২০১৯ সালের এক দিনের বিশ্বকাপের সময় থেকে প্রেম শুরু জসপ্রীত বুমরাহ ও সঞ্জনা গণেশনের। কিন্তু বিয়ের জন্য সঞ্জনাকে প্রস্তাব দিতে পারছিলেন না বুমরাহ। তাঁকে সুবিধা করে দেয় কলকাতা নাইট রাইডার্স। আইপিএল থেকে কেকেআর তাড়াতাড়ি বিদায় নেওয়ার কারণেই তাঁরা সময়ে বিয়ে করতে পেরেছিলেন। নিজেই সে কথা জানিয়েছেন ভারতীয় পেসার।
ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার হরভজন সিংহ এবং তাঁর স্ত্রী গীতা বসরার ‘হুজ় দ্য বস’ অনুষ্ঠানে বুমরাহের সঙ্গে এসেছিলেন সঞ্জনা। সেখানেই দু’জনের প্রেম ও বিয়ের কথা ওঠে। ২০২০ সালে কোভিডের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে হয়েছিল আইপিএল। বুমরাহ ছিলেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে। সঞ্জনা সেই সময় কেকেআরের হয়ে একটা অনুষ্ঠান করতেন। প্রত্যেক দলকে হোটেলে একটা নির্দিষ্ট জৈব-বলয়ের মধ্যে থাকতে হত। মুম্বই ও কলকাতা একই হোটেলে ছিল। সে বার কেকেআর গ্রুপ থেকেই বিদায় নেয়। ফলে সঞ্জনা তখন কেকেআরের জৈব-বলয় থেকে মুম্বইয়ের জৈব-বলয়ে চলে যান। সেই কারণেই তাঁকে নিজের মনের কথা বলতে পেরেছিলেন বুমরাহ। সে বার আইপিএলও জিতেছিলেন তিনি।
বুমরাহ বলেন, “কোভিডের সময় প্রত্যেক দলের জন্য জৈব-বলয় ছিল। ও কেকেআরের সঙ্গে ছিল। আমি মুম্বইয়ের সঙ্গে। ভাগ্যক্রমে আমরা একই হোটেলে ছিলাম। কিন্তু দেখা হত না। শুধু মাঠে দেখা হত। কিন্তু ওরা তাড়াতাড়ি বিদায় নেওয়ায় ও মুম্বইয়ের জৈব-বলয়ে চলে আসে। তখনই পরিকল্পনা করেছিলাম ওকে বিয়ের প্রস্তাব দেব।” তা শুনে সঞ্জনা মজা করে বলেন, “কেকেআর বিদায় নেওয়ায় বোধ হয় একমাত্র আমিই খুশি হয়েছিলাম।”
কী ভাবে সঞ্জনাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন বুমরাহ? তিনি বলেন, “আমি সব ব্যবস্থা করেছিলাম। একটা কেক এনেছিলাম। সঙ্গে আংটি। কাউকে বলতে চাইনি। তাই নিজেই সব করেছিলাম। তার পর সঞ্জনা এলে ওকে প্রস্তাব দিই। ও তাতে রাজি হয়।” বুমরাহের মুখে এ কথা শুনে সঞ্জনার হাসি থামছিল না। পাঁচ বছরের পুরনো কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল তাঁর।
আরও পড়ুন:
সঞ্জনা জানিয়েছেন তাঁদের প্রথম সাক্ষাতের কথা। সেই সময় নাকি বুমরাহ তাঁকে পাত্তাই দেননি। সঞ্জনা বলেন, “২০১৯ বিশ্বকাপের সময় প্রথম বার জসপ্রীতের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। এক দিন ভারতীয় দলের অনুশীলনে গিয়েছিলাম। ডিকে (দীনেশ কার্তিক) এবং বাকি কয়েক জন আমাদের দিকে তাকিয়ে হাত নেড়েছিল। সেই দলে জসপ্রীতও ছিল। তবে কঠিন মুখ করে অনুশীলন করেছিল। যেন প্রতিজ্ঞা করেছিল, ‘আমি হাত তো নাড়বই না, ওর দিকে তাকাবও না।’”
সঞ্জনা ভেবেছিলেন, বুমরাহ ইচ্ছা করে তাঁকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। হয়তো তাঁর বান্ধবী বা স্ত্রী রয়েছে। সঞ্জনার কথায়, “ওর বান্ধবী বা স্ত্রী থাকতে পেরে ভেবে আমি আলাপ করিনি। এক বার মনে হয়েছিল আমিই হয়তো কোনও ভুল করেছি। এ রকমই ছিল জসপ্রীতের ব্যক্তিত্ব।” তবে পরিস্থিতি পাল্টে যায় ক’দিন পরেই। সঞ্জনা বলেছেন, “আমরা কথা বলা শুরু করার পর একে অপরকে বুঝতে শুরু করি। যা ভেবেছিলাম তার কিছুই ওর সঙ্গে মেলেনি।”
পাশ থেকে বুমরাহ হাসতে হাসতে বলেন, “ও একপেশে গল্প বলছে। ও ভেবেছিল আমি বিবাহিত। আসলে আমি বরাবরই খুব লাজুক। সচরাচর কাউকে ‘হাই’ বলে সম্বোধন করি না। লোকের সঙ্গে মিশতে আমার সময় লাগে।” বুমরাহ আরও বলেন, “সঞ্জনা বলছে আমি ‘হাই’ না বলায় ওর মনে হয়েছিল হয়তো আমি বিবাহিত। এটা কোনও যুক্তি হল?”
২০২১ সালের মার্চে সঞ্জনাকে বিয়ে করেন বুমরাহ। ২০২৩-এর সেপ্টেম্বরে জন্ম হয় পুত্র অঙ্গদের। পুত্রের জন্মের পর ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতেন বুমরাহ। বিশ্বকাপ জিতে মাঠে স্ত্রী ও পুত্রের সঙ্গে উল্লাস করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।