Advertisement
E-Paper

ইংল্যান্ড সফরের দল নির্বাচনের আগের দিনই নির্বাচকদের বার্তা ‘অবাধ্য’ ঈশানের, প্রথম দুইয়ের স্বপ্নে ধাক্কা আরসিবির

মাসখানেক আগে ভারতীয় বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ফেরানো হয়েছিল তাঁকে। ইংল্যান্ডগামী ভারত ‘এ’ দলেও সুযোগ পেয়েছেন। এ বার কি টেস্ট দলেও শিকে ছিঁড়তে চলেছে ঈশান কিশনের? শুক্রবার বেঙ্গালুরুকে হারাতে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেললেন তিনি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৫ ২৩:৩৩
cricket

ঈশান কিশন। — ফাইল চিত্র।

মাসখানেক আগে ভারতীয় বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ফেরানো হয়েছিল তাঁকে। তা-ও দেশের হয়ে দু’বছর ক্রিকেট না খেলার পর। ইংল্যান্ডগামী ভারত ‘এ’ দলেও সুযোগ পেয়েছেন। এ বার কি টেস্ট দলেও শিকে ছিঁড়তে চলেছে ঈশান কিশনের? শুক্রবার বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে যে ইনিংস উপহার দিলেন, তাতে শনিবারের দল নির্বাচনী বৈঠকে তাঁর নাম নিয়ে ঝড় উঠলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। মূল দলে জায়গাও পেয়ে যেতে পারেন।

এ দিন আগে ব্যাট করে ঈশানের (অপরাজিত ৯৪) দাপটে ২৩১/৬ তোলে হায়দরাবাদ। জবাবে বেঙ্গালুরু থেমে গিয়েছে ১৮৯ রানে। ব্যর্থ বেঙ্গালুরুর মিডল অর্ডার। প্রথম দুইয়ে জায়গা পাকা করার স্বপ্নও ধাক্কা খেল তাদের। এখন বেঙ্গালুরুর ১৩ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট। ২৭ মে শেষ ম্যাচে লখনউয়ের বিরুদ্ধে নামার আগেই অবশ্য স্পষ্ট হয়ে যাবে বিরাট কোহলিরা প্রথম দুইয়ে শেষ করবেন কি না। কারণ প্রথম দুইয়ের দৌড়ে থাকা গুজরাত এবং পঞ্জাবের বাকি ম্যাচ তার আগেই শেষ হয়ে যাবে।

বছর দুয়েক আগেও ভারতীয় দলে নিয়মিত জায়গা পেতেন ঈশান। ঋষভ পন্থের বিকল্প হিসাবে তৈরি করা হচ্ছিল তাঁকে। কিন্তু ২০২৩-এর দক্ষিণ আফ্রিকা সফর সব কিছু বদলে দেয়। ওই সফরের মাঝপথে দেশে ফিরে আসার পর থেকে একের পর এক আচরণ, বোর্ডের অনুরোধকে অবজ্ঞা করার কারণে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়েন। তকমা পান ‘অবাধ্য’ ক্রিকেটারের।

ঈশানের সঙ্গে ‘অবাধ্যের’ তকমা পাওয়া শ্রেয়স আয়ার এখনও জাতীয় দলের মূলস্রোতে ফিরতে পারেননি। কিন্তু শুক্রবার রাতে ঈশান নিঃসন্দেহে একটা বার্তা দিয়ে রাখলেন নির্বাচকদের। তাঁর অপরাজিত ৯৪ রান এসেছে চাপের মুখে। দলের দুই ওপেনার শুরুটা ভাল করে যাওয়ার পর সেই ভিতে দাঁড়িয়ে বেঙ্গালুরুকে শাসন করে গেলেন ঈশান। বিপক্ষ দলে নামী বোলারেরা থাকলেও ভ্রুক্ষেপ করলেন না।

ঠিক দু’মাস আগে, আইপিএলে দলের প্রথম ম্যাচে শতরান করে চমকে দিয়েছিলেন ঈশান। এ দিন অল্পের জন্য শতরান ফস্কালেও আক্ষেপ থাকার কথা নয়। চতুর্থ ওভারে ব্যাট করতে নেমে শেষ ওভার পর্যন্ত খেলেছেন। ৪৮ বলে অবদান অপরাজিত ৯৪। স্ট্রাইক রেট দুশোর একটু কম। টেস্ট কেন, টি-টোয়েন্টি দলেও সুযোগ মিলে যেতে পারে ভবিষ্যতে। বিশেষ করে যেখানে পরের বছর দেশের মাটিতেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ রয়েছে।

এ দিন প্রথম বলেই ঈশানের ক্যাচ ফেলেন জিতেশ শর্মা। সেই মঞ্চ কাজে লাগান হায়দরাবাদ ব্যাটার। প্রথম দিকে খুচরো রান এবং চার মারার উপরে জোর দিচ্ছিলেন। ধীরে ধীরে হাত খুলে খেলতে থাকেন। মারার বলে মেরেছেন, ধরে খেলার বলে খুচরো রান নিয়েছেন। আগ্রাসনের পাশাপাশি নজর কেড়েছে তাঁর সহনশীলতাও।

২০২৩ সালের নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ বার ভারতের জার্সিতে খেলেছিলেন ঈশান। সেটি ছিল টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। তার পর থেকে আর ভারতের হয়ে খেলতে দেখা যায়নি তাঁকে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেই বছর টেস্ট দলে থাকলেও খেলানো হয়নি। সিরিজ়ের মাঝেই দল ছেড়ে চলে এসেছিলেন। বিতর্কের সেই শুরু। তার পর ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেননি বলে বার্ষিক চুক্তি থেকে বাদ পড়েছিলেন। সেই ক্রিকেটারকে হঠাৎ ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে বার্ষিক চুক্তিতে।

ভারত ‘এ’ দলের হয়ে ঈশানকে অস্ট্রেলিয়া সফরে পাঠিয়েছিল বোর্ড। বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির আগে চার দিনের দু’টি বেসরকারি টেস্ট খেলেছিল অস্ট্রেলিয়া এ এবং ভারত এ। সেই দলে ছিলেন ঈশান। বোর্ড যে তাঁকে আগামী দিনের পরিকল্পনায় রেখেছে সেটা বোঝা গিয়েছিল তখনই। বার্ষিক চুক্তিতে ফেরানো এবং আবার ভারত ‘এ’ দলে সুযোগ পাওয়া প্রমাণ করেছে, তিনি নির্বাচকদের নজরে রয়েছেন।

ঈশানের এই প্রত্যাবর্তন চাপ বাড়িয়ে দেবে পন্থের। এক দিনের এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দলে জায়গা পাচ্ছেন না পন্থ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে লোকেশ রাহুলকে প্রধান উইকেটরক্ষক হিসাবে খেলায় ভারত। টি-টোয়েন্টিতে সঞ্জু স্যামসন রয়েছেন। পন্থ এখন শুধুই টেস্ট দলে রয়েছেন। সেখানে দ্বিতীয় উইকেটরক্ষক হিসাবে আগামী দিনে ঈশানকে দেখা গেলে অবাক হওয়ার থাকবে না। রান করতে না পারলে লাল বলের ক্রিকেটেও জায়গা হারানোর ভয় থাকবে পন্থের।

করোনা সারিয়ে হায়দরাবাদ দলে ফিরেছিলেন ট্রেভিস হেড। অভিষেক শর্মার সঙ্গে ওপেন করতে নেমে দু’জনে মিলে শুরুতেই ৫০ রানের জুটি গড়েন। তিনটি চার এবং তিনটি ছয় মেরে ১৭ বলে ৩৪ রান করেন অভিষেক। তবে দলে ফিরলেও রানে ফিরতে পারেননি হেড। ১০ বলে ১৭ রান করে আউট হন। ধস আটকাতে দলের টপ অর্ডারের কাউকে দায়িত্ব নিতেই হত। সেই কাজটাই করেন ঈশান। হাইনরিখ ক্লাসেন (১৩ বলে ২৪), অনিকেত বর্মা (৯ বলে ২৬) বেশি ক্ষণ সঙ্গ দিতে না পারলেও নিজের কাজটা করে গিয়েছেন। যে কারণে উইকেট পড়তে থাকলেও রান রেট কমেনি হায়দরাবাদের। সে কারণেই নির্ধারিত ওভারে দুশোর গন্ডি সহজেই পেরিয়ে যায় তারা।

জবাবে বেঙ্গালুরু শুরুটা খারাপ করেনি। টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার পর প্রথম বার খেলতে নেমে বিরাট কোহলির অবদান ২৫ বলে ৪৩। শুরুতে তিনিই আক্রমণাত্মক খেলছিলেন। কোহলি ফেরার পর আক্রমণের দায়িত্ব তুলে নেন ফিল সল্ট। চারটি চার এবং পাঁচটি ছয়ের সাহায্যে ৩২ বলে ৬২ করেন। এর পর আর কেউ হাল ধরতে পারেননি দলের। এত রান তুলতে গেলে মিডল অর্ডারের এক জনকে ভাল ইনিংস খেলতে হত। সেটা কেউই পারেননি।

Ishan Kishan Virat Kohli RCB SRH BCCI India vs England
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy