Advertisement
০৫ মে ২০২৪
FIFA Womens World Cup

ফুটবল খেলার জন্য ছেলে সাজতেন, সেই মেয়ে মহিলাদের বিশ্বকাপে সফলতম কোচ

ছোটবেলায় নিজেকে পুরুষ বলে পরিচয় দিতেন উইগম্যান। মেয়ে বলে দলে নিতে চাইত না ছেলেরা। সেই উইগম্যান এখন মেয়েদের সফলতম কোচ।

Sarina Wiegman

৫৩ বছরের সেরিনা উইগম্যান এখন মহিলাদের ফুটবল বিশ্বের সফলতম কোচ। ছবি: রয়টার্স।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২৩ ১৯:৫৯
Share: Save:

ইংল্যান্ডের মেয়েদের দলকে বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছে দিয়েছেন। গত বারের বিশ্বকাপে তাঁরই প্রশিক্ষণে ফাইনালে উঠেছিল নেদারল্যান্ডস। ৫৩ বছরের সেরিনা উইগম্যান এখন মহিলাদের ফুটবল বিশ্বের সফলতম কোচ।

ছোটবেলায় নিজেকে পুরুষ বলে পরিচয় দিতেন উইগম্যান। মেয়ে বলে দলে নিতে চাইত না ছেলেরা। কিন্তু ফুটবল খেলার ইচ্ছা উইগম্যানের ছিল অফুরন্ত। তাই নিজেকে ছেলে বলে পরিচয় দিতেও দ্বিধা বোধ করতেন না তিনি। উইগম্যান এতটাই সফল যে, ইংল্যান্ডের ছেলেদের দলেও তাঁকে কোচ করার কথা ভাবা হয়েছে। ইংল্যান্ডের ফুটবল সংস্থার প্রধান মার্ক বুলিংহ্যাম বলেন, “সেরা কাউকে দায়িত্ব দেওয়া উচিত। তিনি যদি কোনও মহিলা হন তাতে অসুবিধার কী আছে?” আগামী বছর ইংল্যান্ডের ছেলেদের দলের কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের চুক্তি শেষ হবে।

যাঁরা উইগম্যানের সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁরা জানেন তিনি কতটা যোগ্য। গত বার মহিলাদের ইউরোজয়ী ইংল্যান্ড দলের সদস্য ছিলেন এলেন হোয়াইট। প্রাক্তন ফুটবলার মনে করেন উইগম্যানের সব থেকে বড় ক্ষমতা হচ্ছে ফুটবলারদের সম্পর্কে স্পষ্ট জ্ঞান। হোয়াইট বলেন, “এমন এক জন কোচ প্রয়োজন যিনি ফুটবলারদের মাঠের ভিতরে এবং বাইরে ভাল করে চেনেন। তবেই মাঠের মধ্যে ফুটবলারের থেকে সেরাটা বার করে আনা সম্ভব। সারিনা মানুষ হিসাবে অসাধারণ। কোচ হলেও ও ফুটবলারদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশে যায়। খেলার বাইরে গিয়ে পরিবারের সম্পর্কেও কথা বলা যায় উইগম্যানের সঙ্গে। খুব ভাল কথা বলতে পারে ও।”

ছেলেদের বিরুদ্ধে খেলেই বড় হয়েছেন উইগম্যান। নেদারল্যান্ডসে এক সময় মেয়েদের ফুটবল খেলা নিষিদ্ধ ছিল। সেই দেশকেই বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলেছিলেন উইগম্যান। নেদারল্যান্ডসের ফুটবলার লিয়ন স্টেন্টলার বলেন, “প্রতি মুহূর্তে জয়ের জন্য ঝাঁপাত উইগম্যান। ও বুঝেছিল যে, আমাদের দল এতটাই উন্নতি করছে যে, এক দিন পেশাদার ফুটবল খেলতে পারব। সব কিছুর সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়েছে উইগম্যানকে। সব ধরনের বাধা টপকাতে হয়েছে ওকে।”

ছেলে হিসাবে খেলার জন্য চুল ছোট করে কেটে ফেলেছিলেন উইগম্যান। তাঁর দুই ভাইয়ের সঙ্গে ফুটবল খেলতে যেতেন তিনি। উইগম্যান বলেন, “আমার যখন পাঁচ-ছ’বছর বয়স, তখন মেয়েদের ফুটবল খেলার নিয়ম ছিল না। কিন্তু আমার ভাল লাগত। মা-বাবাও কখনও সেটা নিয়ে বাধা দেয়নি। ওরা বলেছিল, “তোমার ইচ্ছা হলে খেল।”

বিভিন্ন বাধা টপকে ফুটবলার হয়ে উঠেছিলেন উইগম্যান। দেশের ৯৯টি ম্যাচ খেলেছিলেন এই মিডফিল্ডার। তিনি বলেন, “আমি খেলার সঙ্গে যুক্ত থাকতে চেয়েছিলাম। তাই শারীরশিক্ষার শিক্ষক হয়ে যাই। তখন ভাবিনি যে, কোচ হব। সুযোগ আসবে সেটাই ভাবিনি।” চেয়েছিলেন দেশের নাম উজ্জ্বল করতে। ২০ বছর সময় লেগেছে। কিন্তু পেরেছেন। ফুটবলার হিসাবে নয়, কোচ হিসাবে দলকে বিশ্বকাপের ফাইনালে তোলেন উইগম্যান। তবে সে বার জয়ের স্বাদ পাননি। ফাইনালে হেরে গিয়েছিলেন ডাচেরা। ২০২৩ সালে আবার সুযোগ পেয়েছেন বিশ্বকাপ জেতার। রবিবার তাঁর দল খেলবে স্পেনের বিরুদ্ধে। এই ম্যাচ জিতলেই বিশ্বকাপ উইগম্যানদের দখলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

FIFA Womens World Cup England Netherlands
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE