ব্রাজিল মানেই ফুটবল, ব্রাজিল মানেই অনেক লড়াই করে ফুটবলার হয়ে ওঠা। অভাব, কষ্টের জীবন, অপরাধ জগৎ সবই জড়িয়ে থাকে তাঁদের উঠে আসার পিছনে। এমন কাহিনী ব্রাজিলের প্রতিটি মোড়ের মাইল স্টোনে লেখা থাকে। হাওয়ায় ওড়ে সেই সব জীবনের চিত্রনাট্য। যা কখনও রূপ পায় সাফল্যে, কখনও হারিয়ে যায় রিও ডি জেনেইরোর কোনও অন্ধ গলিতে। সবার ভাগ্য রোনাল্ডো, রোনাল্ডিনহো, নেইমারদের মতো হয় না। আবার হারিয়ে যেতে যেতে এভাবে ফিরে আসার ভাগ্যও সকলের হয় না। যে ভাবে ফিরে এসেছিলেন ফিলিপ মেলো। দেশের জার্সিতে বেশি দিন খেলা হয়নি এই উইঙ্গারের। ২০০৯-২০১০ এ খেলেছিলেন দেশের জার্সিতে ২২টি ম্যাচ। দুটো গোলও রয়েছে দেশের হয়ে। সেই মেলো মুখ খুললেন এতদিন পর। বললেন ঠিক কী ভাবে খুনি হতে হতে হয়ে গেলেন ফুটবলার।
ফিওরেন্তিনা, জুভেন্তাস, গালাতাসারে, ইন্টারের মতো দলের হয়ে সাফল্যের সঙ্গে খেলেছেন। কিন্তু কী ভাবে এই সাফল্য? ৩২ বছরের মেলো বলেন, ‘‘আমার বাবাকে দুটো শিফটে কাজ করতে হত। যাতে আমরা ভাল থাকি। আমাকেও অনেক ত্যাগ করতে হয়েছে। এখন বুঝতে পারছি সেগুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি আজ আমি হতাম না যদি না সেই ত্যাগগুলো করতাম।’’
রিও ডি জেনেইরোর একটি ছোট্ট জায়গা ভোল্টা রেডোন্ডা। সেখানেই বেড়ে ওঠা মেলোর। বলেন, ‘‘আমার জীবনে আমার বাবার গুরুত্ব অনেক। সঙ্গে আমার স্ত্রী ও সন্তানদেরও। কিন্তু যদি ফুটবল না থাকত তাহলে আমি খুনি হতাম।’’
চোখের সামনে ড্রাগ মাফিয়াদের হাতে বন্ধুর মৃত্যু দেখতে হয়েছে তাঁকে। এই পরিণতি তাঁরও হতে পারত। পাল্টা আঘাত হানলে যে খুনি হয়ে যেতে হত তাঁকে। সেটা চাননি মেলো। অনেক কষ্ট বুকে আঁকড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন সেই অন্ধকার জগৎ থেকে। আবার বলতে শুরু করেন মেলো, ‘‘আমি বড় হয়েছি দেশের সব থেকে ভয়ঙ্কর এক বস্তির মধ্যে। সেখানে শুধু মাদক আর অস্ত্রই দেখেছি। যা নিয়ে ডুবে থাকে সেখানকার মানুষ। এরকমও হয়েছে যে আমি ট্রেনিং থেকে ফিরে শুনেছি আমার কোনও বন্ধু মারা গেছে। তখনই বুঝে যাই আমাকে যে কোনও একটা বেছে নিতে হবে। হয় ফুটবল অথবা অপরাধীর জীবন। সৌভাগ্য আমার, আমি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফুটবল বেছে নিয়েছিলাম। তাই আজ আমি একটা সুস্থ জীবন কাটাচ্ছি।’’ এটা কোনও একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ব্রাজিল ফুটবলের আনাচে কানাচে কান পাতলেই শোনা যাবে ফুটবলার হয়ে ওঠার এমন সব কাহিনী। মেলো যেন তাঁদেরই প্রতিনিধি।
আরও খবর
সেমিফাইনালের আগে চোট রোনাল্ডো-বেঞ্জিমার
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy