বেঙ্গালুরু-কাণ্ডে বিরাট কোহলিদের দলকে একহাত নিলেন গৌতম গম্ভীর। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (আরসিবি) নাম করেননি তিনি। কিন্তু তাঁর বক্তব্যে বুঝিয়ে দিয়েছেন, চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে আরসিবি-র আইপিএল জয়ের উল্লাসে পদপিষ্ট হয়ে ১১ জনের মৃত্যুর জন্য দায়ী তাদের অবিবেচনা ও পরিকল্পনার অভাব। গম্ভীরের মতে, আয়োজকদের অনেক বেশি সতর্ক থাকা উচিত ছিল। তিনি ব্যক্তিগত ভাবে কোনও দিন রোড শো পছন্দ করেন না বলেও জানিয়েছেন ভারতীয় দলের কোচ।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ টেস্টের সিরিজ় খেলতে উড়ে যাওয়ার আগে সাংবাদিক বৈঠক করেন গম্ভীর ও ভারতীয় দলের নতুন টেস্ট অধিনায়ক শুভমন গিল। সেখানেই গম্ভীরকে বেঙ্গালুরুর ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, “আমি নিজে কোনও দিন রোড শো পছন্দ করি না। প্লেয়ার থাকাকালীনও করতাম না। কোচ হিসাবেও করি না। আমার মতে ট্রফি জেতার থেকেও ১১টা প্রাণ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
গম্ভীরকে আরও প্রশ্ন করা হয়, বেঙ্গালুরুর ঘটনায় তিনি কাকে দায়ী মনে করেন? জবাবে ভারতের কোচ বলেন, “দেখুন, আমি কাউকে দায়ী করার কেউ নই। তবে যেটা হয়েছে তা ভাল হয়নি। ১১টা প্রাণ চলে গেল। আয়োজকদের আরও বেশি সতর্ক থাকা উচিত ছিল। আরও ভাল পরিকল্পনা করা উচিত ছিল। বেঙ্গালুরুতে যা হয়েছে আশা করছি ভবিষ্যতে আর হবে না।” বুধবার চিন্নাস্বামীর অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থা ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। সে দিক থেকে দেখতে গেলে আরসিবি-কে দায়ী করেছেন গম্ভীর।
ক্রিকেটার হিসাবে গম্ভীর নিজেও তো রোড শো’য়ে অংশ নিয়েছেন। ২০০৭ সালে ভারত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর রোড শো হয়েছিল। তবে তাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। গম্ভীরের অধিনায়কত্বে কলকাতা নাইট রাইডার্স ২০১২ সালে প্রথম বার আইপিএল জেতার পর কলকাতার রাজপথে রোড শো হয়েছিল। তবে সেখানে গম্ভীর-সহ কয়েক জন প্রথম সারির ক্রিকেটারকে বাদ রাখা হয়েছিল। অবশ্য গম্ভীর নিজের মতামত স্পষ্ট করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত ভাবে তিনি কোনও দিন রোড শো পছন্দ করেন না।
আরও পড়ুন:
মঙ্গলবার বেঙ্গালুরু প্রথম বার আইপিএল জেতার পর অহমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়েই কোহলি জানিয়েছিলেন, পরের দিন চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে উল্লাস হবে। পরের দিন সকাল থেকেই বেঙ্গালুরুর রাস্তায় ভিড় জমতে শুরু করে। বাধ্য হয়ে বিমানবন্দর থেকে কোহলিদের যে রোড শো হওয়ার কথা ছিল তা বাতিল করে পুলিশ। কিন্তু তার পরেও ভিড় কমেনি। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে কোহলিদের উল্লাস হবে শুনে তার বাইরে ভিড় জমতে শুরু করে। হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। তাতেই পদপিষ্ট হয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন ৩৩ জন।
এই ঘটনার দায় নেয়নি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। দায় নেননি আইপিএল কর্তৃপক্ষও। কর্নাটক সরকার জানায়, সময় কম থাকায় পরিকল্পনা ভাল ভাবে করা যায়নি। ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। তাই এই দুর্ঘটনা। ১১ জন মৃতের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছে কর্নাটক সরকার ও আরসিবি। ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছে কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থা।