লক্ষ্য ছিল, দুই অ্যাওয়ে ম্যাচ থেকে ছ’পয়েন্ট নিয়ে ডার্বির আগে কলকাতা ফিরবেন।
তার বদলে ইস্টবেঙ্গল কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য গোয়া ও মুম্বই থেকে চার পয়েন্ট নিয়ে শহরে ফিরছেন। রবিবার মুম্বই এফসি-র বিরুদ্ধে গোলশূন্য ম্যাচের পর কি ডার্বির আগে মনস্তাত্ত্বিক ভাবে কিছুটা এগিয়ে রইল মোহনবাগান?
প্রশ্ন শুনেই হা হা করে উঠলেন মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন। ‘‘ডার্বিতে কেউ কখনও এগিয়ে নামে না। ডার্বিতে আলাদা অঙ্ক। কাজেই ইস্টবেঙ্গল ড্র করেছে বলে আমাদের উল্লাস করার কিছু নেই।’’
আর ইস্টবেঙ্গল কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য? ম্যাচের পর মুম্বই থেকে ফোনে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘দ্বিতীয়ার্ধে আমাদের হাতেই ম্যাচটা ছিল। কিন্তু গোল হল না। কী আর করা যাবে। ডংয়ের হেড অল্পের জন্য বাইরে গেল। গোল মিস করল সঞ্জু-খাবরারাও। তবে ছেলেরা ড্রেসিংরুমে কথা দিয়েছে, এই খেদ ডার্বি জিতে উসুল করে দেবে।’’
জানা গেল, এ দিন কুপারেজে ম্যাচ ড্র করে ড্রেসিংরুমে লাল-হলুদ কোচ নাকি অর্ণব-খাবরাদের বলেন, ‘‘দ্বিতীয়ার্ধে যে সুযোগ নষ্ট করলে আই লিগের শেষ পর্বে গিয়ে তার মাশুল গুণতে হতে পারে।’’ যা শুনে নাকি ডং-র্যান্টিরা কোচকে ডার্বি জেতার কথা দিয়েছেন।
কুপারেজে এ দিনের প্রথমার্ধটা যদি মুম্বই এফসি-র হয়, তা হলে দ্বিতীয়ার্ধটা প্রবল ভাবে ইস্টবেঙ্গলের। তবে প্রথমার্ধে মুম্বই এফসি রক্ষণে যখন সে ভাবে রাজত্ব করতে পারছিলেন না সঞ্জু প্রধানরা, তখন নজর কাড়ার মতো ফুটবল খেললেন লাল-হলুদ কিপার রেহনেশ। যা দেখে দলের সঙ্গে যাওয়া ম্যানেজার অ্যালভিটো ডি’কুনহা বলেই দিলেন, ‘‘প্রথমার্ধে আমাদের কিপার আর দ্বিতীয়ার্ধে গোটা দলের পারফরম্যান্স বড় ম্যাচে টিমকে আরও ভাল খেলার জন্য তাতাবে। ড্রেসিংরুমে এটাই বলেছি, দু’ম্যাচ থেকে চার পয়েন্ট নিয়ে ফেরাটা মোটেই খারাপ নয়। আর ডার্বিতে কিন্তু অন্য খেলা। সেখানে কোনও আগাম অঙ্ক খাটে না।’’
মুম্বই কোচ খালিদ জামিল দ্বিতীয়ার্ধে আরও চাপ বাড়াতে গিয়ে লেফট ব্যাক ক্লাইড ফার্নান্ডেজকে তুলে নামিয়েছিলেন শ্রীকান্ত রামুকে। আশুতোষ মেহতাকে লেফট ব্যাক করে রামুকে রাইটে নিয়ে যান তিনি। যা ব্যুমেরাং হয়ে দাঁড়ায় আরাতা-এরিক ব্রাউনদের টিমের কাছে।
বিশ্বজিৎ এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিলেন বোধহয়। বিরতিতে ইস্টবেঙ্গল থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ঠিক করেছিল সঞ্জুকে তুলে নেওয়া হবে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই সঞ্জু প্রধানকে থামাতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছিলেন মুম্বই ডিফেন্স। প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গল কখনও ৪-৫-১, কখনও ৪-৪-২ ছকে খেললেও বিপক্ষ ব্যাক ফোর নড়বড় করছে দেখে এতক্ষণ মিডল করিডরে খেলা ডংকে উইংয়ে ঠেলে দেন লাল-হলুদ কোচ। সঞ্জুকে তখন তুলে না নিয়ে বিশ্বজিৎ চলে যান আক্রমণাত্মক ৪-৩-৩ ছকে। এর পরেই মুম্বই বক্সে একের পর এক লাল-হলুদ আক্রমণ আছড়ে পড়া শুরু। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি সময়ে বিকাশ জাইরুর ভাসানো বলে ডংয়ের হেড অল্পের জন্য বাইরে যায়। সঞ্জু প্রধান একাই নষ্ট করেন দু’দু’টি সুযোগ। গোল মিস করেন হরমনজ্যোৎ সিংহ খাবরাও।
এ দিন আবার কাঁধে হাল্কা চোট পেলেন র্যান্টি মার্টিন্স। তবে লাল-হলুদ শিবিরের দাবি সেই চোট খুব একটা গুরুতর নয়। এই ড্রয়ের ফলে মোহনবাগানের চেয়ে দু’পয়েন্টে পিছনে থেকে তৃতীয় স্থানে রইল ইস্টবেঙ্গল। যদিও সেটাকে পাত্তা না দিয়ে অর্ণব মণ্ডল বলছেন, ‘‘এ দিনের ড্র বড় ম্যাচের আগে টিমকে আরও তাতাবে। সেটাই আমাদের টিমের পক্ষে পজিটিভ। পাঁচ পয়েন্টে পিছিয়ে নেমেও বড় ম্যাচ এর আগে জিতেছি আমরা। আগামী শনিবারেও সে রকম মারকাটারি মেজাজেই ডার্বি জেতার জন্য নিজেদের নিংড়ে দেব।’’
ইস্টবেঙ্গল: রেহনেশ, সামাদ, অর্ণব, বেলো, রবার্ট, সঞ্জু (সাবিথ), মেহতাব, খাবরা, বিকাশ, ডং, র্যান্টি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy