এক জনের বয়স ৪০। অপর জনের ৩৮। তাতে কী? বয়স যে কেবলই সংখ্যা, তা ম্যাচের পর ম্যাচে প্রমাণ করছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও লিয়োনেল মেসি। নিজের দলের হয়ে ছন্দে দুই ফুটবলার। ৪০ বছর বয়সেও আল নাসেরের হয়ে বাইসাইকেল কিকে গোল করছেন রোনাল্ডো। অন্য দিকে মেসি শুধু গোল করছেন না, করাচ্ছেনও। একাই ইন্টার মায়ামিকে ফাইনালে তুলেছেন তিনি।
সৌদি প্রো লিগে আল খালিজকে ৪-১ গোলে হারিয়েছে আল নাসের। ম্যাচের সংযুক্তি সময়ে ডান প্রান্ত থেকে ভেসে আসা ক্রসে শূন্যে শরীর ছুড়ে বাইসাইকেল কিকে গোল করেন রোনাল্ডো। তাঁর গোল দেখে মাঠে উপস্থিত দর্শকেরা হতবাক হয়ে যান। রোনাল্ডো মনে করিয়ে দেন ২০১৮ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের কথা। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে জুভেন্টাসের বিরুদ্ধে এমনই এক বাইসাইকেল কিকে গোল করেছিলেন তিনি। তা ছিল সাত বছর আগে। সাত বছর পরেও একই রকম ফিটনেস তাঁর।
দেশের হয়ে অবশ্য সময়টা ভাল যাচ্ছে না রোনাল্ডোর। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে লাল কার্ড দেখেন তিনি। দেশের জার্সিতে এটিই রোনাল্ডোর প্রথম লাল কার্ড। যদিও পরের ম্যাচেই আর্মেনিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করে ফেলেছে পর্তুগাল। যদি রোনাল্ডো এ বারের বিশ্বকাপে খেলেন, তা হলে রেকর্ড গড়বেন তিনি। এটি হবে তাঁর ষষ্ঠ বিশ্বকাপ। তবে সেখানে প্রথম ম্যাচে খেলতে পারবেন না সিআর৭।
রোনাল্ডোর মতো ছন্দে রয়েছে আল নাসেরও। সৌদি প্রো লিগের চলতি মরসুমে ন’ম্যাচের মধ্যে ন’টিতেই জিতেছে তারা। আল খালিজের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে গোল করে আল নাসেরকে এগিয়ে দেন জোয়াও ফেলিক্স। বিরতির আগে ব্যবধান বাড়ান ওয়েসলি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এক গোল শোধ করে খালিজ। গোল করেন মুরাদ আল হাওসায়ি। ৭৭ মিনিটে আল নাসেরের হয়ে তৃতীয় গোল করেন সাদিও মানে। সংযুক্তি সময়ে আসে রোনাল্ডোর গোল।
রোনাল্ডোর মতোই দলকে ভরসা জোগাচ্ছেন মেসিও। প্রথম বার মেজর লিগ সকারের ইস্টার্ন কনফারেন্সের ফাইনালে উঠেছে ইন্টার মায়ামি। বলা ভাল, দলকে ফাইনালে তুলেছেন মেসি। প্লে-অফ সেমিফাইনালে সিনসিনাটিকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে মায়ামি। একটি গোল করেছেন মেসি। বাকি তিনটি গোল করিয়েছেন। প্লে-অফে মোট ১২টি গোল করেছে মায়ামি। তার মধ্যে মেসি ছ’টি গোল করেছেন। বাকি ছ’টি গোল করিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ, প্রতিটি গোলে মেসির অবদান রয়েছে। বোঝা যাচ্ছে, ৩৮ বছরের আর্জেন্টাইন ফুটবলারকে ছাড়া ফাইনালে ওঠার সুযোগ ছিল না মায়ামির।
আরও পড়ুন:
১৯ মিনিটের মাথায় সিনসিনাটির বিরুদ্ধে প্রথম গোল করেন মেসি। ৬২ ও ৭৪ মিনিটে জোড়া গোল করেন তাদেও আলেন্দে। দু’টি গোলের পাস বাড়ান মেসি। তাঁর পাস থেকেই গোল করেন ১৯ বছরের স্ট্রাইকার মাতেও সিলভেত্তি। সাসপেনশন কাটিয়ে ফিরলেও সিনসিনাটির বিরুদ্ধে লুই সুয়ারেসকে খেলায়নি মায়ামি। বদলে এই তরুণ স্ট্রাইকারকে তৈরি করছে তারা।
মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর প্রথম প্রতিযোগিতাতেই তাদের চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন মেসি। কিন্তু মেজর লিগ সকারে দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে পারেননি তিনি। এ বার সেই সুযোগও রয়েছে মেসির সামনে। ফিলাডেলফিয়া বনাম নিউ ইয়র্ক সিটির জয়ী দলের বিরুদ্ধে ফাইনাল খেলবে মায়ামি। কেরিয়ারে আরও একটি ট্রফি তোলার সুযোগ মেসির সামনে।
২০২২ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা বহু দিন আগে ২০২৬ বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করে ফেলেছে। ফলে এখন দেশের জার্সিতে দেখা যাচ্ছে না মেসিকে। তবে তাঁরও বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। মেসি খেললে রোনাল্ডোর মতো তাঁরও ষষ্ঠ বিশ্বকাপ হবে। যদিও মেসি জানিয়েছেন, বিশ্বকাপে খেলবেন কি না, সেই সিদ্ধান্ত এখনও নেননি তিনি।