দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে রবিবার প্রথম এক দিনের ম্যাচ। তিন ম্যাচের এই সিরিজ় রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলির কাছে অগ্নিপরীক্ষা। দু’জনের কাছে পৌঁছে গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) বার্তা। তাই প্রস্তুতিতে কোনও ফাঁক রাখেননি তাঁরা। শনিবার দু’টি পাশাপাশি নেটে দীর্ঘক্ষণ ব্যাট করেন দু’জনে। তাঁদের অনুশীলন মুগ্ধ হয়ে দেখেছেন ভারতীয় দলের অন্য ক্রিকেটারেরাও।
ব্যাটিং, ফিল্ডিং অনুশীলনের পাশাপাশি জিমেও সময় কাটিয়েছেন রো-কো। অনুশীলনে দু’জনকেই দেখা গিয়েছে হালকা মেজাজে। ভারতীয় দলের অনুশীলনের ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছে বিসিসিআই। তাতেও বেশি গুরুত্ব পেয়েছেন রো-কো। প্রস্ততি নিয়ে রোহিত তাতে বলেছেন, ‘‘এক দিনের ক্রিকেট হল টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টির মিশ্রণ। দু’রকম ক্রিকেটের মধ্যে ভারসাম্য রেখে খেলতে হয়। দু’ধরনের ক্রিকেটের দক্ষতাই থাকা দরকার এক দিনের ক্রিকেট খেলার জন্য। বিশেষ করে আমার কথা বললে, আমি ওপেন করি। বল নতুন, শক্ত থাকে। সুইং করে। প্রথমে কিছুটা টেস্ট ক্রিকেটের মানসিকতা নিয়ে ব্যাট করতে হয়। শুরুতে কিছু বল ছাড়তে হয়। বলের কাছে শরীর নিয়ে গিয়ে খেলার চেষ্টা করতে হয়।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘’২০ বছর বয়স থেকে এক দিনের ক্রিকেট খেলছি। এখনও একই ভাবে ড্রাইভ মারি। মাঠে নামলে সব সময় নিজের সেরাটা দিতেই হবে। মানসিক ভাবে যে অবস্থাতেই থাকি না কেন মাঠে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি।’’ কোহলি বলেছেন, ‘‘একটা ব্যাপার বলতে পারি, খেললে সব সময় নিজের ১০০ শতাংশই দিই। এ ভাবেই আমি খেলতে অভ্যস্ত। কোনও সিরিজ় বা প্রতিযোগিতা ৯৫ শতাংশ প্রস্তুতি নিয়ে খেলি না। ১০০ শতাংশের কম দিই না। অনেক ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাও গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষেত্রে কাজে লাগে। পুরনো অভিজ্ঞতা মনে করলে ব্যাপারটা কিছুটা সহজ হয়।’’
রোহিতের বয়স এখন ৩৮। কোহলির ৩৭। দু’জনেই দেশের হয়ে খেলছেন দেড় দশকের বেশি। এখনও প্রতিটি ম্যাচ তাঁদের কাছে নতুন। এখনও তাঁদের সাফল্যের খিদে কমেনি। রোহিত এখনও প্রতিটি ম্যাচ প্রথম ম্যাচ হিসাবে খেলেন। তিনি বলেছেন, ‘‘আমার কাছে প্রতিটি ম্যাচ নতুন। মনে করি, প্রত্যেকটা ম্যাচেই আমার অভিষেক হচ্ছে। সে জন্যই এখনও নিয়মিত অনুশীলন করি। এক মাস বা ছ’মাস— যত দিন পরই খেলি না কেন, একই ভাবে খেলার চেষ্টা করি। আমি পারফর্মার। দলের জন্য পারফর্ম করাই আমার কাজ। আগের মতো করেই সবকিছু করার চেষ্টা করি। কোন ফরম্যাটে খেলছি, কোথায় খেলছি, কত নম্বরে ব্যাট করছি, এ সব গুরুত্বপূর্ণ নয়। কেমন খেলছি, সেটাই আসল। ’’ কোহলির কাছে এই বয়সেও পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ধারাবাহিক ভাবে কঠোর পরিশ্রম করে গেলে তবেই দীর্ঘ দিন খেলা যায়। ফলাফল যাই হোক পরিশ্রম, একাগ্রতা, আন্তরিকতা পরিবর্তন হওয়া উচিত নয়। ১০-১৫ বছর খেলার পর বিষয়টা আরও ভাল বোঝা যায়। ফলাফল যাই হোক রুটিন বদলানো উচিত নয়। ফলাফল নির্ভর করে কঠোর পরিশ্রমের উপর। খেলার মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে যুক্ত থাকা যায়। দীর্ঘ দিন যুক্ত থাকতে হলে নিয়মিত পরিশ্রম করে যেতে হবে। সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।’’
আরও পড়ুন:
২০২৭ বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় থাকতে হলে এই সিরিজ়েই কোচ, নির্বাচকদের মন জয় করতে হবে দুই প্রাক্তন অধিনায়ককে। এই সিরিজ়ের পারফরম্যান্সের উপর নির্ভর করবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁদের ভবিষ্যৎ। বিশাখাপত্তনমে তৃতীয় এক দিনের ম্যাচের পর কোচ গৌতম গম্ভীর এবং প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকরের সঙ্গে বৈঠক করবেন বিসিসিআই কর্তারা। সেই বৈঠকেই ঠিক হয়ে যাবে রো-কো’র ভবিষ্যৎ।