সাময়িক স্বস্তি। মঙ্গলবার সেন্ট্রাল পার্কের মাঠে। ছবি: উৎপল সরকার
গ্রীষ্মের জ্বলুনি না কি ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের পথের কাঁটা!
বুধবার বারাসতে ফেড কাপ কোয়ার্টার ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল-লাজং ফিরতি লেগের আগে এই দু’টো ক্যাচলাইন দাপাচ্ছে ময়দানে।
গত বছর আই লিগের শেষ ম্যাচে কলকাতার ভরা গ্রীষ্মে মেহতাবদের পাঁচ গোলের লজ্জা দিয়ে গিয়েছিল শিলং লাজং। এ বার আবার শিলংয়ে গত দুই রবিবার লাজংয়ের কাছে মুখ পুড়েছে লাল-হলুদের। প্রথম জয়ে আই লিগে অবনমন বাঁচিয়েছেন পেন ওরজিরা। সাত দিন পরেই ফের মর্গ্যানের ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে ফেড কাপ কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে লাজংয়ের এগিয়ে থাকা। যার সুবাদে আজ বারাসতে ম্যাচ ড্র রাখতে পারলেই সেমিফাইনালের টিকিট পাহাড়ি দলের।
ইস্টবেঙ্গলকে সামনে দেখলেই এমন মারকাটারি পারফরম্যান্সের রহস্য কী? বৈশাখের বিকেলে প্রশ্নটা শুনে লাল-হলুদ তাঁবুতেই হাসছিলেন লাজং কোচ থাংবই সিঙ্গটো। ‘‘ওরা তো সেরা টিম। তাই ওদের বিরুদ্ধে নামলেই জান লড়িয়ে দেয় আমার ছেলেরা।’’ আর লাল-হলুদে তাঁর দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা মর্গ্যান? লাজংয়ের বিরুদ্ধে মেহতাবদের কোচ হিসেবে প্রথম ইনিংসে তিনি পিছিয়ে ২-৩। দ্বিতীয় ইনিংসে ০-২। বারাসতের ম্যাচ তাই সাহেব কোচের কাছে লাজংয়ের বিরুদ্ধে নিজের মার্কশিট উজ্জ্বল করার পাশাপাশি ‘মাস্ট উইন’ ম্যাচও বটে। ড্র করলেই মর্গ্যান ছিটকে যাবেন তাঁর পয়া টুর্নামেন্ট থেকে। যে কাপটা তিনি লাল-হলুদকে দু’বার দিয়েছিলেন তাঁর প্রথম ইনিংসে।
মর্গ্যান নিজেও পরিস্থিতিটা বুঝতে পারছেন ভাল ভাবে। সকালে সেন্ট্রাল পার্কে অনুশীলনের পর বলছিলেন, ‘‘বারাসতে জিততে না পারলে বুধবারই ইস্টবেঙ্গলের মরসুম শেষ।’’ আর বিকেলে ক্লাব তাঁবুতে সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন, ‘‘আশা করছি এ বার জিতব। ০-২ পিছিয়ে থাকলে কাজটা কঠিন হত। সব রেকর্ড ভাল করার দাওয়াই একটাই। ওদের হারাতে হবে।’’
যদিও অবিনাশ, মেন্ডি-সহ প্রথম একাদশের অর্ধেক আজ থাকছে না ব্রিটিশ কোচের ভাঁড়ারে। আবার সুবিধে বৈশাখের চল্লিশ ডিগ্রি আর্দ্র-গরমে, কৃত্রিম মাঠে লাজংকে পাওয়া। যা শুনে লাজং কোচের সাংবাদিক সম্মেলনে পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘আপনারাই বলুন এ রকম পরিস্থিতিতে বিকেল সাড়ে চারটেয় ম্যাচ দেওয়াটা ঠিক কি না?’’ ‘জবাবে মর্গ্যানের স্বভাবসিদ্ধ রসিকতা সহ চিমটি, ‘‘দেড়টায় হলে আরও ভাল হত...।’’
এ দিন অনুশীলনে ক্লান্তির জন্য দীপক, খাবরা, অর্ণবদের কুলডাউন করতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন মর্গ্যান। সূত্রের খবর, লাজংয়ের ব্রাজিলীয়-নাইজিরীয় ‘ফিউশন’ ত্রিভুজ— পেন, ফাভিও, উইলিয়ামসের দাপাদাপি বন্ধ করতে দীপকের জায়গায় খাবরাকে রাইট ব্যাকে ব্যবহার করতে পারেন কোচ। কথায় তারই ইঙ্গিত। ‘‘ওদের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড উইং, সেট পিস আর এরিয়াল বলে বিপজ্জনক। তিনটে জায়গাই বন্ধ করতে হবে।’’
যা শুনে আবার হাসছেন সিঙ্গটো। ড্র করলেই ফেড কাপ সেমিফাইনালের টিকিট। লাজং কোচ বলছেন, ‘‘ঘরের মাঠে জয় আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। এখানে ড্র করলেই চলবে। কিন্তু পরীক্ষায় শুধু পাশ করলেই চলে না। ফার্স্ট ডিভিশনও লাগে।’’
আই লিগ চ্যাম্পিয়নের বিদায়: ফেড কাপের শুরুতেই বিদায় নিল আই লিগ চ্যাম্পিয়ন বেঙ্গালুরু এফসি। তাও আই লিগে অবনমন হওয়া টিমের বিরুদ্ধে দু’দফাতেই হেরে। কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে আইজল এফসির কাছে সুনীল ছেত্রীরা হেরেছিলেন ১-২। মঙ্গলবার ঘরের মাঠে ফিরতি ম্যাচেও বেঙ্গালুরু হারল ২-৩। সব মিলিয়ে ৫-৩ জিতে ফেড কাপের সেমিফাইনালে উঠল জহর দাসের আইজল।
বুধবার
ফেডারেশন কাপ: ইস্টবেঙ্গল-লাজং এফসি (বারাসত, ৪-৩০)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy