Advertisement
E-Paper

রবিবারও সিরাজ়ের বিশ্বাস ছিল ভারত জিতবে, ‘ইংল্যান্ড যখন ৩০০/৩ তখনও হাল ছাড়িনি’

ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজ় শেষে ‘খলনায়ক’ হয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু মহম্মদ সিরাজ অন্য ধাতুতে গড়া। তাঁর বোলিংয়ের সামনে ভেঙে পড়ল ইংল্যান্ডের প্রতিরোধ। সিরিজ় শেষে সিরাজই নায়ক।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৫ ১৬:৫০
picture of Mohammed Siraj

মহম্মদ সিরাজ। ছবি: পিটিআই।

রবিবার যেন হঠাৎ করেই ‘খলনায়ক’ হয়ে গিয়েছিলেন। তারও আগে লর্ডসে আউট হয়েও ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয় ভেঙে দিয়েছিলেন। সিরিজ় শেষে নিন্দিত হওয়ার মঞ্চ যেন সাজানোই ছিল মহম্মদ সিরাজের জন্য! সেই সিরাজ়ই নায়ক। নিজের যোগ্যতায় নায়ক। ক্রিকেটীয় দক্ষতায় নায়ক। সোমবার এক ঘণ্টায় ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডের স্বপ্নভঙ্গ করে সিরিজ় শেষে সিরাজই নায়ক।

লর্ডস টেস্টে ভারত হেরে গিয়েছিল ২২ রানে। সিরাজ আউট হওয়ায় শেষ হয়ে গিয়েছিল রবীন্দ্র জাডেজা এবং জসপ্রীত বুমরাহের নাছোড় লড়াই। সিরাজ নিজেও ৩০ বলের ইনিংসে ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন ইংল্যান্ডের জয়। পারেননি। পারেননি সেই হারের পর দু’রাত ঘুমোতে।

সেই লন্ডনের মাটিতেই পারলেন। পারলেন ওভালে। ইংল্যান্ডের প্রতিরোধ ভাঙলেন বল হাতে। শেষ দিন ৩ উইকেট নিয়ে রুদ্ধশ্বাস জয় এনে দিলেন ভারতকে। চাপে থাকা দলকে জেতানোর লক্ষ্য নিয়েই সোমবার মাঠে নেমেছিলেন সিরাজ। খেলার শেষ হওয়ার পর দীনেশ কার্তিককে বলেছেন, ‘‘খুব সাধারণ পরিকল্পনা ছিল। আলাদা কিছু ভাবিনি। লক্ষ্য ছিল শুধু সঠিক জায়গায় বল রাখার। তাতে আউট হলে হবে। ছয় হলেও হবে। ঠিক জায়গায় বল রেখেই সাফল্য এসেছে।’’

কথা বলার সময়ও হাঁপাচ্ছিলেন সিরাজ। আনন্দে ঠিক করে কথাই বলতে পারছিলেন না। গলা ধরে যাচ্ছিল। তবু হায়দরাবাদের জোরে বোলার যেন ফুটছিলেন। রবিবার হ্যারি ব্রুকের ক্যাচ ধরেও বাউন্ডারির দড়িতে পা দিয়ে ফেলেছিলেন। গোটা দেশে সমালোচিত হয়েছিলেন। সিরাজের ধরা ক্যাচ ব্রুককে সাজঘরে ফিরিয়ে দিলে, টেস্টটা চার দিনেই শেষ হয়ে যেতে পারত। সোমবার ৫৭ মিনিটের জন্য মাঠে নামতে হত না দু’দলকে। সেই ক্যাচ নিয়ে সিরাজের বক্তব্য, ‘‘ইংল্যান্ড তখন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মেজাজে ব্যাট করছিল। আমাদের লক্ষ্য ছিল বড় রান আটকানো। খেয়াল করিনি অতটা পিছিয়ে গিয়েছিলাম। ক্যাচ ধরার পরই বুঝেছিলাম দড়িতে পা ঠেকে গিয়েছে। ওই ঘটনা ম্যাচের রং বদলে দিয়েছিল। তবু আমরা কখনও হাল ছাড়িনি। তাই জয় এসেছে। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।’’ ভুল করলেও শেষ দেখে ছাড়তে চেয়েছিলেন সিরাজ। আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। হারার কথা মাথায় আনেননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘শেষ বলের আগে কখনও হাল ছাড়ি না। ইংল্যান্ড ৩ উইকেটে ৩০০ রান করার পরও হারার কথা ভাবিনি। ইতিবাচক থাকতে চেয়েছি। এই জয় তারই ফল।’’

অ্যান্ডারসন-তেন্ডুলকর ট্রফিতে ভারতের সেরা বোলার নিঃসন্দেহে সিরাজ। পাঁচটা টেস্টই খেলেছেন। উইকেট পেয়েছেন ২৩টা। দু’বার ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন। ১১০০-র বেশি বল করেছেন। সিরিজ়ে দু’দলের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বল করেছেন। ক্লান্তি উপেক্ষা করে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। বুমরাহের অনুপস্থিতিতে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, আকাশদীপ, অংশুল কম্বোজদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। প্রয়োজনের সময় উইকেট তুলেছেন। ইংল্যান্ডের ব্যাটারদের উপর মানসিক চাপ তৈরির চেষ্টা করেছেন। তাঁদের মনোযোগ নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। ইংরেজদের মোকাবিলা করেছেন কখনও নরমে, কখনও গরমে। যা যা তাঁর পক্ষে করা সম্ভব, সব করেছেন।

ইংল্যান্ডের দলে নেওয়া হয়নি মহম্মদ শামিকে। আগে থেকে জানা ছিল তিনটে টেস্ট খেলবেন বুমরাহ। ভারতীয় শিবির তাই লন্ডনের বিমানে ওঠা থেকেই তাকিয়েছিল সিরাজের দিকে। গৌতম গম্ভীর, শুভমন গিলদের সেই ভরসার মর্যাদা দিয়েছেন।

নিউ জ়িল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ়ে ভরাডুবির পর ইংল্যান্ডের মাটিতে ভারতীয় ক্রিকেটকে আলোকিত করলেন ৩১ বছরের ক্রিকেটার। সিরাজ মানেই তো আলো।

India vs England 2025 Test Series Mohammed Siraj
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy