আকাশ দীপের সাফল্য মুগ্ধ করেছে বোলিং কোচ মর্নি মর্কেলকে। ইংল্যান্ডের মাঠে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে দু’ইনিংসে ছ’উইকেট হয়ে গেল বাংলার এই পেসারের। শনিবার খেলার পরে সাংবাদিক বৈঠকে এসে মর্কেল বলেন, ‘‘বুমরার অনুপস্থিতিতে আমাদের পেসাররা যে ভাবে বল করছে, তা দেখে খুশি হয়েছি। আকাশ দীপ খুব আগ্রাসী বোলার। স্টাম্পে বল রেখেই সফল হচ্ছে। ইংল্যান্ডের পরিবেশেও মানিয়ে নিচ্ছে।’’
প্রথম ইনিংসে ছ’উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডকে ভেঙেছিলেন মহম্মদ সিরাজ। এই ইনিংসে তুলে নিয়েছেন জ়াক ক্রলিকে। সিরাজকে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন ফাস্ট বোলার মর্কেল বলেছেন, ‘‘সিরাজ সব সময় মাঠে একশো শতাংশের বেশি দেয়। মাঝে মাঝে একটু বেশি চেষ্টা করে ফেলে। যে কারণে ধারাবাহিকতা কমে যায়।’’ যোগ করেন, ‘‘সিরাজের পারফরম্যান্সটা সব সময় পরিসংখ্যান দিয়ে বোঝা যায় না।’’
ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রথম বারের মতো টেস্ট খেলতে নামার আগে আকাশ দীপকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন কোচ গৌতম গম্ভীর। তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছিলেন। এজবাস্টনে প্রথম ইনিংসে চার উইকেট নিয়ে ভারতীয় দলকে ১৮০ রানে এগিয়ে দেন আকাশ ও মহম্মদ সিরাজ। বাংলার আকাশ এই সাফল্যের কৃতিত্ব দিচ্ছেন ভারতের প্রধান কোচ গম্ভীরকেই।
তৃতীয় দিনের শেষে সাংবাদিক বৈঠকে এসে আকাশ বলেছেন, ‘‘গম্ভীর স্যর আমার সঙ্গে তাঁর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছিলেন। ইংল্যান্ডে কী ভাবে খেলা উচিত, কোথায় বল করা উচিত, সব বলেছেন।’’ যোগ করেন, ‘‘আমাকে প্রচুর আত্মবিশ্বাস দিয়েছেন। যে দিন থেকে দলে যোগ দিয়েছি, আমাকে বুঝিয়েছেন ইংল্যান্ডের মাটিতে সফল হওয়া সম্ভব।’’
আকাশ জানিয়েছেন, কোচ এতটা আত্মবিশ্বাস দেওয়ায় তাঁরও মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সুবিধে হয়েছে। ভারতীয় পেসারের কথায়, ‘‘কোচ যখন আপনার পাশে থাকে, আত্মবিশ্বাস বাড়তে বাধ্য। গম্ভীর স্যর আমার উপরে ভরসা করেছেন। মানসিক ভাবে যা আমাকে অনেক শক্তি দিয়েছে।’’
গম্ভীর ঠিক কী বলেছিলেন আকাশকে? ভারতীয় পেসারের মন্তব্য, ‘‘গম্ভীর স্যর বলেছেন, আমার মধ্যে এমন প্রতিভা আছে যা আমি নিজেও আবিষ্কার করতে পারিনি। ইংল্যান্ডের মাটিতেই সেই প্রতিভা দেখানোর সময় হয়েছে। এ ধরনের কথা বললে আত্মবিশ্বাস বাড়তে বাধ্য।’’ যোগ করেন, ‘‘কখনও কখনও এ রকম সত্যি হয় যে আমি কী পারি, তা ভুলে যাই। মনমরা হয়ে যাই। তখন এই ধরনের কথা শুনলে খুব ভাল লাগে। মনে হয়, দলের জন্য সেরাটা উজাড় করে দিই।’’
আকাশ দীপ জানিয়েছেন, সব ম্যাচে সুযোগ না পেলেও তিনি ভেঙে পড়েন না। সব সময় খেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখেন। বলেছেন, ‘‘সুযোগ পাওয়া, না পাওয়া নিয়ে খুব একটা ভাবি না। জানি আমাকে যখন দলের দরকার হবে, তখন ঠিকই খেলব। তার জন্য নিজেকে সব সময় প্রস্তুত রাখার চেষ্টা করি। হয়তো ধারাবাহিক ভাবে খেলার সুযোগ হয় না। তার মানে এই নয় যে, প্রস্তুত থাকব না।’’ যোগ করেন, ‘‘হাতে সময় থাকলে নিজের প্রস্তুতিতে জোর দিই। খেললে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি। ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামি সব সময়।’’ সিরাজকে নিয়ে আকাশ বলেছেন, ‘‘মাঠে আমরা সব সময় পরস্পরের সঙ্গে কথা বলি। বল করার সময়ও আলোচনা করি। কী করলে ভাল হয়, কোনটা কাজে আসছে না, এই সব নিয়ে কথা হয়।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)