Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Sports News

ডার্বির আগে প্রতিপক্ষকে সমীহ করেই জয়ের হুঙ্কার দিয়ে রাখলেন মর্গ্যান

তিনিই এখন ইস্টবেঙ্গলের নয়নের মণি! গোল করছেন নিয়মিত। দলকে জেতাচ্ছেন। সেই উইলিস প্লাজার অনুশীলনই শেষ হল সবার আগে। সোজা চলে গেলেন ড্রেসিংরুমে। তার পর শাহরুখ-ভক্ত প্লাজা ‘রইস’-এর গান চালিয়ে রীতিমতো বিশ্রামে গেলেন।

অনুশীলনে ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। -ফাইল চিত্র।

অনুশীলনে ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। -ফাইল চিত্র।

সুচরিতা সেন চৌধুরী
শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৬:২০
Share: Save:

তিনিই এখন ইস্টবেঙ্গলের নয়নের মণি! গোল করছেন নিয়মিত। দলকে জেতাচ্ছেন। সেই উইলিস প্লাজার অনুশীলনই শেষ হল সবার আগে। সোজা চলে গেলেন ড্রেসিংরুমে। তার পর শাহরুখ-ভক্ত প্লাজা ‘রইস’-এর গান চালিয়ে রীতিমতো বিশ্রামে গেলেন। বাকিরা উঠলেন বেশ কিছু ক্ষণ পরে। কোচ মর্গ্যানের পিছন পিছন। কিন্তু, সবার মুখে কুলুপ।

ডার্বির আগে সেই চেনা মর্গ্যানরাজ। কথা বলা যাবে না, অনুমতি ছাড়া। ছবি তোলা যাবে না অনুশীলনের। বুধবারের সকালে এ সবই বুঝিয়ে দিল, এসে গিয়েছে ডার্বি। তাই একটু হলেও সংযত পুরো দল। দলের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ থেকে মর্গ্যানের বক্তব্য— সবতেই একটাই বার্তা। শিলিগুড়িতে ডার্বি খেলতে নামার আগে মানসিক ভাবে দলতো তৈরিই, পাশাপাশি লিগ শীর্ষে থেকে খেলতে নামার আত্মবিশ্বাসটাও ঝরে পড়ছে সবার মধ্যে। লালরিনডিকা যেমন বললেন, ‘‘এই ম্যাচটা আমাদের কাছে আসলে ছয় পয়েন্টের। এখনও মোহনবাগানের থেকে তিন পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছি। এটা জিতলে ছয় পয়েন্টে এগিয়ে যাব।’’ ফুটবলারদের কথা বলায় ‘না’। তাই ওইটুকুই পাওয়া গেল। তবে আসল কথা বলে গেলেন মর্গ্যান, ‘‘ডার্বি তো আরও একটা ম্যাচ। আলাদা কোনও অনুভূতি নেই। তিন পয়েন্ট চাই। মানে জিততে চাই।’’ সব সময় যেমনটা বলেন আর কী!

আরও খবর: টিকিট নেই, চিন্তায় বাগান সমর্থকেরা

ফেব্রুয়ারির সকালে ডার্বির মহড়া হওয়ার কথা ছিল ময়দানে। কিন্তু, তেমনটা হয়নি। সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কের মাঠ থেকেই মরসুমের প্রথম ডার্বির হুঙ্কার দিলেন ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। যদিও তাঁর গলায় বার বার শোনা গেল মোহনবাগানকে সমীহ করার কথাই— ‘‘ওরা খুব ভাল দল। গত কয়েক বছর ধরেই সাফল্য পাচ্ছে। ভাল ফুটবল হবে আশা করি। ওদের খেলা টিভিতে দেখেছি, জিতছে। তবে আমরা যে ভাবে খেলছি তাতে ঠিক পথেই এগোচ্ছি।’’

অনুশীলনে ইস্টবেঙ্গল আক্রমণের দুই স্তম্ভ উইলিস প্লাজা ও রবিন সিংহ।

ইস্টবেঙ্গলে মর্গ্যানের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হয়ে গিয়েছে কলকাতা লিগ দিয়ে। যদিও এ বারের কলকাতা লিগে ডার্বি হয়নি মোহনবাগানের বদান্যতায়। হলেও সেই সময় দলের সঙ্গে ছিলেন না মর্গ্যান। এককথায় এটাই তাঁর ফেরার শুরু। ভারতীয় ফুটবলে ডার্বিই শেষ কথা বলে। যদিও মর্গ্যান তেমনটা মনে করেন না। তাই সেন্ট্রাল পার্কের মাঠে অনুশীলন শেষে ডার্বির টেনশন নেই ইস্টবেঙ্গল শিবিরে। বরং সুস্থ হয়ে ফেরা আনোয়ার আলি, অর্ণব মণ্ডলদের মতো সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারদের প্রথম দলে জায়গা হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে রিজার্ভ বেঞ্চে থাকবেন। তাঁর আগের সিস্টেমে যে কোনও পরিবর্তন হবে না সেটাও জানিয়ে দিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমার সিস্টেমে কোনও পরিবর্তন হবে না। আগের সিস্টেমেই খেলা হবে। কোনও প্লেয়ারের জন্য কিছু পরিবর্তন হতে পারে।’’ তবে কোনও পরীক্ষা-নিরিক্ষায় যে তিনি যাবেন না সেটা স্পষ্ট। কোনও দিনই মর্গ্যান উইনিং কম্বিনেশন খুব একটা ভাঙেন না। এক জন বিদেশি কম নিয়ে ডার্বি খেলতে নামতে হবে সেটা নিয়েও খুব একটা মাথাব্যথা নেই তাঁর। বরং ভারতীয় প্লেয়ারদের উপরই ভরসা রাখছেন তিনি। বললেন, ‘‘তিন বিদেশি নিয়ে খেলায় কোনও সমস্যা নেই। প্রায় পুরো মরসুমই তিন বিদেশি নিয়ে খেলেছি। কোনও ফারাক পড়বে না। ভাল ভারতীয় প্লেয়ার রয়েছে। আমাদের ফরোয়ার্ড লাইন ভাল।’’

দলের সঙ্গে হালকা মেজাজে ফুটবলে মেতেছেন মর্গ্যান।

ইতস্তত বিক্ষিপ্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লাল-হলুদ পতাকা গায়ে গুটিকয় সমর্থকদের উচ্ছ্বাসের মাঝেই ডার্বি জয়ের আবদার উড়ে এল মর্গ্যান, প্লাজা, মেহতাবদের কাছে। আস্বস্ত করে গেলেন সকলেই। শহরে আরও দু’দিন অনুশীলন করে শিলিগুড়ি উড়ে যাবে দল। শিলিগুড়ি ইস্টবেঙ্গলকে হতাশ করেনি অতীতে। এ বারও জিতেই ফেরার স্বপ্ন দেখছে দল। তাই হয়তো সনি নর্ডির জন্য বিশেষ কোনও পরিকল্পনা নেই। গোল করলেও গোল ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আছে সেটাই বুঝিয়ে দিলেন মর্গ্যান।

তাঁর হাতে তো প্লাজা রয়েইছে। সঙ্গে রবিন সিংহও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE