Advertisement
E-Paper

কে বলতে পারে ওদের কেউ ব্রাজিল খেলত না

যে কোনও মৃত্যুই দুঃখের। আর সেটা যদি দুর্ঘটনায় হয়, তা হলে আরও বেশি মনে আঘাত করে। কিন্তু সবচেয়ে মর্মান্তিক হল, কোনও প্লেন বা ট্রেন দুর্ঘটনায় একসঙ্গে অনেক মানুষের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া।

চুনী গোস্বামী

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৫১
অভিশপ্ত বিমানে ওঠার আগে চাপেকোয়েনসে টিম। (ডান দিকে) শোক পালন মেসিদের। ছবি-টুইটার

অভিশপ্ত বিমানে ওঠার আগে চাপেকোয়েনসে টিম। (ডান দিকে) শোক পালন মেসিদের। ছবি-টুইটার

যে কোনও মৃত্যুই দুঃখের। আর সেটা যদি দুর্ঘটনায় হয়, তা হলে আরও বেশি মনে আঘাত করে। কিন্তু সবচেয়ে মর্মান্তিক হল, কোনও প্লেন বা ট্রেন দুর্ঘটনায় একসঙ্গে অনেক মানুষের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া। তাই মঙ্গলবার প্লেন ক্র্যাশে ব্রাজিলের প্রায় গোটা একটা ফুটবল ক্লাবের নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার খবরে আমি প্রথমে কেমন যেন প্রচণ্ড বিচলিত হয়ে পড়েছিলাম! এই আটাত্তর বছর বয়সে একজন প্রাক্তন খেলোয়াড় হিসেবে একঝাঁক তরুণ প্লেয়ারের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর সহ্য করাটা সত্যিই ভীষণ কঠিন।

যা শুনছি, বিমানটায় ব্রাজিলের চাপেকোয়েনসে ক্লাবের গোটা প্রথম টিমটা ছাড়া অনেক সাধারণ যাত্রীও ছিলেন। মৃত্যুর কবল থেকে রক্ষা পেয়েছেন মাত্র পাঁচ জন। যার মধ্যে তিন জন ফুটবলার। যেটা শুনে দুটো অনুভূতি হল। দেখুন, কথাটা দয়া করে অন্য ভাবে নেবেন না। মৃত্যু মৃত্যুই। তবে নিজে খেলোয়াড় ছিলাম বলেই বোধহয় মনে হয়, প্লেয়ারের অকালমৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি। কত পরিশ্রম করে, দিনের পর দিন অনুশীলন করে তবেই একটা প্লেয়ার তৈরি হয়। সেখানে প্রায় গোটা একটা ফুটবল টিম দুর্ঘটনায় শেষ হয়ে গেল!

ওই ক্লাবটার কথাও এক বার ভাবুন। কত খেটেখুটে একটা বড় মাপের লাতিন আমেরিকান টুর্নামেন্ট ফাইনালে উঠেছিল। যাকে ইউরোপা লিগের সমান ধরা হয়। আর ফাইনাল খেলতেই যাচ্ছিল কলম্বিয়ায়। সব স্বপ্নের অপমৃত্যু! একেবারে আচমকা। যে বিশাল শূন্যতা চাপেকোয়েনসে ক্লাবে তৈরি হল, তা পূরণ হতে কত কত বছর লাগবে কে জানে! কে জানে হয়তো মৃত ফুটবলারদের মধ্যে এমন কোনও কোনও প্রতিভাবান ছিল, যারা ভবিষ্যতে ব্রাজিল টিমে খেলত।

এটা লিখতে গিয়ে আমার দ্বিতীয় অনুভূতিটা হচ্ছে। মনে পড়ে যাচ্ছে উনিশশো আটান্নয় ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের প্রায় গোটা টিমের মিউনিখে প্লেন ক্র্যাশে পড়ে শেষ হয়ে যাওয়া! বিখ্যাত কোচ ম্যাট বুসবি-র সেই ইউনাইটেড টিমের যাঁরা মারা গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন ডানকান এডওয়ার্ডস। তখন বলা হত, অত প্রতিভাবান হাফব্যাক শুধু ইংল্যান্ডে কেন, বিশ্ব ফুটবলেই নেই। মাত্র একুশ বছরে তাঁর প্রাণ সে দিন ছিনিয়ে নিয়েছিল বিমান দুর্ঘটনা। আবার ইউনাইটেডের যে ক’জন বেঁচে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন বুসবি আর এক তরুণ ফরোয়ার্ড। নাম ববি চার্লটন। সে দিনের আট বছর বাদে ইংল্যান্ড ছেষট্টির বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সময় চার্লটন সুপারস্টার। কাপ জিতে বলেছিলেন, তিনি এই বিশ্বকাপে শুধু নিজে খেলেননি, ডানকান এডওয়ার্ডসের হয়েও খেলেছেন। ডানকান বেঁচে থাকলে তাঁকে ওয়েম্বলির ফাইনালে ইংল্যান্ড টিমের লেফট হাফে নির্ঘাত দেখা যেত।

কে বলতে পারে, ২০১৮ বা ২০২২ বিশ্বকাপ ব্রাজিল জিতলে নেইমার এ দিনের মর্মান্তিক প্লেন ক্র্যাশে মৃত কোনও প্রতিভাবান ব্রাজিলীয় ফুটবলার সম্পর্কে একই কথা বলবে না!

Football World Mourning Plane Crash Brazilian Footballers Chapecoense football team
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy