Advertisement
E-Paper

সামনে ছিল লারার ৪০০ রানের বিশ্বরেকর্ড ছোঁয়ার হাতছানি, কেন ৩৬৭ রানে হঠাৎ ব‍্যাট ছাড়লেন মুল্ডার? জানালেন প্রোটিয়া অধিনায়ক

টেস্টে ব্রায়ান লারার ব্যক্তিগত ৪০০ রানের রেকর্ড ভেঙে দেওয়ার মুখে ছিলেন উইয়ান মুল্ডার। আচমকাই ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেন তিনি। ম্যাচের পর মুল্ডার খোলসা করলেন, কেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫ ২৩:০৯
cricket

ত্রিশতরানের পর মুল্ডার। ছবি: সমাজমাধ্যম।

টেস্টে ব্রায়ান লারার ব্যক্তিগত ৪০০ রানের রেকর্ড ভেঙে দেওয়ার মুখে ছিলেন উইয়ান মুল্ডার। মাত্র ৩৩ রান দূরে ছিলেন। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির সময় আচমকাই দলের ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেন তিনি। নজির গড়ার সামনে থাকা সত্ত্বেও মুল্ডারের এ হেন সিদ্ধান্তে অবাক হয়ে যায় ক্রিকেটবিশ্ব। ম্যাচের পর মুল্ডার জানালেন, লারার প্রতি সম্মান জানাতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে মার্ক টেলরের কথা, যিনি ডন ব্র্যাডম্যানের নজির বাঁচানোর জন্য তাঁর ব্যক্তিগত রান পেরিয়ে যাওয়ার আগেই ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেন।

দিনের খেলা শেষের পর মুল্ডারকে প্রশ্ন করা হয় ডিক্লেয়ার করা নিয়ে। প্রোটিয়া অধিনায়ক উত্তর দেন, “প্রথমত, আমি ভেবেছিলাম অনেক রান হয়ে গিয়েছে। এ বার আমাদের বল করা উচিত। দ্বিতীয়ত, ব্রায়ান লারা এক জন কিংবদন্তি। ওঁর মতো মাপের একজন ক্রিকেটারের কাছে যোগ্য ভাবেই এই নজির থাকা উচিত। যদি আবার আমার কাছে সুযোগ আসে, আবারও একই কাজ করব আমি। শুক্‌সের (দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ শুকরি কনরাড) সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। ও-ও একই কথা বলল। লারা কিংবদন্তি বলেই নজিরটা ওঁর নামের পাশে থাকা উচিত।”

১৯৯৮ সালে পেশোয়ারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৩৩৪ রানে অপরাজিত থাকাকালীন ডিক্লেয়ার করে দিয়েছিলেন তিনি। ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানকে সম্মান জানাতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। টেস্টে ব্র্যাডম্যানেরও সর্বাধিক রান ৩৩৪।

প্রথম দিনের খেলার শেষের দিকে আউট হয়ে গিয়েছিলেন মুল্ডার। নো-বল হওয়ায় সে যাত্রা বেঁচে যান। তবে ওই আউটই তাঁর মানসিকতা বদলে দিয়েছে বলে জানালেন তিনি। মুল্ডারের কথায়, “গত কাল নো-বলে বোল্ড হওয়ার পর মাথায় অনেক চিন্তা ভিড় করে এসেছিল। তার মধ্যে ইতিবাচক ভাবনাও ছিল। আমি সেটাই বেশি করে ভাবার চেষ্টা করছিলাম। আজ খেলতে নামার পর গুনগুন করে গান গাইছিলাম। প্রাতরাশের সময় কেউ আমাকে বলল, অধিনায়ক হিসাবে অভিষেক হওয়ার পর সর্বোচ্চ ইনিংস ২৭৭। ওটা পেরোনো প্রথম লক্ষ্য ছিল। তার পর হাশের (হাশিম আমলা) নজির ভেঙে ফেলে বুঝলাম ৩১২ রানে দাঁড়িয়ে আছি।”

কী গান গাইছিলেন তিনি? মৃদু হেসে মুল্ডারের উত্তর, “আগে বাংলাদেশ সফরে গিয়ে আফ্রিকান্স ভাষার একটি গান গেয়েছিলাম। আজ ক্র্যানবেরি ব্যান্ডের জ়োম্বি গানটা গাইছিলাম।”

জীবনের কঠিন সময়ে কী ভাবে দক্ষিণ আফ্রিকা বোর্ডের সাহায্য পেয়েছেন তা-ও উঠে এসেছে মুল্ডারের কথায়। বলেছেন, “দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলা শুরু করার সময় মোটেও ভাল ক্রিকেটার ছিলাম। ওরা অনেক সুযোগ দিয়েছে আমায়। প্রাক্তন ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলিয়ে নিজের খেলা আরও নিখুঁত করতে সাহায্য করেছে। তার পর ইংল্যান্ডে গিয়ে ক্রিকেটের টেকনিক্যাল দিকগুলো নিয়ে পরিশ্রম করি। বুঝতে পারি কী ধরনের ক্রিকেটার হতে পারি। এ ছাড়া জ়িম্বাবোয়ের কোচ জাস্টিন সিমন্স আমায় খুব সাহায্য করেছেন। বিশেষ করে শর্ট বল মোকাবিলা করার ব্যাপারে।”

দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটারদের মধ্যে টেস্টে সর্বাধিক রানের ইনিংস খেলেছেন মুল্ডার। এর আগে হাশিম আমলা ৩১১ রান করেছিলেন। এক টেস্টেও প্রোটিয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বাধিক রান মুল্ডারের। এর আগে ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৩৬২ রান করেছিলেন গ্রেম স্মিথ। এক ইনিংসেই তাঁকে টপকে গিয়েছেন মুল্ডার। বিদেশের মাটিতে টেস্টে এক ইনিংসে সর্বাধিক রানও মুল্ডারের। ১৯৫৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের হানিফ মহম্মদ ৩৩৭ রান করেছিলেন। সেটাই ছিল এত দিন রেকর্ড। তা ভেঙে ফেলেছেন মুল্ডার। তার পরেই ব্যাট ছেড়ে দেন তিনি।

Wiaan Mulder Brian Lara
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy