নিউ টাউনে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের উৎকর্ষ সেন্টারের সামনে বৃহস্পতিবার বিকেলের দৃশ্য রীতিমতো অবাক করার মতো। রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীরা। প্রাচীরের ধারেকাছে কাউতে ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে না। নিরাপত্তার এত কড়াকড়ি কেন? বিশেষ কোনও ব্যক্তি কি এসেছেন?
মাঠের ভিতর থেকে বাঁশির শব্দ ভেসে আসতেই ভুল ভাঙল। ডুরান্ড কাপে শেষ আটের ডার্বির আগে রণকৌশল ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় এত কড়াকড়ি। গত কয়েক দিন ধরেই রুদ্ধদ্বার অনুশীলন করাচ্ছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুসো। বৃহস্পতিবারও তাঁর ব্যতিক্রম হল না। বুধবার অস্কার মূলত জোর দিয়েছিলেন ফুটবলারদের শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানোর উপরে। কারণ, প্রান্ত দিয়ে ঝড়ের গতিতে আক্রমণে ওঠেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের লিস্টন কোলাসো। দুরন্ত ছন্দে রয়েছেন মাঝমাঠের আর এক তারকা সাহাল আব্দুল সামাদও। পেনাল্টি বক্সের মধ্যে ভয়ঙ্কর জেমি ম্যাকলারেন ও জেসন কামিংস। মোহনবাগানের আক্রমণের ঝড় থামানোর জন্য ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারদের যে শারীরিক সক্ষমতার তুঙ্গে থাকতে হবে, খুব ভাল করেই জানেন অস্কার। বৃহস্পতিবার থেকে তিনি শুরু করলেন প্রথম একাদশ নির্বাচনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
ফুটবলারদের দু’দলে ভাগ করে দীর্ঘক্ষণ ম্যাচ খেলান স্পেনীয় কোচ। খেলার মধ্যে একাধিক পরিবর্তনও করলেন। কখনও রক্ষণে আনোয়ার আলি, কেভিন সিবিলের সঙ্গে লাল চুংনুঙ্গা ও মহম্মদ রকিপকে রাখলেন। কখনও আবার আনোয়ারের সঙ্গে মার্তণ্ড রায়না, চুংনুঙ্গা, রকিপ ও প্রভাত লাকড়াকে খেলালেন। মাঝমাঠে মহম্মদ রশিদ, মিগুয়েল ফিগুয়েরা, সাউল ক্রেসপোর সঙ্গে মহেশ সিংহকে দেখে নিলেন। কখনও আবার খেলালেন এডমুন্ড লালরিনডিকাকেও। ডার্বির আগে যে হেতু হাতে আরও দু’দিন সময় রয়েছে, তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে নিলেন। ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ বা মাঝমাঠে কী হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও, ফরোয়ার্ডে হামিদ আহদাদের খেলা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোসের ব্যর্থতা ঢেকে দিয়েছেন লাল-হলুদ জার্সিতে অভিষেকেই গোল করা মরক্কোর স্ট্রাইকার। দ্বিতীয় ম্যাচেও একটি গোল করেছেন তিনি। হামিদকে ঘিরেই ডার্বি জয়ের স্বপ্ন দেখছেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা।
হামিদরা যখন ডার্বির প্রস্তুতিতে মগ্ন, ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা মরিয়া টিকিটের সন্ধানে। বৃহস্পতিবার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ডুরান্ড কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, মোট ৬২ হাজার ৪৪০টি টিকিট ছাড়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬ হাজার ৪০৩টি টিকিট দেওয়া হয়েছে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, রাজ্য সরকার, আইএফএ ও ডুরান্ড কাপের স্পনসরদের। অনলাইন ও অফলাইন মিলিয়ে ১৫ হাজার ৩১২টি টিকিট বিক্রি করা হবে। শনিবার সকাল ১১টা থেকে শুরু হবে অফলাইন টিকিট বিক্রি। মোহনবাগান ক্লাব তাঁবুর টিকিট কাউন্টার এবং ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের বক্স অফিস থেকে যা পাওয়া যাবে। এক জন সর্বাধিক দু’টি টিকিট কিনতে পারবেন প্রথম আসার ভিত্তিতে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)