এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত আইপিএল। শুক্রবার সমাজমাধ্যমে ঘোষণা করলেন আইপিএল কর্তৃপক্ষ। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব দেবজিত শইকিয়াও একই কথা জানিয়েছেন। ভারত-পাক সংঘাতের মাঝে আপাতত আইপিএল বন্ধ রাখছে বোর্ড।
বৃহস্পতিবার জরুরি বৈঠকে আইপিএল আপাতত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও বোর্ড এবং আইপিএলের তরফে সরকারি ঘোষণা করা হয় শুক্রবার দুপুর ২.৪৭ মিনিটে। পরিস্থিতি বুঝে নেওয়ার জন্যই এত বেশি সময় নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আইপিএলের সূত্র থেকে যা জানা গেল, নিরাপত্তার কারণে তো বটেই, মানবিক কারণেও আইপিএল স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে। জানা গেল, বৈঠকে এরকম আলোচনা হয়েছে, যেখানে ভারত-পাক সংঘর্ষ হচ্ছে, সেখানে আইপিএলের মতো বিনোদন এই মুহূর্তে অত্যন্ত দৃষ্টিকটু। এক দিকে ভারতীয় সেনা যখন লড়াই করছে, তখন অন্য দিকে আইপিএলের মঞ্চে ডিজে বাজছে, চিয়ারলিডারেরা নাচছেন— এটা একেবারেই ভাল বিজ্ঞাপন নয়। ফলে, প্রতিযোগিতা স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে খুব বেশি ভাবতে হয়নি।
আরও পড়ুন:
আইপিএলে এখনও লিগ পর্বে ১২টি ম্যাচ বাকি। সেই সঙ্গে বৃহস্পতিবার পঞ্জাব-দিল্লি ম্যাচটি বাতিল হলেও তার পয়েন্ট ভাগ করে দেওয়া হয়নি। বোর্ড যদি পরে আইপিএল আবার আয়োজন করে, তা হলে এই ম্যাচটিও হতে পারে। সেই সঙ্গে প্লে-অফের চারটি ম্যাচ রয়েছে। কলকাতায় কোয়ালিফায়ার ২ এবং ফাইনাল হওয়ার কথা ছিল। তবে এক সপ্তাহ পর আইপিএল শুরু হলে পাল্টে যাবে সূচি। নতুন সূচি ঘোষণা করা হতে পারে।
শুক্রবার আইপিএলের তরফে সমাজমাধ্যমে বলা হয়েছে, “আইপিএলের বাকি অংশ এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হল। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ক্রিকেটার, সম্প্রচারকারী সংস্থা, স্পনসর, সমর্থকদের কথা ভাবা হয়েছে। ভারতীয় সেনার উপর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পূর্ণ আস্থা আছে। দেশের পাশে বোর্ড। জঙ্গিহানার বিরুদ্ধে ভারত যে ভাবে অপারেশন সিঁদুর করেছে তার জন্য বোর্ড সেনাকে বাহবা জানায়।”
বৃহস্পতিবার আইপিএলের ম্যাচ বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। তার পরেই আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। বৃহস্পতিবার সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আইপিএল আপাতত এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার আইপিএলের ম্যাচের মাঝেই জম্মুতে শুরু হয়েছিল পাকিস্তানের হামলা। প্রত্যাঘাত করেছিল ভারতও। সংঘর্ষের কারণে ধর্মশালায় পঞ্জাব কিংস বনাম দিল্লি ক্যাপিটালসের ম্যাচ বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। দর্শকদের মাঠ থেকে বার করে দেওয়া হয়েছিল। আইপিএল চেয়ারম্যান অরুণ ধুমল নিজে মাঠে নেমে দর্শকদের মাঠ ছাড়ার কথা বলেছিলেন।
বৃহস্পতিবার রাতে পর পর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে জম্মুতে। আখনুর, সাম্বার মতো জায়গায় সাইরেন বাজছে। পাকিস্তানের দিকে আন্তর্জাতিক সীমান্তের ওপার থেকে একাধিক রকেট উড়ে আসতে দেখা গিয়েছে। সম্পূর্ণ ‘ব্ল্যাকআউট’ করে দেওয়া হয়েছে এলাকায়। অর্থাৎ, গোটা এলাকার আলো বন্ধ। সূত্রের খবর, ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাক হামলা প্রতিহত করতে সক্রিয় হয়েছে। জম্মুর পাশাপাশি পঞ্জাব, রাজস্থানের বিভিন্ন এলাকাতেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে।