বাংলাদেশকে এশিয়া কাপ ফাইনালে দেখে আমি এতটুকু অবাক নই। টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত পাকিস্তান আর শ্রীলঙ্কার চেয়ে অনেক ভাল ক্রিকেট খেলেছে বাংলাদেশ। টিমটাকে দারুণ জমাট দেখাচ্ছে। যোগ্যতার জোরেই খেতাবের লড়াইয়ে উঠে এসেছে মাশরাফি মর্তুজারা।
এই উন্নতির জন্য বাংলাদেশের প্রত্যেক ক্রিকেটারের তারিফ প্রাপ্য। একই সঙ্গে তারিফ করতে হবে বাংলাদেশ ক্রিকেটটা যাঁরা চালাচ্ছেন, তাঁদেরও। শুধু সিনিয়র পর্যায়ে নয়, গত এক বছরে বাংলাদেশের ক্রিকেটে সব দিক থেকে একটা বিশাল অগ্রগতি হয়েছে। বড় বড় পা ফেলে সামনের দিকে এগিয়েছে ওরা। ক’দিন আগেই তো অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল খেলল বাংলাদেশের জুনিয়র টিম। আর কোনও দেশের জুনিয়র টিম যখন ভাল খেলতে শুরু করে, বুঝতে হবে সেই দেশের ক্রিকেট পরিকাঠামো আর সিস্টেমে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে ইদানীং পর পর ক্রিকেট প্রতিভা উঠে আসার পিছনে এই উন্নতিটাই আসল কারণ।
বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজার কয়েকটা সাক্ষাৎকার পড়লাম। নিজের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ও কিন্তু একদম সঠিক সঙ্কেতগুলো পাঠাচ্ছে। ওকে দেখে মনে হয় খুব শান্ত, সংযত ক্যাপ্টেন। টিমটাকে জমাট আর এককাট্টা করে তোলার কাজটা দারুণ সফল ভাবে করতে পেরেছে মাশরাফি।
গত বছর তিন ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজে ভারতকে হারানোর পর থেকেই অবশ্য ক্রিকেট বিশ্ব নড়েচড়ে বসে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে নজর রাখা শুরু করে। সে বার দারুণ আত্মবিশ্বাসী ক্রিকেট খেলে ভারতকে হারিয়েছিল ওরা। ফর্ম্যাট যতই আলাদা হোক, আজ ফাইনালের যুদ্ধে নামার আগে এক বছর আগের ওই সিরিজ জয়ের স্মৃতি গোটা বাংলাদেশ টিমকে বাড়তি বারুদ যোগাতে বাধ্য।
ওদের অবশ্য এটাও মনে রাখা দরকার, সে বারের ভারতের তুলনায় এই ভারতীয় টিমটা পুরোপুরি আলাদা। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি আর ওর ছেলেরা এই মুহূর্তে ফর্মের দিক থেকে তো সেরা জায়গায় আছেই। মনসিক ভাবেও অসম্ভব মজবুত জমিতে দাঁড়িয়ে। এরা বিশ্বাস করে, বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে যে কোনও টিমকে হারিয়ে দেবে। আর সেই আত্মবিশ্বাস থেকেই ভারতের খেলায় একটা দারুণ তেজিয়ান ভাব ফুটে বেরোচ্ছে।
এই ভারতকে ফাইনালে হারাতে হলে বাংলাদেশকে কিন্তু নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশের ব্যাটিং কেমন হল, তার উপর নির্ভর করবে অনেক কিছু। কারণ ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপের যা শক্তি, তাতে ১৬০-এর চেয়ে কম রান তুললে ধোনিদের থামানো প্রায় অসম্ভব।
মীরপুরের পিচের চরিত্রটা টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই উপমহাদেশের গড়পড়তা উকেটের চেয়ে একটু আলাদা থেকেছে। সেটা মাথায় রাখলে, ফাইনালে ১৬০ রান লড়াই করার মতো পুঁজি হবে বলেই মনে হয়। তার চেয়ে কম উঠলে কিন্তু সমস্যা রয়েছে।
কাগজে আবার পড়ছিলাম, ফাইনালের আগে পিচের ঘাস ছাঁটাই করে উইকেটটাকে নাকি একেবারে মার্কামারা ঢাকার উইকেট করে তোলা হবে! বাংলাদেশের মনে রাখা উচিত, পাটা উইকেটে শক্তিশালী ভারতীয় ব্যাটিং আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে। পিচকে তাই ফাইনালের ফোকাস করে তোলার দরকার নেই। তার বদলে দু’টো দল শুধু মাঠে নিজেদের সেরাটা দেওয়ায় মন দিক। কারণ দিনের শেষে ট্রফি তাদের হাতেই উঠবে, পরিবেশ, পিচ আর পরিস্থিতি অনুযায়ী আজ ক্রিকেটটা যারা বেশি ভাল খেলল। (গেমপ্ল্যান)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy