লর্ডসে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল জেতার পর ক্যামেরা তাক করল তাঁদের দিকে। প্রথম জন টেম্বা বাভুমা। দলকে ২৭ বছর পর আইসিসি ট্রফি জিতিয়েও নির্লিপ্ত। লর্ডসের বারান্দায় বসে হাততালি দিচ্ছেন। বাকিদের উচ্ছ্বাসে তখনও যোগ দেননি। অপর জন ফিলা লোবি। গ্যালারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার অন্য ক্রিকেটারদের স্ত্রী ও প্রেমিকার সঙ্গে বসে তিনি। স্বামীর কৃতিত্বে চোখের জল বাঁধ মানছে না। একে একে সকলকে জড়িয়ে ধরছেন। স্বামী বাভুমা আবেগ ধরে রাখলেও নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি লোবি। স্বামীর এই সাফল্যের নেপথ্যে যে তিনিও রয়েছেন।
চার বছর ধরে সম্পর্কে থাকার পর ২০১৮ সালে বিয়ে করেন বাভুমা ও লোবি। ২৬ অগস্ট ওয়েস্টার্ন কেপের ফ্রান্সচহকে বিয়ে হয় তাঁদের। ২০২৩ সালে তাঁদের এক পুত্রসন্তান হয়। তার নাম লিহলে। সেই সন্তানও লর্ডসে ছিল। ট্রফি জিতে সন্তানের হাত ধরে মাঠে ঘুরেছেন বাভুমা। সেই ছবি জায়গা করে নিয়েছে ক্রিকেটের ক্যানভাসে।
লোবি সফল ব্যবসায়ী। তাঁর একটি রিয়েল এস্টেট সংস্থা রয়েছে যার নাম ‘লোবি প্রপার্টিজ’। ২০১৬ সালে এই সংস্থা শুরু করেন তিনি। এই সংস্থা মূলত জোহানেসবার্গ ও কেপটাউনে বিলাসবহুল সম্পত্তি বিক্রি করে। ব্যবসার পাশাপাশি তিনি একজন সমাজসেবীও। ২০১৮ সালে তিনি ‘ফিলা লোবি ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন, যা অনাথ ও দুঃস্থ শিশুদের জন্য কাজ করে। লোবি ফিনান্স ও রিয়েল এস্টেট বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তার পরে এই ব্যবসায় নেমেছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
বাভুমার পাশে সবসময় ঢাল হয়ে থেকেছেন লোবি। জাতীয় দলে অভিষেকের পর বার বার সমালোচনা হয়েছে বাভুমার। তাঁকে নিয়ে সমাজমাধ্যমে একের পর এক মিম হয়েছে। লোবি তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, সমাজমাধ্যম না দেখতে। কারও কথা না শুনতে। কেবল নিজের খেলায় মন দিতে। স্ত্রী-র কথা শুনে সেটাই করেছেন বাভুমা। সংসারের কোনও দিকে তাঁকে নজর দিতে হয়নি। বাভুমা নিজেও কিছু সাক্ষাৎকারে লোবির অবদানের কথা জানিয়েছেন। লোবি থাকায় যে তাঁকে ক্রিকেট ছাড়া আর কোনও দিকে মন দিতে হয়নি তা স্বীকার করে নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক।
নিজের ব্যবসা সামলেও বাভুমার জন্য মাঠে গিয়েছেন লোবি। গ্যালারিতে বসে স্বামীকে সমর্থন করেছেন। শনিবার যখন দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট বিশ্বকাপ জিতেছে তখন হয়তো পুরনো দিনে কথা মনে পড়েছে লোবির। সেই কারণে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। স্বামীর কৃতিত্বে তাঁর চোখে জল পড়েছে। তবে তা সাফল্যের আনন্দে। এত দিনে তাঁর পরিশ্রম, ত্যাগ সফল হয়েছে। তাই চোখে জল থাকলেও মুখের চওড়া হাসি কমেনি তাঁর।