Advertisement
০৭ মে ২০২৪

বোমাতঙ্ক কাঁপিয়ে দিল রুনিদের

বিশ্বের সবথেকে ঐতিহ্যশালী স্টেডিয়ামও জঙ্গিহানার আশঙ্কায় ফাঁকা হয়ে গেল। রবিবারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ড হওয়ার কথা ছিল ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ যাওয়ার রাস্তা। উল্টে জঙ্গিহানার আশঙ্কায় মাঠ ছাড়তে হল উপস্থিত সমর্থকদের। ম্যাচও পরিত্যক্ত হল।

বিস্ফোরকের খোঁজে গ্যালারিতে চলছে পুলিশ কুকুর নিয়ে তল্লাশি। রবিবার। ছবি: এএফপি

বিস্ফোরকের খোঁজে গ্যালারিতে চলছে পুলিশ কুকুর নিয়ে তল্লাশি। রবিবার। ছবি: এএফপি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৬ ০৩:১৫
Share: Save:

বিশ্বের সবথেকে ঐতিহ্যশালী স্টেডিয়ামও জঙ্গিহানার আশঙ্কায় ফাঁকা হয়ে গেল। রবিবারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ড হওয়ার কথা ছিল ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ যাওয়ার রাস্তা। উল্টে জঙ্গিহানার আশঙ্কায় মাঠ ছাড়তে হল উপস্থিত সমর্থকদের। ম্যাচও পরিত্যক্ত হল।

রবিবার প্রিমিয়ার লিগের শেষ ম্যাচে বোর্নেমাউথ ছিল ইউনাইটেডের প্রতিপক্ষ। রুনি-মার্শালরা তখন ওয়ার্ম আপ সারছেন। হাল্কা স্ট্রেচিং করছেন। তখনই হঠাৎ মাইকে ঘোষণা করা হয়, স্যর অ্যালেক্স ফার্গুসন স্ট্যান্ড আর স্ট্রেটফোর্ড এন্ডে উপস্থিত প্রত্যেক সমর্থক যেন মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যায়। নির্ধারিত সময় থেকে খেলা শুরু হবে ৪৫ মিনিট দেরিতে। ফুটবলারদেরও ওয়ার্ম আপ থামিয়ে তখন ড্রেসিংরুমে ফিরতে বলা হয়। তার কিছুক্ষণ পরেই আবার জানানো হয়, ‘অপারেশন কোড রেড’ জারি করেছে পুলিশ। তাই ম্যাচ পরিত্যক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউনাইটেড। বাকি গ্যালারির সমর্থকদেরও যত দ্রুত সম্ভব স্টেডিয়াম ছাড়তে বলা হয়। টুইটারে ক্লাব আবেদন জানায় যাতে কেউ মাঠের ধারেপাশে না আসে।

হঠাৎ এ রকম ভাবে ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় তোলপাড় পড়ে যায়। এমন কী হল যে ম্যাচটাই করা গেল না? মাঠ ফাঁকা করে দিতে হল? ‘অপারেশন কোড রেড’ জারি করা হয়েছে ক্লাব জানালেও ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার পিছনে আসল কারণ হিসেবে বেরিয়ে আসে জঙ্গিহানার আশঙ্কা। শোনা যায়, মাঠে সন্দেহজনক প্যাকেট উদ্ধার করা হয়েছে। যে কারণে গ্রেটার ম্যাঞ্চেস্টার পুলিশ ক্লাবকে পরামর্শ দেয় কোনও ঝুঁকি না নিয়ে ম্যাচ পরিত্যক্ত করা হোক। পরে এক দিন ম্যাচের তারিখ ঘোষণা করা হবে।

সমর্থকরা তখনও অবাক। অ্যাওয়ে গ্যালারিতে বোর্নেমাউথও সমর্থকরা তখন সিটে বসে আছেন। কিন্তু তার পর এক এক করে লাইন দিয়ে স্টেডিয়াম থেকে সমর্থকদের বের করে নিয়ে আসে পুলিশ। এক সমর্থক বলেন, ‘‘প্রথমে যখন আমাদের বের করা হচ্ছে তখনও আমরা অবাক। একটু হলেও ভয় পেয়েছিলাম যে কী এমন হল আমাদের মাঠ ছাড়তে বলা হল। কিন্তু পুলিশ খুব ভাল কাজ করেছে। কোনও অসুবিধা হয়নি।’’ বাইরে তখন অবশ্য ভিড়। বাকি অনেকে যাঁরা খেলা দেখতে এসেছেন তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। পরিস্থিতির সম্বন্ধে বলা হয়। আর যত দ্রুত সম্ভব স্টেডিয়াম থেকে দূরে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় পুলিশ।

এখানেই অবশ্য নাটকের শেষ নয়। স্টেডিয়াম পুরো খালি করার পরে আবার বম্ব ডিজপোজাল স্কোয়াডকেও ডাকা হয়। প্যাকেটের মধ্যে কী আছে সেই তদন্ত চলে অনেকক্ষণ। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের প্রতিটা গ্যালারিতে তখন পুলিশ কুকুর নিয়ে চলছে তদন্ত। আর কোথাও এ রকম কিছু জিনিস আর আছে কি না, দেখা হচ্ছিল। প্রথমে সন্দেহ করা হচ্ছিল প্যাকেটের মধ্যে বোমা আছে। গ্রেটার ম্যাঞ্চেস্টার পুলিশ প্রথমে জানিয়েও দেয়, ওল্ড ট্র্যাফোর্ডেও নাকি নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ করা হয়েছে। কিন্তু পুরোদস্তুর তদন্তের পরে জানা যায় প্যাকেটের মধ্যে বস্তুটা কোনও বিস্ফোরক পদার্থ নয়।

কিন্তু সমর্থকদের বের করা হলেও, প্রথমে ফুটবলারদের ড্রেসিংরুমে ছাড়তে দেওয়া হয়নি। আর স্বভাবতই ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের পরিস্থিতি দেখে ভয় পেয়ে যান রুনিরা। ইউনাইটেড মাঝমাঠ তারকা অ্যান্ডার হেরেরা বলছেন, ‘‘মনে হচ্ছে আমরা সবচেয়ে শেষে স্টেডিয়াম ছাড়ব। আমরা সবাই আতঙ্কে আছি।’’ স্টেডিয়াম দর্শকশূন্য হওয়া পর ফুটবলারদের বার করে নিয়ে আসা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

EPL Bomb Scare
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE