হেডকে আউট করার পর জাডেজাকে অভিনন্দন রোহিতের। ছবি: আইসিসি।
টেস্ট বিশ্বকাপ ফাইনালের দ্বিতীয় দিনের শেষে ইনিংসে হারের আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে। ভরসা ছিলেন ১৮ মাস পর ভারতীয় দলে ফেরা অজিঙ্ক রাহানে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তির বাইরে চলে যাওয়া সেই ব্রাত্য রাহানেই মান বাঁচালেন।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে আইপিএলে অন্যতম চমক ছিলেন রাহানের। তাঁর চরিত্র বিরোধী ব্যাটিং চমকে দিয়েছিল অনেককেই। রঞ্জি ট্রফিতে ভাল পারফরম্যান্স করার পরেও যে রাহানের কথা ভাবেননি জাতীয় নির্বাচকরা, আইপিএলের সময় তাঁরাই নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হন। টেস্ট বিশ্বকাপ ফাইনালের দল ঘোষণার আগে নাকি ধোনির কাছে রাহানে সম্পর্কে জানতেও চেয়েছিলেন তাঁরা। ঋষভ পন্থ, শ্রেয়স আয়ারদের অনুপস্থিতিতে রাহানের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটারকে আর অবজ্ঞা করতে পারেননি নির্বাচকরা। ধোনির আশ্বাস তাঁদের নিশ্চিত করে। রোহিত শর্মার নেতৃত্বে বিলেতগামী ভারতীয় দলে জায়গা পান রাহানে। সেই রাহানেই মান বাঁচালেন। মান বাঁচাল তাঁর ঝকঝকে ৮৯ রানের ইনিংস। একই সঙ্গে রাহানে টেস্ট ক্রিকেটে পূর্ণ করলেন ৫০০০ রান।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দীর্ঘ দিন পর ফিরে রাহানে নিখুঁত ইনিংস খেলেছেন বললে ভুল হবে। সুযোগ দিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া কাজে লাগাতে পারেনি। সেই দায় প্যাট কামিন্সদের। এ সব খেলারই অঙ্গ। পরিস্থিতির বিচারে ভারতের কাছে তাঁর ৮৯ রানের ইনিংস মহার্ঘ্য। একই রকম গুরুত্বপূর্ণ শার্দূল ঠাকুরের ৫১ রানের ইনিংস। কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রাক্তন এবং বর্তমান সদস্যের ১০৯ রানের জুটি ইংল্যান্ডের মাটিতে মুখ রক্ষা করল ভারতের। তবু ফলোঅনের আশঙ্কা নির্মূল করে মাঠ ছাড়তে পারেননি রাহানে। বাকি কাজটুকু করলেন শার্দূল। শেষ বেলায় মহম্মদ শামির (১১ বলে ১৩) ছোট ঝোড়ো ইনিংসের কথাও বলতে হবে। রাহানে-শার্দূল জুটি ভাঙার পর ভারতীয় ইনিংস বেশিক্ষণ টেকেনি। সম্ভাবনাও ছিল না। রাহানে এবং শেষ দিকের ব্যাটারদের লড়াইয়ের সুবাদে ২৯৬ রানে শেষ হয় ভারতের প্রথম ইনিংস। অস্ট্রেলিয়ার ৪৬৯ রান থেকে ১৭৩ কম।
টেস্ট বিশ্বকাপ ফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ১৭৩ রানে এগিয়ে থাকা বড় সুবিধা। সেই সুবিধা নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামেন প্যাট কামিন্সরা। অজিরা প্রথম ইনিংসের মতো ব্যাট করতে পারলেন না দ্বিতীয় ইনিংসে। ব্যর্থ হলেন দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার (১) এবং উসমান খোয়াজা (১৩)। বড় রান পেলেন না প্রথম ইনিংসের দুই শতরানকারী স্টিভ স্মিথ (৩৪) এবং ট্যাভিস হেডও (১৮)। দু’জনকেই আউট করলেন রবীন্দ্র জাডেজা। তৃতীয় দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়ার রান ৪ উইকেটে ১২৩। প্যাট কামিন্সরা এগিয়ে রয়েছেন ২৯৬ রানে।
রাহানে-শার্দূলের ব্যাট হাতে লড়াইয়ের পর ভারতকে লড়াইয়ে রাখার চেষ্টা করলেন বোলাররাও। অজি ব্যাটারদের চাপে রাখার চেষ্টা করলেন। জাডেজা ছাড়াও মহম্মদ শামি, মহম্মদ সিরাজরা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে চাপে রাখার চেষ্টা করলেন প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের। যদিও হার বাঁচাতে হলে কঠিন লড়াই করতে হবে ভারতীয় দলকে। শনিবার রোহিতদের লক্ষ্য থাকবে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস যত দ্রুত সম্ভব শেষ করে দেওয়া। চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করতে হবে ভারতকে। জয়ের লক্ষ্য খুব বড় হয়ে গেলে কাজ আরও কঠিন হয়ে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy