বাংলার ফুটবলে আঁধার নামার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে উঠে আসছে আরও সব চাঞ্চল্যকর তথ্য। পঞ্চম ডিভিশন থেকে প্রিমিয়ার ‘এ’— কলকাতা লিগের ম্যাচ হয় কোনও স্পটার বা নির্বাচক ছাড়াই।
খোঁজ করতে গিয়ে জানা গেল, বাংলার ফুটবল নিয়ামক সংস্থা আইএফএ-র কোনও স্পটারই নেই! সংস্থার সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় বলে দিলেন, ‘‘যখন লিগ চলে, তখন সর্বভারতীয় স্তরে কোনও টুর্নামেন্ট থাকে না। সেই সময় সহ-সচিবেরাই মাঠে থাকেন। এ ছাড়া আইএফএ-র অন্যান্যরাও থাকেন। তাঁরা ফুটবলারদের দেখেন। টুর্নামেন্টের আগে ট্রায়ালে ডাকা হয় ফুটবলারদের।’’ যদি কোনও স্পটারই মাঠে না থাকেন, তা হলে কীসের ভিত্তিতে ট্রায়ালের জন্য নির্বাচিত করা হয় ফুটবলারদের? আইএফএ সচিবের ব্যাখ্যা, ‘‘প্রত্যেকটা ক্লাবকে বলা হয় তিন-চার জন অথবা ভাল ফুটবলারদের ট্রায়ালে পাঠাতে।’’ স্পটার রাখার প্রয়োজন রয়েছে বলেও মনে করছেন না তিনি। বলে দিলেন, ‘‘যদি জানুয়ারি মাসে কোনও প্রতিযোগিতা হয়, তার জন্য মে মাসে ফুটবলার নির্বাচিত করে কী লাভ?’’
একে তো স্পটার না থাকার মতো চূড়ান্ত অপেশাদারিত্ব। তার উপরে এই প্রশ্নও উঠছে যে, যাঁরা থাকেন বলে আইএফএ সচিব দাবি করলেন, তাঁদের কি আদৌ মাঠে দেখা যায়? কলকাতা ময়দানকে হাতের তালুর মতো চেনা মহমেডান কোচ রঘু নন্দী জানালেন, আইএফএ-র কেউ লিগের ম্যাচ থেকে ফুটবলার বাছছেন তিনি কখনও দেখেননি। বললেন, ‘‘কলকাতা লিগে নীচের দিকের ডিভিশনে খেলাগুলো মূলত হয় খোলা মাঠে। আমরা কোচেরাই ঘুরে ঘুরে খেলা দেখে ফুটবলার তুলে আনি। আইএফএ-র কাউকে দেখিনি ফুটবলার বাছাই করতে।’’ যোগ করলেন, ‘‘আমি তখন সুপার ডিভিশনের ক্লাব জর্জ টেলিগ্রাফের কোচ ছিলাম। ময়দানে ঘুরতে ঘুরতে দেখলাম দ্বিতীয় ডিভিশনের ম্যাচে তালতলা ইনস্টিটিউইটের হয়ে একটা ছেলে দারুণ খেলছে। নাম সুরজিৎ বসু। পর পর বেশ কয়েকটা ম্যাচে ওকে দেখলাম। সেই সময় ধানবাদে সিজুয়া গোল্ড কাপে খেলার ডাক পেল জর্জ। সুরজিৎকে নিয়ে গেলাম। প্রথম ম্যাচেই জোড়া গোল করেছিল। আমরা চ্যাম্পিয়ন হই। পরের মরসুমে জর্জে সই করাই ওকে। আই লিগের আগে টালিগঞ্জ অগ্রগামী ওকে নেয়। সুযোগ পায় ভারতের যুব দলেও।’’