Advertisement
E-Paper

এর পরে খেতাবের স্বপ্ন আর অধরা নয়

ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানে খেলার সময় আমার পয়মন্ত জার্সি ছিল বাইশ নম্বর। সেই জার্সি পরে এ রকম বহু বড় ম্যাচে নায়ক হয়ে বাড়ি ফিরেছি।

শ্যাম থাপা

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৫১
উল্লাস: ম্যাচ শেষে দুই গোলদাতা জবি জাস্টিন এবং খাইমে সান্তোস কোলাদোর সঙ্গে লালরাম চুলোভা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

উল্লাস: ম্যাচ শেষে দুই গোলদাতা জবি জাস্টিন এবং খাইমে সান্তোস কোলাদোর সঙ্গে লালরাম চুলোভা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

মোহনবাগান ০ • ইস্টবেঙ্গল ২

ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানে খেলার সময় আমার পয়মন্ত জার্সি ছিল বাইশ নম্বর। সেই জার্সি পরে এ রকম বহু বড় ম্যাচে নায়ক হয়ে বাড়ি ফিরেছি।

এখন আমার সেই বাইশ নম্বর জার্সি গায়ে বড় ম্যাচে গোল করে নায়ক হওয়াটা প্রায় অভ্যাসের পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে জবি জাস্টিন। যত দিন যাচ্ছে, ততই আমি জবির গুণে মোহিত হচ্ছি। আগের বড় ম্যাচে গোল করে নায়ক হয়েছিল আই এম বিজয়নের এই ছাত্র। এ বারও সেই জবিই নায়ক, গোল করে ও করিয়ে।

খাইমে সান্তোস কোলাদোকে দিয়ে প্রথম গোলের সময় ওর অবদানটা প্রবল। আর দ্বিতীয়ার্ধে সেট-পিসের সময় ওর মার্কার কিংসলেকে বোকা বানিয়ে হেডে যে দর্শনীয় গোলটি করে গেল, তা দেখে আমি মুগ্ধ। বলতে দ্বিধা নেই, আমার হেড খুব ভাল ছিল না। কিন্তু কলকাতা ময়দানে বাইশ নম্বর জার্সির নয়া মালিক দেখিয়ে দিল সে হেডেও গোল করতে সমান দক্ষ। এর পরে জবিকে জাতীয় দলের ট্রায়ালে ডাকাই যেতে পারে।

জবির মতোই রবিবারের বড় ম্যাচে আমি আরও এক জনকে দেখার জন্য মুখিয়ে ছিলাম। সে খাইমে সান্তোস কোলাদো। এই ম্যাচের প্রাক-বিশ্লেষণ করতে গিয়ে লিখেছিলাম, ভারতীয় ফুটবলে ক্রমশ অভিজ্ঞ হয়ে ওঠায় বড় ম্যাচে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে এই স্পেনীয় ফুটবলার। ম্যাচেও ঠিক সেটাই হতে দেখলাম। কোলাদোর বড় গুণ হল ও দ্রুত পাস খেলতে খেলতে গোলের মুখ খুলে ফেলে। মাথাটাও অসম্ভব রকমের ঠান্ডা। জবির থেকে বলটা পেয়ে ও গোল করার সময় সেটাই দেখাল।

আমার মতে, এই গোলটাই এ বারের ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। এই গোলটাই মোহনবাগানকে ছিটকে দেয় ম্যাচ থেকে। খেলা শুরুর আগেই ইউতা কিনোয়াকি চোটের জন্য দলের বাইরে চলে যাওয়ায় প্রথমেই একটা বড় ধাক্কা খেয়েছিল মোহনবাগান। গোলটার পরে ওদের যাবতীয় উদ্যম যেন ব্লটিং পেপার দিয়েই কেউ শুষে নিয়েছিল। যার ফলে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি মোহনবাগান।

ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা কোচ প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে আমি বহু বড় ম্যাচ খেলেছি। প্রদীপদার যেমন ধুরন্ধর ফুটবল বুদ্ধি। তেমনই আবেগ ছিল হৃদয় জুড়ে। ইস্টবেঙ্গলের নয়া স্পেনীয় কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস সম্পূর্ণ অন্য ঘরানার। চমকে দেওয়ার মতো ওর পেশাদারিত্ব। সনি নর্দে থাকায় এই ম্যাচে আমি মোহনবাগানকে কিছুটা এগিয়ে রেখেছিলাম। সেই সনিকেই এ দিন ভয়ঙ্কর হতে দেননি আলেসান্দ্রো। সনি বল পেলেই চুলোভা, কাশিম আইদারা এত ‘ক্লোজ কভারিং’ করছিল যে সনি বল নিয়ে এগোনর জায়গাই খুঁজে পায়নি। সর্বোপরি স্পেনীয় কোচের সেট-পিস অনুশীলন। এতটাই পেশাদারিত্ব যে সেই গোপন অস্ত্র কাউকে দেখতে পর্যন্ত দেননি অনুশীলনে। এ দিন জবির দ্বিতীয় গোল সেই সেট পিসে মাথা ছুঁইয়েই। সেখানে খালিদকে দেখে মনে হচ্ছিল দিশাহীন এক নাবিকের মতো। ওর থেকে কিছু চমক আশা করেছিলাম। কিন্তু তা দেখতেই পেলাম না। বরং জনিদের সঙ্গে কমলপ্রীত, কাশিমদের সেরা বার করে এনে চমক দিলেন আলেসান্দ্রোই।

জোড়া ডার্বিতে জয়। এ বার আই লিগ আসবে কী? এ দিন যে মেজাজ ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে দেখলাম আলেসান্দ্রোর দলকে, তাতে বলতেই পারি, এ ভাবে খেললে জবিদের আই লিগ জয়ের ক্ষমতা রয়েছে।

মোহনবাগান: শিল্টন পাল, গুরজিন্দর কুমার, কিংসলে, কিমকিমা, অভিষেক আম্বেকর (অরিজিৎ বাগুই), ড্যারেন ক্যালডেইরা (তীর্থঙ্কর সরকার), পিন্টু মাহাতো (শেখ ফৈয়জ), হেনরি কিসেক্কা, ওমর এলহুসেইনি, সনি নর্দে, দিপান্দা ডিকা।

ইস্টবেঙ্গল: রক্ষিত ডাগার, লালরাম চুলোভা, বোরখা গোমেস, জনি আকোস্তা, কমলপ্রীত সিংহ, লালডানমাউইয়া (ব্রেন্ডন), লালরিনডিকা রালতে, কাশিম আইদারা, টোনি দোভালে (এনরিকে এসকুয়েদা), খাইমে সান্তোস কোলাদো (সামাদ আলি মল্লিক), জবি জাস্টিন।

I League 2018-19 East Bengal Mohun Bagan Football Jobby Justin
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy