঝের ওভারে তিনি নিয়মিত উইকেট নিয়েছেন। বাকিরা মার খেলেও প্রসিদ্ধের নিয়ন্ত্রিত বোলিং ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলেছে। গুজরাতের প্লে-অফে ওঠার নেপথ্যে বড় ভূমিকা রয়েছে তাঁর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হওয়া হয়নি।
তবে এই পারফরম্যান্স প্রসিদ্ধের জায়গা করে দিয়েছে ভারতের ইংল্যান্ড সফরের দলে। গত বছর অস্ট্রেলিয়া সফরেও গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বেশি সুযোগ পাননি। এ বার ইংল্যান্ডে মহম্মদ শামি নেই। তাই জসপ্রীত বুমরাহের পাশাপাশি প্রসিদ্ধের কাঁধে বড় দায়িত্ব থাকবে। ইংল্যান্ডের পরিবেশে তাঁর গতি ও বাউন্স কাজে লাগবে। আইপিএলের পারফরম্যান্স আত্মবিশ্বাস বাড়াবে প্রসিদ্ধের। জাতীয় দলে নিজের জায়গা পাকা করতে নামবেন প্রসিদ্ধ।
আইপিএলের বেগনি টুপির প্রথম পাঁচে প্রসিদ্ধ ছাড়া বাকি চার বোলার চেন্নাই সুপার কিংসের নুর আহমেদ, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর জশ হেজ়লউড, মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ট্রেন্ট বোল্ট ও পঞ্জাব কিংসের অর্শদীপ সিংহ। চেন্নাই ভাল খেলতে না পারলেও নুর ভাল বল করেছেন। প্রথম দিকে শীর্ষে ছিলেন তিনি। একেবারের শেষে দ্বিতীয় স্থানে নেমে যান। ১৪ ম্যাচে ২৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ১২ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়েছেন হেজ়লউড। বোল্ট ১৬ ম্যাচে নিয়েছেন ২২ উইকেট। ১৭ ম্যাচে ২১ উইকেট গিয়েছে অর্শদীপের ঝুলিতে।