যুযুধান: ইডেনে প্রস্তুতিতে আন্দ্রে রাসেল এবং চেন্নাইয়ের সুরেশ রায়না। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
ইডেনে ডাগআউটে বসে চেন্নাই সুপার কিংসের (সিএসকে) কোচ স্টিভন ফ্লেমিং তাঁর নোটবইয়ে চোখ বোলাচ্ছিলেন বুধবার সন্ধ্যায়। কী কী লেখা থাকতে পারে ওই নোটবইয়ের পাতায়?
হয়তো এ রকম। বৃহস্পতিবার ইডেনে যা যা করতে হবে: ১) নিশানায় সুনীল নারাইন, ক্রিস লিন ও আন্দ্রে রাসেল। এদের বড় শট নিতে দেওয়া চলবে না। তাড়াতাড়ি আউট করে ফেরাতে হবে।
২) নীতীশ রানাকে (যদি কাল সুস্থ হয়ে মাঠে নামেন) নিয়ে আলাদা ছক তৈরি করতে হবে।
৩) সুনীল নারাইন, কুলদীপ যাদব ও পীযূষ চাওলা— এই তিন স্পিনারকেও খুব সাবধানে সামলাতে হবে। একটু অসাবধান হলেই কিন্তু ওরা চরম সমস্যায় ফেলতে পারে।
৪) তিন স্পিনারের ১২ ওভারে হিসেব কষে ঝুঁকি নিয়ে শট নিতে হবে ব্যাটসম্যানদের।
ঘণ্টা দুয়েক আগে সাংবাদিক বৈঠকে যা যা বলেছেন ফ্লেমিং, এই কাল্পনিক নোটগুলি তার ভিত্তিতেই।
আট ম্যাচের মধ্যে ছয়টি জিতে তাঁরা লিগ তালিকায় সবার উপরে। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি নামের এক জন অধিনায়ক ও ফিনিশার রয়েছেন দলে। সুরেশ রায়নার মতো টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ ফর্মে ফিরেছেন সদ্য। অম্বাতি রায়ডু প্রায়ই ব্যাটে ঝড় তুলছেন। তা সত্ত্বেও কলকাতা নাইট রাইডার্সকে কেন এত সমীহ করছেন ধোনিরা? কারণগুলো লেখার শুরুতে কাল্পনিক নোটবইয়েই লেখা রয়েছে।
অন্য দিকে, শোনা গেল, ধোনিকে আটকাতে কী করবেন, সেই ছক কষা চলছে নাইটদের শিবিরে। দলের তরুণ পেসার শিবম মাভি বললেন, ‘‘ওঁর দুর্বল জায়গাগুলো খুঁজে বার করার চেষ্টা করছি। এই জায়গাগুলোতেই আঘাত করতে হবে আমাদের।’’ পাঁচ দিন আগে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার যাঁর শেষ ওভারে ২৯ রান তুলেছিলেন, সেই মাভির সাহসী মন্তব্য, ‘‘সিএসকের অভিজ্ঞতা আছে ঠিকই। কিন্তু আমরাও ভাল খেলছি। ওদের দুর্বল জায়গায় আঘাত করতে পারলে আমরাই জিতব।’’ এই আত্মবিশ্বাস নাকি ফেরত এসেছে যুব দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের ফোনে। নিজেই সে কথা জানালেন নয়ডাজাত তরুণ পেসার।
ধোনিদের কোচ ফ্লেমিং বলেন, ‘‘অন্যদের চেয়ে মোটেই কম ভয়ঙ্কর নয় নাইটরা। নিজেদের সেরা খেলা না খেললে ম্যাচ আমাদের হাত থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। মিডল অর্ডারে নীতীশ রানা বেশ ভাল খেলছে। লিন, নারাইন ম্যাচ জেতাতে পারে। রবিন উথাপ্পা, দীনেশ কার্তিকও আছে। আন্দ্রে রাসেলের প্রভাব মারাত্মক। আমাদের বোলারদের এক মুহূর্তও গা ছাড়া ভাব দেখানো যাবে না। আর স্পিনাররা ওদের প্রধান অস্ত্র। ওদের বিরুদ্ধে ঝুঁকি নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।’’ নীতীশ রানাকে নিয়ে নাইট শিবির কিছুটা অস্বস্তিতে। তাঁর পিঠের ব্যথা বৃহস্পতিবারের মধ্যে সারবে কি না, সেটাই দেখার।
নোটবই দেখে ফ্লেমিংকে চিন্তিত দেখালেও মাঠের একটি ঘটনা তাঁকে স্বস্তি দেওয়ার মতোই। নেটের বাইরে এক প্র্যাকটিস পিচে স্টাম্প পুঁতে অন্যদের সঙ্গে বোলিং অনুশীলন করছিলেন লুঙ্গি এনগিডি। পরপর দশটি বলের মধ্যে সাতটিই স্টাম্প ছোঁয়ালেন দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন পেস তারকা। ২১ বছরের দীর্ঘদেহী পেসারের এই কাণ্ড দেখে কোচের চেয়ে বেশি খুশি আর কে হতে পারে? এই পেসার সম্পর্কে আশাবাদী ফ্লেমিং বলেন, ‘‘বাবার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছিল ছেলেটা। কিন্তু ফিরে এসে অসাধারণ বোলিং করছে। ইডেনের পরিবেশ ও উইকেটে ওর বোলিংয়ের ধার আরও বাড়বে নিশ্চয়ই।’’
এই দৃশ্য দেখতে অবশ্য এ দিন মাঠে ছিলেন না মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। শ্বশুরবাড়ির শহরে এসে তিনি সারা দিন বিশ্রাম করলেন। হরভজন সিংহ, রায়ডুও বিশ্রামে। সুরেশ রায়না, রবীন্দ্র জাডেজা, ফ্যাফ ডুপ্লেসিরা অবশ্য জমিয়ে অনুশীলন করলেন। নাইটদের নেটেও রাসেল, নারাইন ছাড়া অন্য তারকারা অনুপস্থিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy