অর্ধশতরান করে ভারতের মুখরক্ষা করলেন লোকেশ রাহুল। ছবি: পিটিআই
বৃষ্টির জেরে প্রথম দিন মাত্র ৫৯ ওভার খেলা হল। তার মাঝেই ৮ উইকেট পড়ে গেল ভারতের। লোকেশ রাহুল ছাড়া ভারতের কোনও ব্যাটার বড় রান করতে পারলেন না। হল না কোনও বড় জুটি। তার ফলে সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনই চাপে ভারত। খেলা শেষ হওয়ার সময় ভারতের রান ৮ উইকেটে ২০৮। এই ৮ উইকেটের মধ্যে ৫টি উইকেটই নিয়েছেন কাগিসো রাবাডা। রাহুল না থাকলে আরও লজ্জায় পড়ত ভারত।
টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও যশস্বী জয়সওয়াল শুরু থেকে সমস্যায় পড়ছিলেন। কাগিসো রাবাডা ও মার্কো জানসেনের বল সুইং করছিল। খেলা শুরু হওয়ার আগে বৃষ্টি হওয়ায় পিচ থেকে অতিরিক্ত সুবিধা পাচ্ছিলেন তাঁরা। রাবাডার বলে পুল মারার লোভ সামলাতে না পেরে ৫ রানের মাথায় আউট হন রোহিত।
যশস্বী কয়েকটি ভাল শট খেললেও খুব বেশি সাবলীল দেখাচ্ছিল না তাঁকে। বিশেষ করে বাঁ হাতি নান্দ্রে বার্গারের সামনে সমস্যায় পড়ছিলেন তিনি। বল কোন দিকে সুইং করবে বুঝতে পারছিলেন না। ১৭ রানের মাথায় বার্গারের বলে খোঁচা মেরে আউট হন যশস্বী। প্রস্তুতি ম্যাচে শতরান করা শুভমন গিলও বেশি ক্ষণ থাকেননি। লেগ স্টাম্পের বাইরে যাওয়া বার্গারের বল গ্লাভসে লাগিয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ২ রান করেন শুভমন। অভিষেকেই নজর কাড়েন বার্গার।
মাত্র ২৪ রানে ৩ উইকেট পড়ে যায় ভারতের। সেখান থেকে খেলা ধরেন বিরাট ও শ্রেয়স। ইনিংসের শুরুতেই অবশ্য দু’জনেরই ক্যাচ পড়ে। তার ফায়দা তোলেন ভারতীয় জুটি। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারেরা সুইংয়ের আশায় অনেক বেশি লেগ স্টাম্প ও পা লক্ষ্য করে বল করছিলেন। সেটা কাজে লাগান দু’জনে। কয়েকটি চার মারায় চাপ খানিকটা কমে। অহেতুক ঝুঁকি নিচ্ছিলেন না বিরাট ও শ্রেয়স। তবে মারার বল মারছিলেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে ২৬ ওভারে ৩ উইকেটে ৯১ রান করে ভারত।
বিরতির পরেই চমক রাবাডার। প্রথমে শ্রেয়স ও তার পরে বিরাটকে আউট করে ভারতকে বড় ধাক্কা দেন তিনি। শ্রেয়স করেন ৩১ রান। বিরাটের ব্যাট থেকে আসে ৩৮ রান। ৮ রান করে ফেরেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনও।
৬ উইকেট পড়ার পরে ভারতের ইনিংসকে সামলানোর দায়িত্ব পড়ে রাহুল ও শার্দূল ঠাকুরের উপর। রাহুল সাবলীল ব্যাট করছিলেন। মারার বল মারছিলেন। ছাড়ার বল ছাড়ছিলেন। শার্দূলও ইতিবাচক ব্যাট করছিলেন। বেশ কয়েকটি চার মেরে রাহুলের উপর থেকে চাপ কমান তিনি। তার মাঝেই এক বার হেলমেটে ও এক বার হাতে বল লাগে তাঁর। ফলে মনোযোগ কিছুটা নষ্ট হয়। তারই খেসারত দিতে হয় তাঁকে। ২৪ রান করে রাবাডার পঞ্চম শিকার হন তিনি।
চা বিরতির পরে যশপ্রীত বুমরাকে নিয়ে রান করার চেষ্টা করেন রাহুল। হাতে উইকেট কম থাকায় একটু আক্রমণাত্মক খেলতে দেখা যায় তাঁকে। বার্গারকে পর পর দু’বলে চার ও ছক্কা মেরে নিজের অর্ধশতরান করেন তিনি। বুমরাও আউট হয়ে যান। রাহুল জানতেন যা রান করার তাঁকেই করতে হবে। ওভারের প্রায় সব ক’টি বল খেলার চেষ্টা করছিলেন তিনি। মহম্মদ সিরাজকে যতটা সম্ভব ঢাকার চেষ্টা করছিলেন।
৫৯ ওভারের পরে বৃষ্টি নামে। আকাশ কালো হয়ে যায়। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে বৃষ্টি থামলেও খেলা শুরু করা যেত না। সেই কারণে আম্পায়ারেরা সিদ্ধান্ত নেন যে প্রথম দিন আর খেলা হবে না। দিনের শেষ ৭০ রানে অপরাজিত রয়েছেন রাহুল। এখন দেখার দ্বিতীয় দিন ভারতের রান আর কতটা বাড়াতে পারেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy