নতুন চ্যালেঞ্জ শুভমন গিলের সামনে। রোহিত শর্মা অবসর নেওয়ার পর ভারতের নতুন টেস্ট অধিনায়ক হয়েছেন তিনি। শুরুতেই কঠিন চ্যালেঞ্জ। ২০ জুন থেকে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ টেস্টের সিরিজ় শুরু ভারতের। রোহিতের জুতোয় পা গলিয়ে কি সফল হতে পারবেন শুভমন? উত্তর দেবে সময়। তবে এখন থেকেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন শুভমনের সতীর্থ কুলদীপ যাদব। তাঁর মতে, শুভমন তৈরি।
ইংল্যান্ড সফরের দলে রয়েছেন কুলদীপ। তবে প্রথম একাদশে তিনি খেলবেন কি না তা এখনও নিশ্চিত নয়। হেডিংলেতে প্রথম টেস্টের আগে কুলদীপ জানিয়েছেন, শুভমন অধিনায়কত্বের জন্য তৈরি। তিনি বলেন, “শুভমন জানে কী ভাবে অধিনায়কত্ব করতে হয়। ও গত দেড় বছর ধরে রোহিত ভাইয়ের সঙ্গে থেকেছে। মাঠে রোহিত ভাইয়ের সঙ্গে অনেক আলোচনা করেছে। আমি নিশ্চিত রোহিত ভাইয়ের কাছে ও অনেক কিছু শিখেছে। সেগুলো ওর কাজে লাগবে।”
কুলদীপের মতে, শুভমন মাঠে সবসময় ইতিবাচক থাকেন। সেটাই তাঁর সবচেয়ে বড় গুণ। দলের মধ্যে সেটা ছড়িয়ে দিতে পেরেছেন তিনি। কুলদীপ বলেন, “শুভমন সবসময় ইতিবাচক। কখনও ভাবে না যে খারাপ কিছু হতে পারে। এই মনোভাব ও সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পেরেছে। সকলে জয় ছাড়া কিছু ভাবছে না। আমার মনে হয়, শুভমন অধিনায়কত্বের জন্য তৈরি। এটাই ওর জায়গা। অনেক দিন ও ভারতের অধিনায়কত্ব করবে।”
শুভমন নিজেও জানিয়েছেন যে রোহিত ও কোহলির শিক্ষা কাজে লাগাতে চান তিনি। ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম ‘স্কাই স্পোর্টস’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শুভমন বলেছেন, “টেস্টে বিরাটের অধীনে খেলার সময় মাঠে ওর সক্রিয়তা বার বার চোখে পড়ত। নিজের ভাবনা ভাগ করে নেওয়াই হোক বা ওর মাঠের আচরণ, আমার বেশ পছন্দ হত। ওটা আমিও কাজে লাগাতে চাই। যদি ওর কোনও পরিকল্পনা কাজে না লাগত, সঙ্গে সঙ্গে সেটা বদলে ফেলত এবং বোলারকে বলে দিত ও ঠিক কী চায়।”
কোহলির তুলনায় বেশ খানিকটা আলাদা ছিলেন রোহিত। অনেক শান্ত, ধীরস্থির। তবে সেটা শুধু আচরণে, কৌশলে নয়। শুভমনের কথায়, “অনেকেই ভাবে রোহিত আগ্রাসী ছিল না। কিন্তু কৌশলের দিক থেকে ও অত্যন্ত আগ্রাসী। ম্যাচের আগে, সিরিজ়ের মাঝে বা সিরিজ়ের পরে, সব সময় নিজের ভাবনা প্রকাশের ব্যাপারে অত্যন্ত স্বচ্ছ ছিল। সতীর্থদের থেকে কী চায় সেটা পরিষ্কার বলে দিত।” শুভমনের সংযোজন, “রোহিত ভাই দলের পরিবেশটাই আলাদা রাখতে পারত। যদি আপনাকে বকাঝকাও করে, সেটা গায়ে লাগত না। এটাই ওর ব্যক্তিত্ব। এই ক্ষমতা থাকাও ভাগ্যের ব্যাপার। নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অনড় থাকত।”
ভারতীয় দল ভবিষ্যতে কোন দিকে এগোবে সে ব্যাপারেও রোহিতের থেকে পরামর্শ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শুভমন। তাঁর কথায়, “অন্তত দু’বার এ ব্যাপারে রোহিতের সঙ্গে কথা বলেছি। আজ থেকে ৫, ৭ বা ১০, ১৫ বছর পরে ভারতীয় দলের কোথায় থাকা উচিত, সেটা নিয়ে ওর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।”
আরও পড়ুন:
দীর্ঘ দিন পর রোহিত ও কোহলিকে ছাড়া বিদেশ সফরে গিয়েছে ভারত। তবে এর ভাল দিক দেখতে চাইছেন কুলদীপ। তাঁর মতে, এই সিরিজ় অনেকের জন্য সুযোগ। তিনি বলেন, “রোহিত, বিরাট ভাইয়ের অভাব তো মেটানো যাবে না। ওরা দলের জন্য অনেক করেছে। কিন্তু এটা বাকিদের কাছে একটা সুযোগ। তরুণেরা দলে নিজেদের জায়গা পাকা করতে চাইবে। ওরা এটা চ্যালেঞ্জ হিসাবেই নিচ্ছে। ভাল করে তৈরি হচ্ছে। এই প্রতিযোগিতা থাকা ভাল। এতে আমাদেরই ভাল হবে।”
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে স্পিনার-অলরাউন্ডার হিসাবে রবীন্দ্র জাডেজার খেলা প্রায় পাকা। সঙ্গে কি কুলদীপও খেলবেন? সেটা এখনও জানেন না তিনি। তবে জাডেজার সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন তিনি। কুলদীপ বলেন, “জাডেজার পাশে খেলা আমার কাছে সম্মানের। গত কয়েক বছরে ওর কাছে অনেক কিছু শিখেছি। মাঠ ও মাঠের বাইরে ওর সঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি। তাতে ক্রিকেটার হিসাবে আমার উন্নতি হয়েছে।”