কথা বলবেন কী, তখনও চোখের জল সামলাতে পারছিলেন না। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতেই কোনও মতে মাইক্রোফোনটা হাতে নিয়ে জেমাইমা রদ্রিগেজ় বুঝিয়ে দিলেন, রবিবার ফাইনালেও এরকম কাঁদতে চান।
ম্যাচের পর জেমাইমা বললেন, ‘‘স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। স্বপ্নটা এখনও শেষ হয়নি। সত্যিই গত এক মাসের কাজটা কঠিন ছিল। একা এটা করতে পারিনি। মা, বাবা, কোচ এবং আমার উপর যাঁরা বিশ্বাস রেখেছিলেন, তাঁদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’’
ম্যাচের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে কাঁদছেন জেমাইমা। ছবি: এক্স
তিনি যে ১৩৪ বলে অপরাজিত ১২৭ রানের ইনিংস খেলবেন, ভাবেননি। না ভাবার কারণ শুধু যে ছন্দে ছিলেন না, তা নয়। তিনি জানতেনই না যে, তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামবেন। জেমাইমা বললেন, ‘‘আমি জানতাম না যে, তিন নম্বরে ব্যাট করতে হবে। আমি স্নান করছিলাম। শুধু বলেছিলাম আমাকে জানাতে। মাঠে নামার পাঁচ মিনিট আগে, আমাকে বলা হয়েছিল যে আমি তিন নম্বরে ব্যাট করছি।’’
শতরান করে কোনও উল্লাস করতে দেখা যায়নি জেমাইমাকে। তার কারণও ব্যাখ্যা করলেন। বললেন, ‘‘আজ আমার পঞ্চাশ বা শতরানটা বিষয় নয়। ভারতকে জিতিয়ে আনার লক্ষ্য ছিল। একটা সেটআপ ছিল। আগে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলো আমরা হেরেছি।’’
ম্যাচের পর বাবা ইভান রদ্রিগেজ়ের সঙ্গে জেমাইমা। ছবি: এক্স
শুধু দলের আগের হারগুলিই নয়, জেমাইমার মনে পড়ছে নিজের খারাপ সময়ের কথাও। বললেন, ‘‘গত বছর আমাকে এই বিশ্বকাপ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। কোনও কিছুই নিজের নিয়ন্ত্রণে ছিল না। এই সফরে আমি প্রায় প্রতি দিনই কেঁদেছি। মানসিক ভাবে ভাল জায়গায় ছিলাম না। একটা উদ্বেগের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম। জানতাম আমাকে জ্বলে উঠতে হবে।’’
আরও পড়ুন:
ইনিংসের শুরুতে শুধু নিজের মতো খেলছিলেন। নিজের সঙ্গে কথা বলছিলেন। শেষের দিকে ভরসা ছিল বাইবেল। বললেন, ‘‘বাইবেলে বলা আছে শুধু শক্ত হয়ে দৃঢ় ভাবে দাঁড়াও, ঈশ্বর তোমার হয়ে লড়াই করবেন। আমি সেটাই ভাবছিলাম। তখনও অনেক কিছু বাকি ছিল। তাই শান্ত থাকার চেষ্টা করছিলাম।’’
শতরানের ইনিংস খেলার পথে জেমাইমা। ছবি: এক্স
ইনিংসের শেষ দিকে তাঁকে ক্লান্ত দেখাচ্ছিল। সে কথা স্বীকার করে নিয়ে জেমাইমা বললেন, ‘‘আমি তখন নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু পারছিলাম না। দীপ্তি প্রতি বলে আমার সঙ্গে কথা বলছিল এবং আমাকে উৎসাহিত করছিল। যখন নিজে পারি না, সতীর্থরা আমাকে উৎসাহিত করে। তাই কোনও কিছুর জন্যই আমি একা কৃতিত্ব নিতে পারি না। আমি নিজে থেকে কিছুই করিনি। এমনকি প্রত্যেক দর্শক, যাঁরা উল্লাস করছিলেন, আমাদের উপর বিশ্বাস রেখেছিলেন, তাঁরাও আমাকে উৎসাহিত করেছিলেন।’’
(ভ্রম সংশোধন: এই প্রতিবেদনের শিরোনামে প্রথমে লেখা হয়েছিল ভারতকে ফাইনালে জিতিয়েছেন জেমাইমা। কিন্তু ভারত সেমিফাইনালে জিতেছে। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।)