এশিয়া কাপের ম্যাচের পর ভারতীয় ক্রিকেটারেরা হাত মেলাতে না চাওয়ার ঘটনায় মুখ পুড়েছে পাকিস্তান বোর্ডের। ঘটনার সরকারি প্রতিবাদ তারা জানিয়েছে। কিন্তু অনেক দেরি করে। তার জন্য দায়ী করা হয়েছে পাকিস্তান বোর্ডের এক কর্তাকেই। চেয়ারম্যান মহসিন নকভির নির্দেশ অনুসারে তাঁকে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করা হয়েছে।
পাকিস্তানের ওই নিলম্বিত কর্তা হলেন উসমান ওয়াহলা। তিনি বোর্ডের ডিরেক্টর অফ ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট অপারেশন্স পদে ছিলেন। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ওয়াহলার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হ্যান্ডশেক বিতর্কের পরেই নকভির নেতৃত্বে পাকিস্তান বোর্ডের কর্তারা একটি অভ্যন্তরীণ বৈঠক করেন। আলোচনা করে দেখা যায়, ওয়াহলা নিজের দায়িত্ব ঠিক করে পালন করতে পারেনি। বোর্ড আশা করেছিল, এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের স্বার্থরক্ষা আরও কড়া ভাবে করবেন ওয়াহলা। ম্যাচ শুরুর আগে সমস্যার সমাধান করে ফেলা উচিত ছিল তাঁর। সেটা পারেননি। তাই ওয়াহলাকেই দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে নিলম্বিত করা হয়েছে। তিনি দু’বছর ধরে পাক বোর্ডে কাজ করছেন। পাকিস্তান সুপার লিগের চেয়ারম্যানও তিনি।
রবিবার সূর্যকুমার যাদবেরা করমর্দন করেননি পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সঙ্গে। টসের পর পাকিস্তানের অধিনায়ক সলমন আঘাকে এড়িয়ে যান সূর্যকুমার। ম্যাচ শেষ হওয়ার পরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় ভারতীয় সাজঘরের দরজা। পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সঙ্গে কোনও রকম সৌজন্য বিনিময় করেননি ভারতীয়েরা। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ পিসিবি কর্তারা। প্রতিবাদে রবিবারই পাকিস্তান অধিনায়ক সলমন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বয়কট করেন। পিসিবির পক্ষ থেকে আগেই মৌখিক প্রতিবাদ জানানো হয়। তাতেই থেমে থাকেনি তারা। আইসিসিকে চিঠি দিয়ে প্রতিবাদ জানান পাকিস্তানের ক্রিকেটকর্তারা। ভারতীয় দলের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্টের অপসারণ দাবি করা হয়।
পিসিবি চেয়ারম্যান নকভি সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘আইসিসির দ্বারস্থ হয়েছে পিসিবি। ম্যাচ রেফারির বিরুদ্ধে আইসিসির আচরণবিধি এবং এমসিসির নিয়ম লঙ্ঘিত হয়েছে। এশিয়া কাপ থেকে ম্যাচ রেফারিকে অবিলম্বে অপসারণের দাবি জানিয়েছে পিসিবি।’’ নকভি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলেরও (এসিসি) চেয়ারম্যান। পাক বোর্ডের মতে, ভারতের আচরণ খেলোয়াড়ি মানসিকতার পরিপন্থী। প্রথমে এসিসির কাছে পদক্ষেপের আর্জি জানানো হয় পাকিস্তান দলের পক্ষ থেকে।
আরও পড়ুন:
পাকিস্তান সরকারি অভিযোগ জানালেও তাতে কোনও সুবিধা হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ পাক বোর্ডই জানিয়েছে, ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্ট পাকিস্তানের অধিনায়ককে সূর্যকুমারের সঙ্গে করমর্দন করতে নিষেধ করেছিলেন টসের আগে। যদি তা-ই হয়, তা হলে ভারতীয় ক্রিকেটারদের করমর্দন না করা নিয়ে নিজের রিপোর্টে খারাপ কিছু লিখবেন না ম্যাচ রেফারি। ম্যাচের কোনও ঘটনা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ম্যাচ রেফারির রিপোর্ট গুরুত্বপূর্ণ। আগে থেকেই পাইক্রফ্টের সম্মতি থাকলে তাঁর রিপোর্ট ভারতের বিরুদ্ধে যাবে না। উল্লেখ্য, খেলা শেষ হওয়ার পর সূর্যকুমার এবং শিবম দুবে সোজা সাজঘরের দিকে হাঁটা দিয়েছিলেন। তাঁরা আম্পায়ারদের সঙ্গেও করমর্দন করেননি।