গত চোদ্দো-পনেরো মাসে যে ক’টা সিরিজ জিতেছি, তার মধ্যে এটা বোধহয় সবচেয়ে মধুর।
এর চেয়ে ভাল কিছু হতে পারত না। ওয়াংখেড়েতে ৩-০ জেতা, তা-ও আবার বিশ্বের অন্যতম সেরা দলের বিরুদ্ধে, যারা আগে আমাদের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে।
এই ম্যাচটা নিয়ে খুব ফোকাস্ড ছিলাম। আমরা ২-০ এগিয়ে ছিলাম, সামনে সিরিজ জয়ের সুযোগ ছিল। সুযোগ ছিল চেন্নাইয়ে মন খুলে খেলার।
আমাদের প্ল্যান ছিল ক্রিজ আঁকড়ে পড়ে থাকা। শুরুতেই ছন্দ পেয়ে গেলাম। মাঝে মাঝে এ রকম হয় যে, প্রথমে বাউন্ডারি পেয়ে গেলে টেনশন কমে যায়।
আমি নার্ভাস ছিলাম না, বলব না। বরং বেশ নার্ভাস ছিলাম, বিশেষ করে যখন ওরা চারশো তুলে দিল। আমরা পরপর উইকেট হারানোর পরেও টেনশনে পড়ে গিয়েছিলাম। জানতাম ম্যাচের উপর কর্তৃত্ব রাখতে আমাকে আরও অনেক রান করতে হবে।
ওরা একজন স্পিনার কম খেলানোয় আমাদের সুবিধে হয়ে গিয়েছিল। মইন আর রশিদ পঞ্চাশের উপর ওভার বল করে দিনের শেষে খুব ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল।
জানতাম খারাপ বল আসবেই। এ রকম পিচে পেসারদের দিয়ে নিয়মিত বল না করালে ওরা আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। শেষমেশ যখন বল করতে আসে, তখন উইকেট তোলার কথা না ভেবে রান আটকাতে যায়। এটা আমরা বুঝতে পেরে গিয়েছিলাম আর তাই ওদেরই টার্গেট করেছিলাম।
দুটো টিমের মধ্যে তফাত ছিল প্রয়োগ-ক্ষমতা। ওদের ব্যাটসম্যানরা টানা ছ’টা বল ব্লক করেছে, এমন ঘটনা খুবই বিরল। আমরা সেখানে ডিফেন্স নিয়ে খেটেছি। ভারতে ভাল ডিফেন্স না থাকলে আমাদের বোলিং সামলানো খুব কঠিন।
বোঝাই যাচ্ছিল যে, ওরা নিজেদের উপর খুব একটা আস্থা রাখতে পারছে না। এখানে দ্বিতীয় ইনিংসেও প্রচুর ভুল শট মেরেছিল। জানতাম, গোটাদুয়েক উইকেট পড়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। তার পর ওরা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়বে।
লম্বা ইনিংস খেলতে পারবে কি না, তা নিয়ে নিজেদের উপরই ওদের বিশ্বাস ছিল না। আমরা যে মুহূর্তে বাউন্ডারি আটকে দিলাম, ওদের পালানোর পথ ছিল না। কারণ আমাদের বোলিং খুব ধারাবাহিক।
আমরা নিজেদের ডিফেন্স নিয়ে খেটেছি। এটা আমাদের গর্ব। আমরা এটাকে উপভোগ করি।