ওয়ার্নার। সিডনিতে সেঞ্চুরির পরে।
এক দিকে, অতীত কিংবদন্তিদের সঙ্গে এক পংক্তিতে বসে পড়া অভিজ্ঞ ডেভিড ওয়ার্নারের। অন্য দিকে, অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ভবিষ্যৎ হিসেবে ম্যাট রেনশ নামক তরুণের উঠে আসা।
দুই ওপেনারের দাপটে পাকিস্তান বনাম অস্ট্রেলিয়া তৃতীয় টেস্টের প্রথম দিনটা ব্যাগি গ্রিনের দখলেই থাকল।
টেস্ট ম্যাচের প্রথম দিন প্রথম সেশনে এই প্রথম সেঞ্চুরি করলেন ওয়ার্নার। এই কৃতিত্ব একশো চল্লিশ বছরের টেস্ট ইতিহাসে কতটা বিরল, তাঁর আগের চার জনের নাম দেখলেই বোঝা যাবে। এঁরা হলেন— ভিক্টর ট্রাম্পার, চার্লস ম্যাককার্টনি, স্যর ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান এবং মজিদ খান। এঁদের মধ্যে সাম্প্রতিকতম এই নজির মজিদের, করাচিতে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। ১৯৭৬-’৭৭ মরসুমে! বাকি তিনজনই তা করেছেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে! ২২৪৫ টেস্ট ম্যাচে ডেভিড ওয়ার্নার মাত্র পঞ্চম ক্রিকেটার, যিনি এই কৃতিত্বের মালিক হয়ে থাকলেন।
‘‘এ রকম সব নামের পাশে জায়গা করে নেওয়াটা বড় সম্মান। এই স্ট্যাটের কথা জানতামই না। এক সেশনে সেঞ্চুরি করাটা জানি, কিন্তু এ রকম একটা পরিসংখ্যানও যে আছে, বিন্দুমাত্র ধারণা ছিল না,’’ পরে বলেন ওয়ার্নার। ঠিক একশোর স্কোরে লাঞ্চে যান তিনি।
কুড়ি বছরের রেনশ আবার সপ্তম কনিষ্ঠতম অস্ট্রেলীয় হিসেবে সেঞ্চুরির মালিক হলেন। দিনের শেষে তিনি ১৬৭ নট আউট। এ দিন লাঞ্চের পর ওয়ার্নার বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ১১৩ করে আউট হয়ে যান। কিন্তু ক্রিজে একেবারে জমে গিয়েছিলেন রেনশ। উসমান খোয়াজা (১৩) এবং স্টিভ স্মিথের (২৪) দ্রুত উইকেটও টলাতে পারেনি ওপেনারকে। ৯১ রানে মহম্মদ আমেরের বাউন্সার তাঁর ভাইসরে এসে লাগে। সামান্য শুশ্রূষা নিয়েই ফের ব্যাটিংয়ে মন দেন রেনশ। দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়া ৩৬৫-৩। রেনশর সঙ্গে ক্রিজে আছেন পিটার হ্যান্ডসকোম্ব (৪০ নট আউট)।
মজার হচ্ছে, লাঞ্চের দু’ওভার আগে ৯৪ রানে ব্যাট করছিলেন ওয়ার্নার। প্রথম বলে এক রান নিয়ে তিনি নন স্ট্রাইকিং এন্ডে চলে যাওয়ার পর বাকি ওভারটা ব্লক করে কাটিয়ে দেন রেনশ। ‘‘এই প্রথম বোধহয় এক ওভারে ব্লক করে গালাগালি আর হাততালি দুটোই পেলাম। ওয়ার্নার বলেছিল, আমার খেলা না পাল্টাতে। ও যখন ৯৯-এ, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দৌড়েছি,’’ খেলার শেষে বলছিলেন রেনশ।
স্টিভ স্মিথ টস জিতে ব্যাট করতে নামার পরে শুরু থেকে আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাট করেন ওয়ার্নার। পিচের দু’দিকেই সমান স্বচ্ছন্দ দেখিয়েছে তাঁকে। যার মধ্যে বেশির ভাগ ছিল পুল শট আর কভারে পাঞ্চ। ৪২ বলে হাফসেঞ্চুরি, ৭৮ বলে সেঞ্চুরি করেন ওয়ার্নার। মাত্র দু’ঘণ্টা বয়সি ম্যাচেই ইতিহাস গড়ে। টম মুডির মতো কেউ কেউ যা দেখে টুইট করেন, বীরেন্দ্র সহবাগের মতো ব্যাটিং করে গেলেন ওয়ার্নার।
তাঁর ঐতিহাসিক সেঞ্চুরি সবচেয়ে কাছ থেকে দেখা রেনশ পরে বলেন, ‘‘কিছু বোঝার আগেই প্রথম সেশনটা ঝড়ের মতো কেটে গেল। ডেভি তখন জ্বলছে। আমি শুধু ওর সঙ্গে থেকেছি। কিন্তু আগেকার মতো ওর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খেলার চেষ্টা করিনি। ডেভিই বলেছে, ওর সঙ্গে তাল মেলাতে পারব না খুব একটা। আজ সেই চেষ্টাটাও করিনি!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy