সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতানো শতরান করে কেঁদে ফেলেছিলেন। হাত জোড় করে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন দর্শকদের। পরে গ্যালারিতে গিয়ে পিতা ইভান রদ্রিগেজ়কে জড়িয়ে ধরেছিলেন। সেই কান্নার মধ্যে ছিল অনেক অসম্মান, অপমানের জবাব। এক বছর পর যে যন্ত্রণার মধ্যে তিনি ছিলেন, সেই বিষয়ে এত দিনে মুখ খুললেন জেমাইমা।
দলে সাধারণত মজা করতে দেখা যায় জেমাইমাকে। কখনও সতীর্থদের সঙ্গে, কখনও দর্শকদের সঙ্গে আনন্দ করেন। দুঃখের কথা খুব একটা শোনা যায় না। সেই কথাই অবশেষে বলেছেন জেমাইমা। ‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেমাইমা জানিয়েছেন, এক বছর আগে যে যন্ত্রণা তাঁর ও তাঁর পরিবারকে সহ্য করতে হয়েছিল, এত দিনে ঈশ্বর তার জবাব দিয়েছেন।
এক বছর আগে মুম্বইয়ের খার জিমখানা ক্লাবে ইভানের বিরুদ্ধে সভার আয়োজনের আড়ালে ধর্মান্তরণের অভিযোগ উঠেছিল। ক্লাবের সদস্যপদ খারিজ হয়ে যায় তাঁর। সেই সময়ের কথা বলেছেন জেমাইমা। তিনি বলেন, “আমি কঠিন সময় সামলাতে তৈরি ছিলাম। কিন্তু যখন আমার বাবা-মাকে তার মধ্যে জোর করে ঢোকানো হল, তখন খুব কষ্ট হয়েছিল। আমরা কিচ্ছু করিনি। তার প্রমাণও ছিল। যেহেতু কিছু করিনি, তাই সকলের অভিযোগে আরও যন্ত্রণা হয়েছিল।”
সেই ঘটনার ঠিক আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থ হয়ে বিদায় নিয়েছিল ভারতের মহিলা দলে। জেমাইমার পারফরম্যান্স ভাল ছিল না। তাই তিনি আরও ধাক্কা খেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন। জেমাইমার কথায়, “দুবাইয়ে বিশ্বকাপের ঠিক পরেই এটা হয়েছিল। আমার পারফরম্যান্স খারাপ হয়েছিল। সেটা নিয়ে চিন্তা করছিলাম। তার মাঝেই এই সব খবর বার হতে শুরু করল। মনে আছে, ভাইকে ফোন করে কেঁদেছিলাম। প্রথমে আমার খারাপ খেলা, তার পর পরিবারের উপর মিথ্যা অভিযোগ, মেনে নিতে পারছিলাম না।”
আরও পড়ুন:
ঈশ্বরের আশীর্বাদে সেই কঠিন সময় কাটিয়ে উঠেছিলেন বলে জানিয়েছেন জেমাইমা। ভারতীয় ক্রিকেটার বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য খারাপ ছিল না। তাই ঠিক করেছিলাম, কাউকে কোনও জবাব দেব না। ঈশ্বর সাক্ষী ছিলেন। যাঁরা আমাদের কষ্ট দিয়েছিলেন, তাঁদের পাল্টা দিতে চাইনি। ঈশ্বরের উপর আস্থা ছিল। এত দিনে তার প্রতিদান পেয়েছি। যা যা অপমান, অসম্মান করা হয়েছিল তার বদলে এখন দ্বিগুণ সম্মান পাচ্ছি। গত বার এই সময়েই যন্ত্রণার মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলাম। এ বছর বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ করছি।”
সেমিফাইনালে শতরানের ইনিংসের পরেও ঈশ্বরের কথা শোনা গিয়েছিল জেমাইমার মুখে। দেখা যাচ্ছিল, ব্যাট করার সময় কিছু একটা বলছেন তিনি। পরে জানিয়েছিলেন, বাইবেলের বাণী আওড়াচ্ছিলেন। ঈশ্বর তাঁকে খেলার শক্তি দিয়েছেন। এক বছর আগের খারাপ সময় কাটিয়ে ওঠার নেপথ্যেও সেই ঈশ্বরের কথাই বললেন জেমাইমা।