Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Cricket

তীব্র আর্থিক সঙ্কট, প্রশাসনিক ডামাডোল, ২০২৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করতে পারবে এই দেশ?

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই সমস্যায় জেরবার এই দেশের ক্রিকেট। আগের কমিটি ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে চাওয়া থেকেই সমস্যার শুরু। আইসিসির হুঁশিয়ারিতেও কাজ হয়নি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২২ ২০:২২
Share: Save:

২০২৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অন্যতম আয়োজক আমেরিকা। অথচ ইউএসএ ক্রিকেট কার্যত নিষ্ক্রিয়। ইন্টারন্যশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের হুঁশিয়ারি, আর্থিক নির্বাসনেও বদলায়নি পরিস্থিতি। চূড়ান্ত ডামাডোলের মধ্যে আমেরিকার ক্রিকেটই প্রশ্নের মুখে।

আমেরিকার ক্রিকেট বোর্ডের অন্তর্বর্তী চেয়ারম্যান হিসাবে কিছু দিন আগে দায়িত্ব নিয়েছেন অতুল রাই। প্রাক্তন চেয়ারম্যান পরাগ মারাঠের পর তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন। ইউএসএ ক্রিকেটের সাধারণ নির্বাচনের পর অতুল সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। আগামী ৯ অক্টোবরের বৈঠকে বর্তমান অচলাবস্থা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। উল্লেখ্য, আগের কমিটি বিশ্বকাপ আয়োজনের সুবাদে মুনাফা এবং কৃতিত্ব লাভের আশায় ক্ষমতা ছাড়তে না চাওয়ায় প্রশাসনিক অচলাবস্থা তৈরি হয় ক্রিকেট ইউএসএ-তে।

অতুল বলেছেন, ‘‘আইসিসি এবং ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের সঙ্গে কথা বলছি। ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের যুগ্ম আয়োজক হিসাবে আমরা যাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারি, তা নিয়ে আলোচনা করছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের সঙ্গে যুগ্ম আয়োজক হিসাবে ইউএসএ ক্রিকেটকে দেখা যাবে।’’ উল্লেখ্য, আইসিসি ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে যুগ্ম ভাবে আমেরিকাকে দেওয়ার পর থেকেই ডামাডোল শুরু ইউএসএ ক্রিকেটে। যে কারণে এখনও পর্যন্ত আমেরিকার সঙ্গে যুগ্ম ভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে সরকারি ভাবে কিছু জানাননি ওয়েস্ট ইন্ডি‌জ়ের ক্রিকেট কর্তারা। নিজেদের সমস্যার জন্য আমেরিকার ক্রিকেট কর্তারাও আগ বাড়িয়ে কিছু বলার মতো জায়গায় নেই।

কয়েক মাস আগে আইসিসির সিইও জিওফ অ্যালার্ডিস আমেরিকায় গিয়েছিলেন। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি এবং ম্যাচের সম্ভাব্য কেন্দ্রগুলি পরিদর্শনের পাশাপাশি আমেরিকার ক্রিকেটের সমস্যা বোঝার চেষ্টা করেন। তার পর ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের তরফে বিশ্বকাপের ম্যাচ আয়োজনের কিছু প্রশাসনিক দায়িত্ব আমেরিকার স্থানীয় আয়োজকদের দিতে শুরু করা হয়েছে। ইউএসএ ক্রিকেটে প্রশাসনিক ডামাডোলের জন্য তাদের এড়িয়ে সমাধানের পথ খোঁজার চেষ্টা করছেন ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট কর্তারা।

আমেরিকার ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার আর্থিক এবং প্রশাসনিক অচলাবস্থা মেটার তেমন ইঙ্গিত এখনও পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি সামলাতে ইউএসএ ক্রিকেটের উপর কিছু দিন আর্থিক নির্বাসন জারি করে আইসিসি। তাতেও পরিস্থিতি বদলায়নি। ডামাডোলের ফলে নির্দিষ্ট সময়ের ১৭ মাস পর নির্বাচন হয় আমেরিকার ক্রিকেটে। একই কারণে গত ডিসেম্বরে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে তিন ম্যাচের এক দিনের সিরিজ়ও বাতিল হয়ে যায়। তাতে প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হয়েছে আমেরিকার ক্রিকেট সংস্থার। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় আড়াই লক্ষ ডলার (ভারতীয় টাকায় প্রায় দু’কোটি টাকা)।

অন্তর্বর্তী চেয়ারম্যান অতুল বলেছেন, ‘‘গত আর্থিক বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের হিসাব ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত জমা দেওয়া হয়নি। ২০২২ সালের ৩০ জুনের মধ্যে ২০২০-২১ আর্থিক বছরের অডিট রিপোর্টও জমা দেওয়া হয়নি। যা ছিল আইসিসির দেওয়া চূড়ান্ত সময়সীমা। আগেও আইসিসির একাধিক সময়সীমার মধ্যে হিসাব দিতে পারেনি ইউএসএ ক্রিকেট। ২০২১ সালের বার্ষিক সাধারণ সভাও হয়নি। ২০২০ সালের বার্ষিক সাধারণ সভা হয় ২০২১ সালের মে মাসে। নির্দেশ অমান্য করায় আইসিসি আমাদের তিনটি ত্রৈমাসিকের অনুদান বন্ধ করে দেয়।’’

ক্রিকেটার এবং সংস্থার কর্মীদের কয়েক মাসের বেতনও বকেয়া রেখেছিলেন ইউএসএ ক্রিকেটের কর্তারা। আইনি সমস্যা এড়াতে নির্বাচনের আগে ক্রিকেটার এবং কর্মীদের বেতন বাবদ তিন লক্ষ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় দু’কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা) মঞ্জুর করেছিলেন প্রাক্তন চেয়ারম্যান মারাঠে। অতুল বলেছেন, ‘‘আমাদের ক্রিকেট সংস্থার আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। ক্রিকেটার বা কর্মীদের বেতন দেওয়ার মতো টাকাও আমাদের কাছে নেই। দেনা মিটিয়ে আগামী এক বছরের খরচ চালাতে আমাদের তিন লক্ষ ৯৯ হাজার ডলার (প্রায় তিন কোটি ২৪ লক্ষ টাকা) প্রয়োজন। কিন্তু কী ভাবে অর্থের ব্যবস্থা হবে জানি না। তবু আমরা সব রকম ভাবে চেষ্টা করছি সুষ্ঠু ভাবে বিশ্বকাপ আয়োজনের। কারণ ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আমেরিকার ক্রিকেটের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE