ধ্যানস্থ সেনাপতি। বিশ্ব যোগ দিবসের আগের দিন বিশ্বজিৎ। ছবি: উৎপল সরকার
কলকাতা ফুটবলের ইতিহাসে এক অভিনব ঘটনা ঘটতে চলেছে ২৭ জুন। পিকে-অমল দত্ত, এমনকী সুভাষ ভৌমিক-সুব্রত ভট্টাচার্যদের জমানায় যা কল্পনাই করা যেত না।
মরসুমে বল গড়ানোর আগেই মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেনকে সংবর্ধনা দিতে চলেছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। এবং সেটা আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য। রবীন্দ্রসরোবর স্টেডিয়ামের কলকাতা ইউনিভার্সিটি রোয়িং ক্লাবে হবে এই অনুষ্ঠান।
বাংলার ফুটবলের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই কোচ একে অপরকে সাফল্যের স্বীকৃতি দিচ্ছেন, এই বিরল ঘটনা ঘটছে কিছুটা কাকতালীয় ভাবে। বিশ্বজিৎ এবং সঞ্জয় একই ক্লাব সাদার্ন সমিতির খেলোয়াড়। রবীন্দ্রসরোবরের এই ক্লাব থেকেই উত্থান দু’জনের। সঞ্জয় আই লিগ জেতার জন্য তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে সেই ক্লাব সাদর্নের পক্ষ থেকেই। এই ক্লাবের যুগ্ম সচিব পদে রয়েছেন বিশ্বজিৎ। শনিবার ইস্টবেঙ্গলের নতুন কোচ বললেন, ‘‘সঞ্জয় আমাদের ক্লাবেরই ফুটবলার। সচিব হিসাবে তো আমাকে পুরস্কৃত করতেই হবে ওকে। এর সঙ্গে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের কোনও সম্পর্ক নেই। এটা একেবারেই আমাদের ক্লাবের খেলোয়াড়ের ব্যাপার। আমার তো মনে হয় এটা বিরাট ব্যাপার যে, এর আগে কখনও একই ক্লাব থেকে উঠে আসা দুই ফুটবলার ডার্বি ম্যাচে দুই প্রধানের রিজার্ভ বেঞ্চে বসেননি।’’
শুক্রবার রাতে গোয়া থেকে ইস্টবেঙ্গল কোচ হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানাতে বিশ্বজিৎকে ফোন করেছিলেন সঞ্জয়। সেই প্রসঙ্গ টেনে লাল-হলুদ কোচ বললেন, ‘‘সঞ্জয়ের সঙ্গে তো আমার সব সময় কথা হয়। মোহনবাগান কোচ হওয়ার পর আমিও ফোন করে ওকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলাম।’’ শুধু কোচ সঞ্জয় নন, কম্পটন দত্ত থেকে শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায়— বাগানের ঘরের ছেলেরা অনেকেই নতুন লাল-হলুদ কোচকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী কোচকে সাফল্যের জন্য ফুলের তোড়া আর উপহার তুলে দেওয়ার সপ্তাহখানেকের মধ্যেই অবশ্য অনুশীলনে নেমে পড়তে হচ্ছে বিশ্বজিতকে। কলকাতা লিগ শুরুর এক মাস আগেই প্রাক প্রস্তুতি শুরু করতে চাইছে ইস্টবেঙ্গল। কর্তারা সেটাই ঠিক করেছেন। এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে ৬ জুলাই অনুশীলন শুরু হবে। দু’এক দিনের মধ্যেই ফুটবলার তালিকা নিয়ে ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইছেন বিশ্বজিৎ। বলছিলেন, ‘‘মোটামুটি টিমটা জানি। তবুও আলোচনা করতে হবে। নতুন কারা এল দেখতে হবে।’’ আইএফএ নিয়ম করেছে কলকাতা লিগের জন্য চার জন বিদেশি সই করানো যাবে। খেলানো যাবে দু’জনকে। ইস্টবেঙ্গল এখনও পর্যন্ত সই করিয়েছে দু’জনকে। র্যান্টি মার্টিন্স আর বেলো রজ্জাক। আপনি কি এর পরে আর কাউকে চাইবেন? বিশ্বজিৎ বললেন, ‘‘আরও একজন বিদেশি পেলে ভাল হয়। তবে দেখতে হবে ক্লাবের আর্থিক অবস্থা কেমন। কর্তারা কী বলছেন? তবে এটা বলছি, যা টিম পাব তা নিয়েই চেষ্টা করব সাফল্য পেতে।’’ প্রাক মরসুমে কোনও ফিজিও অবশ্য নিচে চাইছেন না বিশ্বজিৎ। বললেন, ‘‘স্যামি ওমোলোর তো ফিজিও ডিগ্রি আছে। ও তো আসছে, ওর সঙ্গে কথা বলে নেব। সমস্যা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy