Advertisement
E-Paper

উয়েফাকে নিয়ম পাল্টাতে বাধ্য করলেন রোনাল্ডো

লেকের জলে মাইক্রোফোন বিসর্জন। দেশের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভাব। একজোড়া ইউরো রেকর্ড। আর মাত্র একটা সাংবাদিক সম্মেলনেই বুঝিয়ে দেওয়া যে, তিনি কারও কথামতো চলেন না। বরং বাকিরা তাঁর ইচ্ছের সামনে মাথা নত করতে বাধ্য হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৬ ০৯:৩৩
বিমানে টিম পর্তুগাল। বৃহস্পতিবার। ছবি: টুইটার।

বিমানে টিম পর্তুগাল। বৃহস্পতিবার। ছবি: টুইটার।

লেকের জলে মাইক্রোফোন বিসর্জন। দেশের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভাব। একজোড়া ইউরো রেকর্ড। আর মাত্র একটা সাংবাদিক সম্মেলনেই বুঝিয়ে দেওয়া যে, তিনি কারও কথামতো চলেন না। বরং বাকিরা তাঁর ইচ্ছের সামনে মাথা নত করতে বাধ্য হয়।

সব মিলিয়ে বুধবারটা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর জীবনে অন্যতম নাটকীয় দিন ছিল বললে খুব ভুল হবে না। পাশাপাশি এটাও বলে রাখা যায় যে, সিআর সেভেন মাঠে যতটা রাজকীয় মেজাজে চলাফেরা করেন, মাঠের বাইরেও ঠিক ততটাই। এবং পুরো ব্যাপারটাই যেন তাঁর সহজাত। পরপর চারটে ইউরোয় গোল করার রেকর্ড, ইউরোয় রেকর্ড সতেরো ম্যাচ খেলা নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে যেমন সহজেই বলে দিতে পারেন, ‘‘ওহ, এ সব তো খুব স্বাভাবিক।’’ ঠিক ততটাই সহজে স্বদেশীয় এক সাংবাদিকের খুব মামুলি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে সটান তাঁর হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে ছুড়ে দিতে পারেন পাশের লেকে!

ইউরোয় পর্তুগাল মানেই এত দিন ছিল ‘রোনাল্ডো শো’। আইসল্যান্ডের সঙ্গে ১-১ ড্র করে ‘‘এই জন্যই ওরা ইউরোয় কিছু করতে পারবে না’’ বলে বিরক্তি প্রকাশ করা হোক বা তার পর অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে পেনাল্টি ফস্কানো— বুধবারের আগেও তিনি শিরোনামে ছিলেন, কিন্তু যথাযথ কারণে নয়। এর সঙ্গে আবার যোগ হয়েছিল হাঙ্গেরি ম্যাচের আগে তাঁর ক্ষোভ প্রকাশ।

পর্তুগালের একটি টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক দিওগো তোরেস ম্যাচের আগে রোনাল্ডোকে জিজ্ঞেস করেন, ম্যাচের জন্য তৈরি আছেন তো? খুব সহজ, স্বাভাবিক প্রশ্ন। যা শুনেই যেন তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন রোনাল্ডো। সাংবাদিকের হাত থেকে মাইক কেড়ে নিয়ে পাশের লেকে ছুড়ে ফেলে দেন। প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই। যা দেখেশুনে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছিল যে, ছন্দে না থাকায় মেজাজ বিগড়ে আছে তাঁর।

হাঙ্গেরির সঙ্গে ৩-৩ ড্রয়ের ম্যাচে দু’দুটো গোল করার পরে যদি ভেবে থাকেন রোনাল্ডোর ভেতরের আগুন নিশ্চয়ই কমেছে, তা হলে কিন্তু ভুল ভাববেন।

বুধবার মাঠে উপস্থিত সাংবাদিকরা ধরে নিয়েছিলেন, রোনাল্ডোকে প্রশ্ন করার সুযোগ পাবেন। কারণ তিনিই ম্যাচের সেরা, এবং উয়েফার নিয়মে তাঁকে সাংবাদিকদের সামনে আসতেই হবে। কিন্তু লিয়ঁ মাঠে উয়েফার প্রেস অফিসার তড়িঘড়ি এসে জানিয়ে দেন, একমাত্র তিনিই রোনাল্ডোকে প্রশ্ন করবেন। স্বাভাবিক ভাবেই তর্কাতর্কি শুরু হয়ে যায়। অনেকে রোনাল্ডোর প্রেস কনফারেন্স বয়কট করার দাবিও তোলেন। উয়েফারই আর এক সদস্য প্রেস অফিসারকে নিয়ম বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাঁর কাছে গিয়ে বলেন, নিয়ম তো মানতেই হবে।

কিন্তু কোথায় কী! উয়েফার সেই সদস্যকে প্রেস কনফারেন্স রুমে আর দেখাই যায়নি। উল্টে রোনাল্ডো এসে সেই প্রেস অফিসারেরই একটা প্রশ্নের উত্তর দেন। বলেন, ‘‘ম্যাচের সেরা হওয়াটা গর্বের। কিন্তু আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল ম্যাচটা জেতা। সেটা করতে পারিনি, কিন্তু পরের রাউন্ডে উঠতে পেরেছি। আমরা ভাল খেলেছি। মাঝে মাঝে পাগলের মতো অবস্থা হয়ে যাচ্ছিল। ব্যক্তিগত ভাবে আমি খুশি কারণ আমার টিম বিপদে ছিল। এখন পরের রাউন্ডে আমাদের সামনে দারুণ একটা টিম। জিততে হবে।’’

বলে বেরিয়ে যেতে যেতে প্রচুর প্রশ্ন ধেয়ে আসে তাঁর দিকে। সিআর সেভেন অবশ্য বলেন, ‘‘আমি কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। বাইরে কথা বলব।’’ উপস্থিত মিডিয়া ধরে নেয় যে, মিক্সড জোনে অন্তত পাওয়া যাবে তাঁকে। রোনাল্ডো কিন্তু সেই মিক্সড জোনটাও এড়িয়ে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এক উয়েফা কর্তা তাঁকে মিক্সড জোনের দিকে নিয়ে এলে খানকয়েক সেলফি তুলে পাট চুকিয়ে দেন রোনাল্ডো।

যা দেখে গোটা বিশ্বের মিডিয়ায় বলাবলি হচ্ছে যে, রোনাল্ডো মোটেই উয়েফার কথা মেনে চলে না। উল্টে উয়েফাকে বাধ্য করেন তাঁর নিজের ইচ্ছেমতো চলতে। আর মাঠ হোক বা মাঠের বাইরে, রোনাল্ডো শো-এ ইন্টারভাল বলে কোনও ব্যাপার নেই।

portugal euro cup 2016 UEFA Cristiano Ronaldo
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy