আইপিএলের নিলামের সময়ই আলোচনায় উঠে এসেছিল বৈভব সূর্যবংশী। ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় বিহারের ১৪ বছরের ব্যাটারকে কিনেছিল রাজস্থান রয়্যালস। আইপিএলে দল পাওয়ার পর থেকে বৈভবকে কড়া নিয়মে বেধে রেখেছিলেন কোচ মণীশ ওঝা। মাংস, পিৎজ়া খেতে দেননি কিশোর ক্রিকেটারকে। বৈভবের খেলা দেখে মুগ্ধ গুগল সিইও সুন্দর পিচাইও। সমাজমাধ্যমে প্রশংসা করেছেন তিনি।
শনিবার আইপিএলের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামে বৈভব। প্রথম বলেই শার্দূল ঠাকুরের মতো অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারকে ছক্কা মেরে তাক লাগিয়ে দেয় ১৪ বছরের কিশোর। প্রথম ম্যাচে ছাত্রের ২০ বলে ৩৪ রানের ইনিংস দেখে খুশি মণীশ। তিনি বলেছেন ছাত্রকে আইপিএলের জন্য তৈরি করার কাহিনি। মণীশ বলেছেন, ‘‘মটন খাওয়া বৈভবের বারণ। ওর খাদ্যতালিকায় পিৎজ়ারও জায়গা নেই। মাংস খেতে খুবই ভালবাসে। ওকে যত মটন দেবেন, সব খেয়ে নেবে। বৈভবের বয়স খুবই কম। স্বাভাবিক ভাবেই পিৎজ়া খেতে ভালবাসে। কিন্তু এ সব ওকে খেতে দিইনি। একটা শৃঙ্খলায় বেঁধে রেখেছিলাম। শরীরে ওজন বেড়ে গিয়েছিল বলেই খাওয়াদাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ আনতে হয়েছে। চেহারাটা ভারী হয়ে গিয়েছিল ওর।’’
ক্রিকেটের জন্য এখন আর মটন, পিৎজ়ার মতো খাবার মুখে তোলে না ১৪ বছরের বৈভব। ছাত্রকে নিয়ে আশাবাদী মণীশ বলেছেন, ‘‘আমার আশা, বৈভব অনেক দূর যাবে। দেখলেন ইনিংসটা কী ভাবে শুরু করল। কথা দিচ্ছি বৈভব পরের ম্যাচগুলোয় বড় রান করবে। ও ভয়ডরহীন ব্যাটার। ব্রায়ান লারার ভক্ত বৈভব। অথচ যুবরাজ সিংহের মতো আগ্রাসী ব্যাটিং করতে পছন্দ করে। ওর ব্যাটিংয়ের মধ্যে লারার সঙ্গে যুবরাজ সিংহেরও ছাপ রয়েছে।’’
আইপিএলের জন্য বৈভবকে কী ভাবে তৈরি করলেন? মণীশ বলেছেন, ‘‘অনুশীলনে নানা রকম পরিস্থিতি দিতাম। ৪ ওভারে ৪০ রান বা ৬ ওভারে ৬০ রান করতে হবে। দু’জন বোলারই বল করত। বৈভব প্রায় সব সময় কয়েকটা বল বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে যেত। বোলারদের শাসন করতে ভালবাসে। সমস্তিপুর থেকে পটনার দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার। ওর বাবা সঞ্জীব সূর্যবংশী প্রতি দিন গাড়ি করে ছেলেকে নিয়ে আসত আমার অ্যাকাডেমিতে। এতটা রাস্তা আসার পরও বৈভব ক্লান্ত হত না। প্রতি দিন একই ভাবে কঠোর অনুশীলন করত।’’
কোচকে আগেই সুখবর দিয়েছিল বৈভব। মণীশ বলেছেন, ‘‘আগের দিন অনুশীলনের পর আমাকে ফোন করেছিল। খুব আনন্দে ছিল। ও আমাকে বলল, ‘রাহুল দ্রাবিড় স্যর আমাকে বলেছেন, লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে খেলব।’ খেলার সুযোগ পাবে বলে খুশি ছিল। তবে একটু চাপেও ছিল। প্রথম ম্যাচ তো। বৈভবকে বলেছিলাম, মাথা ঠান্ডা রাখতে। কোনও কিছু না ভেবে নিজের মতো ব্যাট করতে। ছয় মারার মতো বল পেলে কোনও কিছু না ভেবে মারার চেষ্টা করবি।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘বয়স কম। নানা আবেগ কাজ করে। তবে দ্রাবিড়ের কথা খুব বলে। ওকে রাজস্থানের হেড কোচ আগলে রেখেছেন।’’
আরও পড়ুন:
বৈভবের ইনিংস নজর কেড়েছে পিচাইয়েরও। গুগ্ল সিইও কিশোর ব্যাটারের প্রশংসা করে সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রের খেলা আইপিএলে দেখব বলে ঘুম থেকে উঠেছিলাম। কী অসাধারণ অভিষেক!’’