আবার এক মনে রাখার মতো ইনিংস খেললেন হনুমা বিহারি। শুধু মাত্র মনের জোরে ব্যাট করলেন তিনি। ফাইল চিত্র
সিডনিতে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট নিয়ে প্রায় একটা গোটা দিন খেলেছিলেন তিনি। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সঙ্গে তাঁর জুটি হার বাঁচিয়েছিল ভারতের। আরও এক বার মনের জোর দেখালেন হনুমা বিহারি। এ বার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নয়। রঞ্জি ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালে। কব্জিতে চিড় ধরার পরেও ব্যাট করলেন তিনি। তবে ডান হাতে নয়, বাঁ হাতে।
রঞ্জির প্রথম দিনই মধ্যপ্রদেশের পেসার আবেশ খানের বাউন্সার বাঁ হাতের কব্জিতে লাগে হনুমার। যন্ত্রণায় মাঠ ছাড়েন অন্ধ্রপ্রদেশের অধিনায়ক। হনুমাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে এক্স-রে করলে জানা যায়, কব্জির হাড়ে চিড় ধরেছে। চিকিৎসকেরা জানান, চোট সারাতে অন্তত ৬-৭ সপ্তাহ সময় লাগবে হনুমার। কিন্তু তার পরেও তাঁকে ব্যাট করা থেকে আটকানো যায়নি।
হনুমা হাসপাতাল থেকে মাঠে ফিরে আসেন। তখন ভাল খেলছিলেন দলের অন্য ব্যাটাররা। একটা সময়ে দলের রান ছিল ২ উইকেটে ৩২৩। শতরান করে খেলছিলেন রিকি ভুই ও কর্ণ শিন্ডে। কিন্তু তাঁরা আউট হওয়ার পরে ধস নামে ব্যাটিংয়ে। ৪ উইকেটে ৩২৮ রান থেকে ৩৫৩ রানে ৯ উইকেট পড়ে যায় দলের। ঠিক তখনই হনুমা সিদ্ধান্ত নেন, ব্যাট করতে নামবেন।
হনুমাকে মাঠে নামতে দেখে অবাক হয়ে যান মধ্যপ্রদেশের ক্রিকেটাররা। ললিথ মোহনকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাট করা শুরু করেন তিনি। তবে ডান হাতে নয়, বাঁ হাতে। কব্জিকে বাঁচানোর জন্য বাঁ হাতে ব্যাট করছিলেন হনুমা। ওই ভাবেই আবেশের ১৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় করা বল সামলেছেন। ওই অবস্থায় ললিথকে নিয়ে প্রায় ১৫ ওভার ব্যাট করেন হনুমা। তিনটি চারও মারেন তিনি। দশম উইকেটে ২৬ রান যোগ করেন হনুমা। শেষ পর্যন্ত ৫৭ বলে ২৭ রান করে আউট হন অন্ধ্রপ্রদেশের অধিনায়ক। তিনি যখন মাঠ ছাড়ছেন তখন প্রতিপক্ষ ক্রিকেটাররা এসে তাঁর সঙ্গে হাত মেলান।
ক্রিকেট মাঠে লড়াইয়ের অনেক ছবি দেখেছে বিশ্ব। চোয়ালভাঙা অনিল কুম্বলের লড়াই থেকে পিঠে আইসব্যাগ বেঁধে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ব্যাটিং— ক্রিকেট ইতিহাসে এক একটা লোকগাথা হয়ে আছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে না হলেও সেই তালিকায় ঢুকে পড়লেন হনুমা। শুধু মাত্র মনের জোরকে হাতিয়ার করে যে লড়াই তিনি লড়লেন, তা তো আর খুব একটা দেখা যায় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy