E-Paper

মরসুম জুড়ে এই পিচই চাই, জিতে বললেন বেঙ্কটেশ

প্রত্যেকটি কেন্দ্রেই ঘরের মাঠের সুবিধে অনুযায়ী পিচ তৈরি হচ্ছে। চেন্নাইয়ের এম এ চিদম্বরম স্টেডিয়ামের পিচ বরাবরই স্পিন-সহায়ক। চেন্নাই সুপার কিংসও স্পিন-নির্ভর দল।

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:৪৭
স্বস্তি: জয়ের পরে শামির সঙ্গে রিঙ্কু, রাসেলরা। বৃহস্পতিবার।

স্বস্তি: জয়ের পরে শামির সঙ্গে রিঙ্কু, রাসেলরা। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।

মনের মতো পিচ পেয়ে খুশি কলকাতা নাইট রাইডার্সের ক্রিকেটারেরা। বৃহস্পতিবার ইডেনে সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদকে ৮০ রানে হারিয়ে স্বস্তিতে কেকেআর। ম্যাচ জেতার পরে এক গাল হাসি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে আসেন বেঙ্কটেশ আয়ার। তাঁর চোখে-মুখে জেতার আনন্দ স্পষ্ট ফুটে উঠছিল।

সাংবাদিক বৈঠকে তাঁকে প্রথমেই প্রশ্ন করা হয় পিচ নিয়ে। যা নিয়ে বেঙ্কটেশ বলেন, ‘‘এই পিচে জিতেছি। মরসুম জুড়ে এ রকম পিচ পেলে অবশ্যই ভাল লাগবে।’’ যোগ করেন, ‘‘তবে পিচকে বেশি গুরুত্ব না দেওয়ারই চেষ্টা করি। পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলা উচিত। এই পরিবেশে আমাদের বোলাররা অসাধারণ বল করেছে। প্রত্যেকে পিচের ফায়দা তুলেছে। দল জেতায় আমি সত্যি খুশি।’’

প্রত্যেকটি কেন্দ্রেই ঘরের মাঠের সুবিধে অনুযায়ী পিচ তৈরি হচ্ছে। চেন্নাইয়ের এম এ চিদম্বরম স্টেডিয়ামের পিচ বরাবরই স্পিন-সহায়ক। চেন্নাই সুপার কিংসও স্পিন-নির্ভর দল। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের পিচে সুবিধে পান ব্যাটসম্যানেরা। বিরাট কোহলিদের জন্য আদর্শ পিচ তৈরি হয় সেখানে। বৃহস্পতিবার থেকে কেকেআরও কি তাদের পছন্দ মতো পিচ পেতে শুরু করল? প্রথম ইনিংসের বিরতির পরে বেঙ্কটেশই বলেছিলেন, ‘‘বল থমকে ব্যাটে আসছিল। শেষ কয়েক বছরে ইডেনে এমন পিচ দেখা যায়নি।’’ হায়দরাবাদ ম্যাচের পরে আশা করাই যায়, আগামী ম্যাচগুলোতেও পিচ থেকে এমনই সাহায্য চাইবেন নাইট ক্রিকেটারেরা। নাইট অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে তো বলেই দিয়েছেন, ‘‘আমি খুব খুশি। ঘরের মাঠে আমাদের যে ধরনের সুবিধে প্রয়োজন, সেটা পাওয়াই উচিত। আমাদের শক্তি স্পিনার, সে রকমই বাইশ গজ আশা করি।’’

এ দিনের পর থেকে পিচ নিয়ে চর্চা হয়তো কমবে। স্বস্তি পাবেন বেঙ্কটেশও। ২৩.৭৫ কোটি টাকায় তাঁকে কেকেআর নেওয়ার পরে বড় রান পাচ্ছিলেন না। ‘অর্থের চাপেই কি পাচ্ছেন না রান?’ বার বার এ ধরনের প্রশ্ন তাড়া করছিল তাঁকে। এ দিন ২৯ বলে ৬০ রানের ইনিংস উপহার দেন। কঠিন পরিস্থিতি থেকে বার করে আনেন দলকে। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বেঙ্কটেশ বলেন, ‘‘দলের সর্বোচ্চ দরের ক্রিকেটার মানেই প্রত্যেক ম্যাচে বড় রান করব, তা তো হয় না। তবে হ্যাঁ, চাপে অবশ্যই ছিলাম। এই ইনিংসের পরে কিছুটা স্বস্তিবোধ করছি।’’

রিঙ্কু সিংহের সঙ্গে ৯১ রানের জুটি গড়ে দলকে ২০০ রানে পৌঁছে দিতে সাহায্য করেন বেঙ্কটেশ। যদিও দলের এই সাফল্যের জন্য অজিঙ্ক রাহানে ও অঙ্গকৃশ রঘুবংশির জুটিকেই কৃতিত্ব দিলেন সহ-অধিনায়ক। বলছিলেন, ‘‘এই পিচে ব্যাট করতে নেমেই শট খেলা সম্ভব নয়। জিঙ্কস ভাই (রাহানে) ও অঙ্গকৃশ আমাদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল। আমি আর রিঙ্কুও শুরুটা মন্থর করেছিলাম। ধীরে ধীরে ইনিংসের গতি বাড়াই। হায়দরাবাদের মতো দলের বিরুদ্ধে কোনও রানই নিরাপদ নয়। চেয়েছিলাম, এই মাঠের গড়পড়তা রানের চেয়ে ২০ বেশি করতে। জানতাম হায়দরাবাদ অতি-আক্রমণাত্মক দল। এই ধরনের দলের দ্রুত উইকেট পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আমাদের লক্ষ্য ছিল ওদের সেই ফাঁদে ফেলার।’’

বেশ কয়েকটি ম্যাচ পরে রানে ফিরলেন রিঙ্কুও। আইপিএলে কেকেআরের হয়ে এ দিন ৫০তম ম্যাচ খেললেন তিনি। নাইট পরিবার থেকে তাঁকে একটি বিশেষ জার্সি উপহার দেওয়ার হয়। যার পেছনে লেখা ‘৫০’। রিঙ্কুর প্রশংসা করে বেঙ্কটেশ বলেন, ‘‘এক দিক থেকে ও যদি সাবলীল ব্যাটিং না করত, এত বড় রান উঠত না। এই জয়ের নেপথ্যে ওর কৃতিত্বও কম নয়।’’

সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদ এ দিন জিততে না পারলেও একটি চমক দেয় ইডেনে। ‘থ্রি ইডিয়টস’-এ ‘ভাইরাস’-কে নিশ্চয়ই কেউ ভোলেননি। দু’হাতে সমান গতিতে লিখতে পারতেন। বৃহস্পতিবারের ইডেনে তেমনই চমক দেখা গেল। শ্রীলঙ্কার তরুণ অলরাউন্ডার কামিন্দু মেন্ডিস একই ওভারে দু’হাতে বল করে অবাক করলেন ইডেনের দর্শকদের।

আইপিএলে এমন দৃশ্য আগে কখনও দেখা যায়নি। একই ওভারে ডান হাতি ব্যাটসম্যানকে বল করছিলেন বাঁ-হাতে। বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানকে বল করছিলেন ডান হাতে। বাঁ-হাতি স্পিনার হিসেবে অঙ্গকৃশ রঘুবংশির উইকেট নিয়ে চমকে দিলেন তিনি। অঙ্গকৃশকে বাঁ-হাতে বল করে আউট করার পরের বলই তিনি করেন ডান হাতে। আইপিএল ইতিহাসে প্রথম সব্যসাচী স্পিনার হিসেবে উইকেট পেলেন তিনি।

মূলত অনিয়মিত স্পিনার মেন্ডিস। শ্রীলঙ্কা তাঁকে ব্যাটসম্যান হিসেবেই খেলায়। ১২টি টেস্টে পাঁচটি শতরান আছে তাঁর। ইংল্যান্ডের মাটিতেও শতরান করেছিলেন। কিন্তু আইপিএল তাঁকে চিনল ভিন্ন চরিত্রে। বৃহস্পতিবার থেকে তিনিই আইপিএলের ‘ভাইরাস’।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

KKR Venkatesh Iyer IPL Match

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy