Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ডার্বিতে রক্ষণই রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে বিশ্বজিৎকে

পঁচাত্তরের ষষ্ঠবার লিগ জয়ের মরসুমে রোজ তুঁতে রঙের জামা গায়ে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে আসতেন কোচ প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার লাল-হলুদ ড্রেসিংরুমের সামনে পিকে-র সেই সংস্কারের স্মৃতিচারণ করছিলেন ক্লাব সদস্য কুমারেশ সাহা।

বারাসতে মেহতাব-ম্যাজিক। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

বারাসতে মেহতাব-ম্যাজিক। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৫ ০২:৩৮
Share: Save:

ইস্টবেঙ্গল-৩ : সাই-১
(রাহুল, মেহতাব, ডং) (আসিরুদ্দিন)

পঁচাত্তরের ষষ্ঠবার লিগ জয়ের মরসুমে রোজ তুঁতে রঙের জামা গায়ে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে আসতেন কোচ প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার লাল-হলুদ ড্রেসিংরুমের সামনে পিকে-র সেই সংস্কারের স্মৃতিচারণ করছিলেন ক্লাব সদস্য কুমারেশ সাহা।

ফের যখন সেই ইতিহাসকে ছুঁতে ছুটছে মেহতাবদের টিম, তখন সেখানে কোনও সংস্কার রয়েছে কি?

বিশ্বজিতের টিমের এক সিনিয়র ফুটবলার বললেন, ‘‘স্যামি ওমোলো থাকতে কাকে চাই? শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকে।’’

এ দিন ম্যাচ শেষেও মাথা থেকে হাত সরেনি স্যামির। কলকাতা ময়দানের সেরা বিদেশি ডিফেন্ডারের টিমের রক্ষণ প্রায়ই ‘গজনি’ মোডে (কাজের সময় মগজ অচল) চলে যাচ্ছে বলে কি? এ দিন যেমন টার্নিং, স্পিড, কভার কমে যাওয়ায় সাইয়ের ছেলেদের কাছে গতিতে হারছিলেন দুই স্টপার বেলো, দীপক। সৌমিকের ওভারল্যাপে গিয়ে নামা অনেকটা ‘ইভনিং ওয়াক’ মনে হচ্ছিল। আসিরুদ্দিনের গোলের সময় এ দিন লাল-হলুদের প্রথম গোলদাতা রাইট ব্যাক রাহুল ভেকে জায়গায় রইলেন না। এর সঙ্গে প্রথমার্ধে খাবরার তেরোটা মিস পাস!

ম্যাচ শেষে লাল-হলুদ কোচ বলছিলেন, ‘‘ভুলগুলো ড্রেসিংরুমে বলা সত্ত্বেও শোধরাচ্ছে না। এর পর কিন্তু ভুগতে হবে আমাদের।’’

কিন্তু এত ভুলের পরেও ম্যাচটা পরিষ্কার ৩-১ জিতল লাল-হলুদ। তাও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ১-১ হওয়ার পর। সৌজন্যে মেহতাব হোসেন। সাই সমতা ফেরানোর পাঁচ মিনিটের মধ্যে দূরপাল্লার শটে নিজে গোল করলেন। পরের মিনিটে ডংকে দিয়ে গোল করালেন কলকাতায় ডোডো পাখির খাঁচায় ঢুকে পড়া লম্বা ফরোয়ার্ড পাস বাড়িয়ে। যা থেকে লাল-হলুদের কোরিয়ান ‘প্রিন্স চার্মিং’-এর নবম গোল।

বাড়ি ফেরার পথে মেহতাব বলছিলেন, ‘‘বিশ্বজিৎদা সেই মোহনবাগান থেকে আমার খেলার ধরন জানেন। তাই এখন বক্স টু বক্স খেলছি। তবে নিজের গোলের চেয়েও ডংকে গোল করিয়ে বেশি আনন্দ পেলাম।’’

আর এটাই টিম বিশ্বজিতের ইউএসপি। এই টিমে পুরনো ড্রেসিংরুমের বিবাদ হঠাৎ উবে গিয়েছে। ধীরে ধীরে একটা দল হয়ে উঠেছে লাল-হলুদ। বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো কারও ইগো জেগে নেই ওমোলোদের ড্রেসিংরুমে। তাই নব্বই দিন আগে যারা আই লিগে লাজংয়ের কাছে পাঁচ গোল হজম করে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের আই লিগ জয় মুখ বুজে দেখেছিল, তিন মাস পরে সেই টিমটারই ক্যাচলাইন— উল্টে দেখুন পাল্টে গিয়েছি।

সাত ম্যাচে উনিশ পয়েন্ট তুলে বিশ্বজিতের অবশ্য কোনও হেলদোল নেই। বরং তাঁর চিন্তা এক সপ্তাহ পরের বড় ম্যাচে ডুডুদের নিয়ে। আর সে জন্য স্টপারে তাঁর দরকার একজন ধ্বংসাত্মক ডিফেন্ডার। না হলে ‘গজনি’ মোডে যাওয়া রক্ষণ যে ডুডু-কাতসুমিদের বড় প্রিয় খাদ্য!

হেক্সা লিগ ঘরে এলে তাতে যদি ডার্বি জয় না থাকে তা হলে ব্যাপারটা যে অনেকটা প্রিন্স অব ডেনমার্ক ছাড়া হ্যামলেটের মতোই।

ইস্টবেঙ্গল

লুইস, রাহুল, দীপক, বেলো, সৌমিক, অবিনাশ, মেহতাব (জিতেন), খাবরা, বিকাশ, রফিক (তুলুঙ্গা), ডং (র‌্যান্টি)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE