Advertisement
E-Paper

সিএবি-র আর্থিক লেনদেনের হিসাব এবং সংবিধান সাধারণের নাগালের বাইরে! ‘স্বচ্ছতা’ নিয়ে প্রশ্নে সভাপতির জবাব, ‘বাধ্য নই’

প্রশ্ন উঠছে, নিয়মে থাকা সত্ত্বেও সিএবি তাদের অডিট রিপোর্ট এবং বিভিন্ন আর্থিক লেনদেনের হিসাব কেন জনসমক্ষে আনে না? সিএবি-র সংবিধানই বা কেন তাদের ওয়েবসাইটে থাকবে না, সেই প্রশ্নও উঠছে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৫ ১২:৫৩
CAB President Snehasish Ganguly. CAB Constitution.

সিএবি-র সংবিধানের অষ্টম অধ্যা। সংস্থার সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম

অভিযোগের পর্ব শেষ হচ্ছে না সিএবি-র বিরুদ্ধে। এ বার প্রশ্ন উঠেছে, নিয়মে থাকা সত্ত্বেও বাংলার ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা তাদের অডিট রিপোর্ট এবং বিভিন্ন আর্থিক লেনদেনের হিসাব কেন জনসমক্ষে আনে না? সিএবি-র সংবিধানই বা কেন তাদের ওয়েবসাইটে থাকবে না, সেই প্রশ্নও উঠছে। কারণ, সংস্থার সংবিধানেই বলা আছে, সেটি ওয়েবসাইটে রাখতে হবে। শুধু তা-ই নয়, বই আকারে প্রকাশ করতে হবে, যাতে যে কেউ টাকা দিয়ে সেটি কিনতে পারেন। অভিযোগ, সেই ব্যবস্থাও সিএবি করেনি।

সংস্থার সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য এই সমস্ত প্রশ্নেরই জবাবে বলছেন, এসব করতে তাঁরা ‘বাধ্য’ নন।

সিএবি-র সংবিধানের অষ্টম অধ্যায়টি ‘স্বচ্ছতা’ এবং ‘স্বার্থের সঙ্ঘাত’ নিয়ে। সেখানে ১১৭ নম্বর পাতায় ৬৬ নম্বর ধারায় আটটি উপধারা আছে।

১. সংস্থার মেমোরেন্ডাম, নিয়ম-বিধি, সিদ্ধান্ত, নির্দেশ (অ্যাপেক্স কাউন্সিল, জেনারেল ব়ডি-সহ) সাধারণ মানুষ যাতে যুক্তিগ্রাহ্য দামে পেতে পারেন, তার ব্যবস্থা করতে হবে। সংস্থার ওয়েবসাইটেও সেগুলি রাখতে হবে।

২. বিভিন্ন কমিটিতে কারা আছেন, তাঁদের কাজকর্ম, আর্থিক খতিয়ান এবং খরচ সংস্থার ওয়েবসাইটে তিন মাস অন্তর দিতে হবে।

৩. সংস্থার যাবতীয় পেমেন্ট (কোথাও টাকা দিলে) এবং ব্যয়, যার মূল্য ২৫ লক্ষ টাকার বেশি, ওয়েবসাইটে দিতে হবে।

৪. ওমবাড্সম্যান এবং নির্বাচনী আধিকারিকের সব কার্যধারা এবং সিদ্ধান্ত সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রতি বছর দিতে হবে।

৫. প্রতি বছর সংস্থার ওয়েবসাইটে অডিট করা অ্যাকাউন্ট, ব্যালান্স শিট, প্রফিট অ্যান্ড লস অ্যাকাউন্ট এবং বার্ষিক রিপোর্ট দিতে হবে।

৬. অডিটরের রিপোর্ট ওয়েবসাইটে থাকতে হবে।

৭. সিএবি-কে পাঠানো বা সিএবি-র তরফে দেওয়া সমস্ত নোটিস এবং দরপত্র (টেন্ডার) সঙ্গে সঙ্গে সংস্থার ওয়েবসাইটে দিতে হবে।

৮. আন্তর্জাতিক বা ঘরোয়া বা আইপিএলের ম্যাচে স্পনসরদের কত টিকিট দেওয়া হয় এবং বিনামূল্যে কোথায় কত টিকিট দেওয়া হয়, তা জানাতে হবে।

সিএবি-র ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা গেল, সংস্থার বিভিন্ন কমিটিতে যাঁরা আছেন, তাঁদের পুরো তালিকা সেখানে রয়েছে। ওয়েবসাইটে ‘টেন্ডার’ নামে আলাদা একটি বিভাগ রয়েছে। টেন্ডারের নোটিসও রয়েছে। কিন্তু এর বেশি আর কিছু দেখা গেল না। আয়ব্যয়ের কোনও হিসাব কোথাও নেই। টিকিটের কোনও হিসাবেরও উল্লেখ নেই। ওমবা়ড্সম্যান বা নির্বাচনী আধিকারিকের কোনও সিদ্ধান্তও ওয়েবসাইটে দেওয়া নেই। চোখে পড়ছে না অডিটরের রিপোর্টও।

সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস অবশ্য এই বিষয়গুলি মেনেই নিয়েছেন। কিন্তু পাশাপাশিই তাঁর বক্তব্য, সংস্থার ইতিহাসে যখন যিনিই সভাপতি থেকেছেন, কোনও দিনই ওয়েবসাইটে এ সব তথ্য দেওয়া হয়নি। তাঁর বরং যুক্তি, ‘‘আমরা বার্ষিক রিপোর্ট দিই। কিন্তু প্রত্যেকটা রিপোর্ট যদি ওয়েবসাইটে দিতে হয়, তা হলে তো সারা দিন এই কাজেই চলে যাবে! অন্য কোনও কাজ হবে না।’’ বস্তুত, স্নেহাশিস পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, আর্থিক লেনদেনের হিসাব তাঁদের কেন জনসমক্ষে আনতে হবে? তাঁর যুক্তি, ‘‘আমরা তো আরটিআই (তথ্যের অধিকার আইন)-এর আওতায় পড়ি না। কারণ, আমরা সরকারি অনুদান নিই না। তা হলে আমরা কেন অডিট রিপোর্ট, ব্যালান্স শিট সবাইকে জানাতে যাব? ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডও তো এটা করে না! আমরা এটা করতে বাধ্য নই।’’

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy